somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপ্রীতিকর কিছু স্মৃতি....

২১ শে আগস্ট, ২০০৮ বিকাল ৫:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্কুল কলেজ আর ভার্সিটি জীবনের অনেক স্মৃতিই মাঝে মাঝে মনে পড়ে যায়, ঐ জীবনটা অনেক অনেক মজার ছিল, পড়ালেখা ছাড়া আর অন্য কোন দুশ্চিন্তা থাকতো না...:) তো সেই জীবনের দুইটা অপ্রীতিকর স্মৃতি আমার প্রায়ই মনে পড়ে যায়, আজকে সেটাই লিখলাম।

আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়ি রাইফেলস পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে। সেখানের বেতন দেয়ার একটা নিয়ম ছিল, তারা কয়েকটা গ্রুপ করে দিয়েছিল আমাদের ক্লাসগুলোর মধ্যে, যেমন ক্লাস ৮ থেকে ১০ পর্যন্ত যারা থাকবে তারা বৃহস্পতিবারে বেতন দিতে পারবে। এমনি ভাবে অন্যান্য ক্লাসগুলোও ভাগ করা ছিল। যেহেতু আমি ক্লাস নাইনে পড়ি তাই আমার বেতন বৃহস্পতিবার দিতে হত। তেমনি এক দিনে আমি বেতনের ৫০০ টাকা নিয়ে ক্লাসে গেছি, যথারীতি ব্যাগ ক্লাসে রেখে আমরা সবাই নীচে গেছি এ্যাস্মেব্লী করতে। তারপরে যখন শেষ করে উপরে এসেছি, আমরা কয়েকজন এক সাথে বেতন দিতে যাব সেজন্য টাকা বের করতে যেয়ে দেখি আমার ব্যাগে টাকাটা নাই...:( আমার তো খুব ভয় লাগলো নিজের গাধামীর জন্য, বেচারা আব্বু এত কষ্ট করে টাকা রোজগার করে আর আমি আমার সামান্য ভুলের জন্য এইভাবে টাকাটা হারালাম...৫০০ টাকা আমার কাছে অনেক টাকাই। আমার তো কান্না শুরু, ক্লাসের টিচারকে বললাম উনি আর কি করবে। সবাইকে বললো যদি কেউ শয়তানি করে থাকো দিয়ে দাও, কিন্তু আমাদের ক্লাসের কেউ এই কাজটা করেনি সেটা আমি বুঝেছিলাম। কারণ তারা এমন ছিল না, হয়ত অন্য ক্লাসের কেউ এসে টাকাটা চুরি করেছিল। যেটা আমি আর পরে পাইনি,আমি ফোন করে আম্মুকে জানালাম। আম্মু বললো আচ্ছা থাক এখন আর করার কিছু নাই কাঁদতে হবে না যা হবার তা হয়ে গেছে আব্বুকে বুঝিয়ে বলা হবে। আমি আবার আব্বুকে যমের মত ভয় পেতাম...:|

আরেকবার, আমার তখন বিয়ে হয়েছে নতুন এইচ এস সি এর পরেই, তাই আমার শ্বশুর বাসার কাছেই আমাকে ভর্তি হবার কথা বলা হলো। আমি তখন লালমাটিয়া উইমেন্স ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হবার জন্য গেলাম। সাথে ৫০০০ টাকা নিয়ে আমি আর আমার ছোট নণদ রওনা হলাম। ওর সাথে আমার আবার খুব বন্ধুর মত সম্পর্ক, সে নিজে তখন ক্লাস টেনে পড়তো। আমরা দুই গাধী নাচতে নাচতে ভর্তির সব ফর্ম ফিলাপ করে টাকা জমা দিতে গেলাম। আমি সব কিছু ফিলাপ করছিলাম আর ওর হাতে আমার ব্যাগটা ধরিয়ে দিয়ে বললাম ভাল ভাবে রেখ টাকা আছে অনেক, সেও বললো আচ্ছা। আমি সব শেষ করে যেই ব্যাগ খুলে টাকা দিতে যাব দেখি টাকা নাই ব্যাগে...:-* আমার তো পুরা মাথায় বাড়ি, আমি ওকে বলি ব্যাগ তো তোমার কাছেই ছিল টাকা গেল কোথায়। ও তো একদম তাজ্জব,কিছুই বুঝতে পারছিনা আমরা। পরে মনে হলো আমাদের যে, একটা টেবিলে আমি ফর্ম ফিলাপ নিয়ে ব্যাস্ত ছিলাম, সব কিছু তাড়াহুড়া করে লিখে আমি সামনের টেবিলে ফর্মটা জমা দিতে যখন গেছিলাম আমার নণদ গাধীটাও আমার পিছে পিছে এসেছিল কিন্তু যেহেতু সামনেই আমরা ছিলাম তাই সে আর তার সাথে আমার ব্যাগটা আনার প্রয়োজন মনে করেনি...X( সেই ফাঁকেই কেউ সুযোগ বুঝে ব্যাগ থেকে টাকাটা চুরি করেছিল। আমার তো আবার কান্না শুরু, কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। দুজন মিলে কাঁদতে কাঁদতে বাসায় রওনা দিলাম। আমার তো লজ্জায় মাটির নীচে ঢুকে যেতে ইচ্ছা করছিল, একে তো নতুন বিয়ে হয়েছে শ্বশুর বাসায় মুখ দেখাবো কিভাবে এইসব হাবিজাবি চিন্তা করছিলাম। পরে বাসায় পৌঁছে সব বললাম,সবাই খোঁজ নিয়ে জানলো ঐ লালমাটিয়া ভার্সিটিতে ভর্তি হতে আসা অনেক মেয়েদেরকেই এমন অবস্থায় পড়তে হয়। সেখানে ভর্তির সময় বাইরে থেকে একটা গ্রুপই আসে তারা সময় সুযোগ বুঝে মেয়েদের ব্যাগ থেকে টাকা পয়সা চুরি করে মেয়েদের কে এমন বিপদে ফেলে...X((

জীবনে এই দুইবারই আমি এমনভাবে সবার সামনে কেঁদে ছিলাম, কিন্তু এখন ঐসব দিনের কথা মনে পড়লে হাসি চলে আসে, একা একাই হেসে উঠি আবার খারাপও লাগে অনুশোচনাও হয় নিজের সামন্য ভুলের জন্য এত গুলো টাকা গচ্ছা গেছিল সেটা ভেবে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০০৮ বিকাল ৫:৫৩
৭১টি মন্তব্য ৬৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×