somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মনের হাজারো আঁকিবুঁকি.....

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ৯:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চোখের পলক ফেলার মতই যেন এক একটা দিন অতীতের মাঝে হারিয়ে যাচ্ছে। এক একটা সাল শুরু হওয়ার সাথে সাথে কিভাবে যেন শেষও হয়ে যাচ্ছে।আমাদের বয়সও বেড়ে চলেছে,মৃত্যুর খুব কাছাকাছি চলে যাচ্ছি আমরা সবাই। কার কপালে কখন যে এই পৃথিবী থেকে বিদায়ের ক্ষণ লেখা আছে তা কেউ জানিনা আমরা। সবাই জীবন নিয়ে এত চিন্তিত, কিভাবে আরো উপরে উঠা যায়, কিভাবে আরো টাকা কামানো যায়, উন্নতি করা যায়। জীবন নিয়ে চিন্তা করেই যেন জীবনটা শেষ হয়ে যায়....জীবনটাকে উপভোগ করার মত সময়ই থাকে না। সেদিন বাংলাদেশ থেকে খবর আসলো আমাদের খুব পরিচিত একজন বন্ধু (বেলাল ভাই) মারা গেছেন। শুনে খুব খারাপ লাগলো...বেচারা আমার সাথে দেখা হলেই বলতো, "ভাবী আপনি তো আমাদের সিলেটে আর একবারও আসলেন না, একবার আসেন ঘুরে যান আমার নতুন বাড়িটা দেখে যান।" অনেক টাকা পয়সার মালিক ছিলেন তিনি কিন্তু কি হলো এত টাকা কামিয়ে কিছুই তো তার সাথে গেল না। বয়সও তার তেমন একটা বেশী ছিল না, ৪৫ বা তার থেকে একটু বেশী হবে। তার সাথে আর কোনোদিনও দেখা হবে না ভাবলে খারাপ লাগে, তখন ভাবি আমাদের আপনজনদের মাঝেও কেউ যদি চলে যান তাহলে কি হবে, তখন তো তাকেও কোনোদিন দেখতে পাবো না আর, প্রবাসী হয়ে অনেক কিছু থেকেই এইভাবে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা। সবার কাছ থেকে কতদূরে, কেউ মারা গেলে শেষ দেখাটুকুও দেখতে পাব না...:(( যাইহোক কপালে যা আছে তা তো হবেই এত চিন্তা করে লাভ নাই।

কথায় আছে....নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা।
আমার ঠিক এই অবস্থাই হয়েছে এইখানে। রোজ রোজ মুরগী আর গরুর মাংস রান্না করে করে জীবনটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে থাকতে তাও বিভিন্ন জিনিষ রান্না করা যেত, গরু মরগী বাদেও মাছ থাকতো সবজি থাকতো কত রকমের। একঘেয়েমি লাগতো না। আর এইখানে মাছ হলো সব সমুদ্রের, গন্ধের জন্য সেগুলো তেমন একটা ভাল লাগে না বলে খাওয়া হয়না আর সবজি বলতে ফুলকপি আর বাধাকপি, নয়ত গাজর,শশা,টমেটো। আর কিছু এরা চিনেইনা। এদের খাওয়া সব অন্য রকমের, নাম গুলাও সব আজব...ফুফু, বেংকু আর এই গুলার সাথে মাছ, মাংস, শামুক ঝিনুক,কাঁকড়া আরো যা যা পারে মিলিয়ে একটা সুপের মত তৈরী করে খায়। এমন কি গরুর চামড়া পর্যন্ত এরা খায়...:| বলা উচিৎ না তবে এসব দেখলেও বমি আসে। কি যে হবে আমাদের,কবে যে এই আফ্রিকা থেকে বদলি হবো আমার আর ভাল লাগে না। আজকে আমার রান্না করতে মোটেও ভাল লাগছিল না। একবার ভাবলাম রাধবো না, পরে আবার কি মনে করে রাধতে বসলাম। এখন দেখি রান্নায় তেল একগাদা হয়ে গেছে। একে তো গরুর মাংস তার উপরে তেল বেশী...X( মেজাজটা যা লাগছে না,এখন খাওয়া গেলেই হয়।

ঈদ আসতে আরো কয়েকদিন বাকী। ভাবছি ঈদের দিন বাইরে কোথা ঘুরতে চলে যাব, তবে মনে হয় হবে না। না হয় ঈদের পরেরদিন যাব অবশ্যই। রোজা শুরু হওয়ার আগের শনিবার আমরা ভেবেছিলাম একটু দূরে "কেপ কোষ্ট "নামের একটা জায়গা আছে সেখানে ঘুরতে যাব, যখনি এসব ভাবি তখনি কোনো না কোনো ঝামেলা বাধে। এইবারও বাধলো, ঢাকা থেকে অফিসের একজন এসে হাজির হলো তাকে দাওয়াত করে খাওয়ালাম সেদিন, আর ঘুরতে যাওয়া হলো না...:( এখন রোজার মাসে তো আর সারাদিনের জন্য ঘুরতে যাওয়া যায়না। ঈদের পরেরদিনই যাব আশা করছি এখন নতুন কোন ঝামেলা না হলেই হয়। আমি কানাডা থেকে ঘুরে আসার পরে আর বাড়ির বাইরেই বেরোনো হইনি.../:) দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ঢাকায় থাকতে একাই বের হয়ে যেতাম আত্মীয় স্বজন মা বাবা সবার বাসায় ঘুরতাম...হাসবেন্ড তার কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও কোনো অসুবিধা লাগতো না। আমি আমার মত ঘুরতাম, এইখানে পরেছি মহা ঝামেলায়। কোথাও কেউ নাই কৈ যাব ঘুরতে একা একা। বাংলাদেশে থাকতে তার মায়া বুঝতাম না এখন বুঝি...দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝা উচিৎ, না হলে পরে পস্তাতে হয়।


**** মাংসটা দেখে আসলাম, রান্নাটা তেমন একটা খারাপ হয়নি...খাওয়া যাবে...:) যাক বাঁচা গেল আজকের মত।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১:২৭
২০টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×