আল্লাহ, নবী (সা.), পবিত্র কোরআন ও ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য লেখায় ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন ও আহমেদ হায়দার রাজীব শোভন ওরফে থাবা বাবা’র বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তারপরও উচ্চ আদালতের এই নির্দেশ অবমাননা করে পুনরায় একই বিষয়ে মিথ্যা ও মনগড়া প্রপাগা-া চালিয়েছেন তারা। আল্লাহ, নবী (সা.), পবিত্র কোরআন ও ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য লেখায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টরা। তবে হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য করায় ওই ব্লগারদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা উচিত বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।
সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা জানান, ব্লগ বন্ধ ও চিহ্নিত ব্লগারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বাতুল সরওয়ার ও ঢাকা সেন্ট্রাল ল’ কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম হাইকোর্টে একটি রিট (নং-৮৮৬/১২) করেন। রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য সচিব, আইজিপি, র্যাবের ডিজি, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনকে (বিটিআরসি) বিবাদী করা হয়। মহান আল্লাহ, নবী (সা.) ও ইসলামের বিধিবিধানের অবমাননা রোধে এ রিটটি গ্রহণ করে রুল জারিসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের আবেদন করে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ফাতিমা আনোয়ারসহ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র কয়েকজন আইনজীবী। অপরদিকে রিট আবেদনটি খারিজ করে দেয়ার পক্ষে শুনানি করেন সরকার নিযুক্ত আইনজীবীরা। বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মো. খোরশিদ আলম সরকার এ রিটের ওপর শুনানির পর গত বছর ২১ মার্চ রিট আবেদনটি গ্রহণ করে মহান আল্লাহ, নবী (সা.)সহ ইসলাম ধর্মের অবমাননাকারী ব্লগগুলো স্থানীয়ভাবে বন্ধের বিষয়ে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না মর্মে সরকারের প্রতি রুল জারি করেন। পাশাপাশি আদালত ওইসব ব্লগ ও ব্লগারদের বিষয়ে অনুসন্ধান করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিটিআরসি, র্যাব ও পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার প্রতি নির্দেশনা দেন এবং রুল নিষ্পিত্তি না হওয়া পর্যন্ত রিটে উল্লেখ করা ওয়েবসাইট ও ব্লগগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আদালতের আদেশে ওইসব ওয়েবসাইট, ব্লগ ও ওয়েবপেজের স্বত্বাধিকারী এবং ধর্মদ্রোহী ব্লগারদের অনুসন্ধান করে তাদের নাম-ঠিকানাসহ পূর্ণ পরিচয় আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেয়া হয়। আদালতের এ নির্দেশের পর বিটিআরসি প্রয়োজনীয় ব্লগারদের চিহ্নিত করে আদালতে পেশ করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা দেয়। কিন্তু সরকারপক্ষ অদ্যাবধি এদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ইনকিলাবকে বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করায় ব্লগারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে রিটকারীকে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে মামলা করা উচিত। উচ্চ আদালতের যে বেঞ্চ আদেশ দিয়েছিলো ওই কোর্টে আদালত অবমাননার ফাইল করতে হবে।
জানা গেছে, গত বছর ২১ মার্চ আদালত ইসলাম র্ধম ও নবী-রাসূল (সা.)-এর বিরুদ্ধে মারাত্মক ধরনের কুৎসা রটনাকারী ব্লগ বন্ধ ও ব্লগারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। ওই দিনই রাত ১১টা ১৪ মিনিটে সামহোয়্যারইন ব্লগে ‘আল্লাহ-ভগবান-ঈশ্বরের ব্যর্থতায় এবারে ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষায় এগিয়ে এলো আদালত!’ শিরোনামে ধর্ম ও রাষ্ট্রদ্রোহী আসিফের দেয়া স্ট্যাটাসে লেখা হয়েছে, ‘একজন মুক্তমনার ধর্ম যদি হয় মানবতাবাদ এবং সে যদি দাবি করে কোরআন হাদিস বাইবেল গীতা রামায়ণ মহাভারত তোরাসহ এর মানবতাবিরোধী নারী অবমাননাকারী বিধর্মী নিধনের উস্কানিমূলক আয়াতসমূহ তার মানবিক ধর্মানুভূতিকে আঘাত করছে, তার দায় আদালত নেবে কেন? সম্পূর্ণ সজ্ঞানে সচেতনভাবে ঐ যুক্তিহীন অন্ধ ষাঁড়ের মতো উৎকট দুর্গন্ধময় ধর্মীয় অনুভূতি এবং ঐ যুক্তিহীন ধর্মীয় অনুভূতির রক্ষক আদালত, দুই জিনিসেরই অবমাননা করলাম।’ হাইকোর্টকে কটূক্তি করে আসিফ আরও লিখেছে যে, ‘তোমাদের যুক্তিহীন হাস্যকর অনুভূতি এবং তা রক্ষণাবেক্ষণের দায় আমার নয়, অযৌক্তিক সমস্ত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা, তা যাচাই করা, প্রয়োজনে ছুড়ে ফেলা আমার বাকস্বাধীনতা এবং আমার অধিকার। কোন সভ্য আদালত আমার এই অধিকার কেড়ে নিতে পারে না।’
এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল ইনকিলাবকে বলেন, এইসব ব্লগাররা আল্লাহর দুশমন। তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা উচিত। আদালত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ব্লগাররা ইন্টারনেট ব্যবহার করে ব্লগ ও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মহান আল্লাহ, মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)সহ নবী-রাসূল (আ.), ইসলামের প্রধান খলিফা, ইসলামের বিভিন্ন বিধিবিধানকে কটাক্ষ করে মনগড়া ও ভয়ঙ্কর ধরনের মন্তব্য লিখে নিজেদের বিকৃত রুচি প্রকাশ করতে থাকে। ২০১১ সাল থেকে এসব ব্লগার আরও অশ্লীল ও অশালীন ভাষায় মহানবীর (সা.) বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করতে থাকে। এরই একপর্যায়ে ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীনকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করলে সরকারের উপরের নির্দেশে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় বলে জানান গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা। গোয়েন্দা হেফাজত থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আসিফ মহিউদ্দীন, ব্লগার আহমেদ হায়দার রাজীব শোভন ওরফে থাবা বাবা, আরিফুর রহমান (প্রকৃত নাম নিতাই ভট্টাচার্য), ইবরাহিম খলীল ওরফে সবাক, স্বপ্নকথক, অমি রহমান পিয়ালসহ বর্তমানে শাহবাগ আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী অন্য ব্লগাররা পবিত্র ইসলামের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।
এ বিষয়ে বাদীপক্ষে উচ্চ আদালতের আইনজীবীরা জানান, ব্লগাররা উচ্চ আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘন করে মহান আল্লাহ, শেষ নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) এবং অন্য নবী ও রাসূলদের (আ.) বিষয়ে কটূক্তি করে চলেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের ওপর আদালতের নির্দেশনা থাকলেও সরকার এ বিষয়ে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
ব্লগারদের প্রচারণা : রাজীব আমাদের প্রাণপ্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা: )-এর জীবন, ইসলাম ধর্ম এবং নামাজ নিয়ে কটূক্তি ও কটাক্ষ করতে গিয়ে যেসব কথা লিখেছে তা জ্ঞান-বুদ্ধি-যুক্তির কোন মানদ-েই গ্রহণযোগ্য নয়। তার এসব ব্লগ পোস্ট আমাদেরকে মুরতাদ সালমান রুশদীর কথা মনে করিয়ে দেয়। গত বছরের জুন এবং আগস্ট মাসে রাজীব ব্লগে তার লেখাগুলো পোস্ট করে
আর একটি গুরুত্বপূর্ন খবরঃ Click This Link
উৎসঃ Click This Link page_id= 5