somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক অনন্ত সাক্ষী।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রাচীন সুমেরীয় সভ্যতা থেকে উড়ে আসা এক দিকভ্রান্ত পাখি একটানা আর্তনাদ করে যায় এক টুকরো সুখের জন্য।এক টুকরো সুখের জন্য অতীত,বর্তমান, ভবিষ্যৎ কে টুকরো টুকরো করে ভেঙে ফেলে ছুটে যায় এক খন্ড সবুজ ঘাসের কাছে।
সবুজ ঘাস,ও সবুজ ঘাস!
তুমি তো চির সবুজ,চির তরুন।
আমায় এক টুকরো সবুজ সুখ দিতে পারবে গো?
সবুজ ঘাস খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে।
আমার কাছে সুখ চাইছ?
আমি কি করে তোমায় সবুজ সুখ উপহার দিব?
আমার ই যে কোন সুখ নেই।
দ্যাখোনা মানুষগুলো কেমন হেঁটে বেড়ায় আমার বুক বেয়ে?
দ্যাখোনা শিশিরগুলি রাতভোর কেমন লেপ্টে থাকে আমার শরীরে।আর সূর্যকিরণে কেমন একটা অতৃপ্ত হেসে ঝড়ে পড়ে আমার বুক থেকে।
আমি আর সুখী হতে পারলাম কই?
তুমি বরং পঞ্চবটের কাছে যাও।তার তো অনেক সীমানা।সে হয়তো তার প্রসারিত বাহু উন্মুখ করলে তুমি একটু সুখ পেতে পারো।
দিকভ্রান্ত পাখি অতৃপ্ত চিত্তে ডানা ঝাঁপটিয়ে ছুটে যায় পঞ্চবটের পাহাড়ে এ পাশ থেকে ও পাশে যেতে তার চোখ জুড়িয়ে যায়।হৃদিত চিত্তে সে ডাক দেয় বটকে।
বট বৃক্ষ,ও বটবৃক্ষ,
তোমার তো মেলা আয়ু,বেশ সীমানা প্রাচীর দাঁড় করিয়ে রেখেছ।
আমায় কি একটু দীর্ঘ সুখ দেবে গো?যেই সুখের অনেক শাখা প্রশাখা থাকবে তোমার মত।
বট বৃক্ষ তার শাখা প্রশাখা নাড়িয়ে ওঠে।
ও পাখি! পাখি
তুমি কি চাইছ?
সুখ!
আমি যে চির দুঃখী।
আমি কি করে তোমায় সুখ উপহার দেব।দ্যাখোনা,স্পন্দনহীন শরীরে কিভাবে জেগে থাকি অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায়?পাহারা দেই এই ধুলিপাহাড় কে।ক্লান্তিহীন শরীরে শেকড় গেঁড়ে আঁকড়ে রাখি,সময়ের পর সময়।অথচ একটু বৃষ্টি হলেই আমাদের সহ প্রাণ বিসর্জন দেই সে।আমি আর সুখী হতে পারলাম কই?তার চেয়ে ঢের ভাল ঐ মেঘদেবতা।তুমি বরঞ্চ মেঘদেবতারর কাছেই যাও।তার তো সীমাহীন ক্ষমতা।ধরিত্রীর বুকে যেমন অমোঘ শান্তি ঢালে তেমনি ধ্বংস ও করে মরুর প্রাচীর।সেখানে যাও শান্তি পাবে।
দুমড়ানো মুচড়ানো, ক্ষত বিক্ষত শরীর নিয়ে পাখি ছুটে চলে মেঘদেবতার কাছে।
মেঘদেবতা তখন পরিপাটি করে তার কুচকুচে কালো কেশ সাজাচ্ছিল।একটু পরই ঝর্ণাধারা হয়ে সবেগে নেমে আসবে ধরিত্রীতে।তৈরি করবে উন্মাতাল জোয়ার,ভাসিয়ে দেবে মরুর বুক।সৃষ্টি হবে অনাকাঙ্ক্ষিত সময়।
মেঘদেবতা, ও মেঘদেবতা আমায় একটু জলসুখ দেবে গো।মেঘদেবতা গর্জে ওঠে,তার সাথে সাথে গর্জে ওঠে ধরিত্রী।ঘনকালো মেঘে আচ্ছন্ন হয় চারিধার।

জলসুখ?
কোথা পাবে তুমি?
তুমি তো ক্ষুদ্র পাখি।
ক্ষুদ্রতা যে আমার অস্তিত্বে নেই।আমি তোমাকে কিছুই দিতে পারব না।তুমি বরং মহাকালের কাছে যাও।তুমি যা চাও সব পাবে মহাকালের কাছে।
নিরুপায় পাখি অসহায় হৃদয়ে এসে পৌছায় মহাকালের ডেরায়।
টুপ টুপ করে পড়ছে রক্ত,চিনচিন করে উঠছে ব্যাথা,খসে পড়েছে ডানার পালক,ওষ্ঠ থেকে ঝড়ে পড়ছে নোনতা বিষাক্ত লালা।
অবনত মস্তিষ্কে আস্তানা গাঁড়ে মহাকালের পায়ে।
আমি সুখ চাই না,শুধু তোমার কালের কাছে আমাকে একটু সাক্ষী রেখো।আমি শুধু বেঁচে থাকতে চাই।আবার পূর্ণ পালকে উড়তে চাই।আমায় কি একটু সঙ্গ দেবে গো?
মহাকালের বাম বক্ষের কুঞ্জ থেকে এক রাশি আলোর ঝলকানি বের হয়।সেই আলোয় আগুন লাগে ধরিত্রী বুকে,সবুজ ঘাস ফিরে পায় রাতের কালো,পঞ্চবট খঁজে পায় তার চিরস্থায়ী আবাসন,মেঘ দেবতা আঁচড়ে পড়ে ধরিত্রী বুকে।আর পাখিটি জ্ঞান হারিয়ে পড়ে থাকে মহাকালের পায়ের তলায়।
পরদিন আবার ভোর হয়,আবার সূর্য ওঠে,পাখিরা গান গায়,দুকূল ছাপিয়ে নদীর স্রোত বয়ে চলে আপন গতিতে,নতুন করে উপত্যকা সৃষ্টি হয় আর সেখানে উত্থিত হয় দুটি পাতা একটি কুঁড়ির নতুন বট।
আর মহাকাল!
সে তো ছিল, আছে,থাকবেই অতীত,বর্তমান আর ভবিষ্যৎ জুড়ে।শুধু সময় পাল্টায়।নতুন করে আরেকটি পাখি পথ হারায়,শান্তি খুঁজে,অমোঘ শান্তি।যে শান্তির কোন সীমা নেই। সীমাহীন অসীম।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রফেসদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×