somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মাহবুবুর রহমান টুনু
মান্ধাতার ভাসমান শ্যাওলা এক! ভাসমান এই শ্যাওলাকে ফেসবুক, ইউটিউব, সাউন্ডক্লাউডে পাবেনঃ Kb Mahbub Khan এই নামে। শ্যাওলার সম্বল ছাইপাঁশ লেখা, আবৃত্তি, বাঁশের বাঁশি আর যখন তখন মুখে এক চিলতে হুদাই মার্কা হাসি!

“তুমি নেতা...? তুমি খেতাও নও...!”

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



(লেখাটি নির্দিষ্ট কোন দল, নির্দিষ্ট কোন নেতাকে উদ্দেশ্য করে লেখা নয়, তবে এদেশীয় চলমান ছাত্র রাজনীতি, বিশেষ করে ফেসবুকিও ছাত্র রাজনীতির প্রভাব এ লেখায় আছে)

(১)
এক সপ্তাহ আগের একটি ফেসবুকিও ঘটনা দিয়ে শুরু করা যাক, ভদ্রলোক তার দলীয় একজন নেতার জন্মদিনকে ঘিরে একটি পোষ্ট করেছেন, বন্ধু তালিকায় থাকবার কারনে লেখাটি পড়বার সৌভাগ্য হয়েছিল, সৌভাগ্য এই জন্য বলছি কারন, এত এত এত বিশেষণে বিশেষায়িত লেখা আমি খুব কমই পড়েছি ফেসবুক জীবনে, বিশেষ করে কোন নেতাকে নিয়ে আর কি! এমন কোন বিশেষণ বোধ করি বাকি ছিল না যা সে লেখায় ছিল না, আমার তো মনে হয় আরো নতুন কিছু বিশেষণও যোগ করা হয়েছিল যেগুলির সঙ্গে ইতিপূর্বে আমার পরিচয় ছিল না। যা হোক লেখাটি পড়ে আমার কাছে মনে হয়েছে, ভদ্রলোক শুধুমাত্র তার নেতার সুদৃষ্টি পাবার স্বার্থে লেখাটি লিখেছিলেন, তিনি হয়ত এটা ভুলে গিয়েছিলেন যে এটা ফেসবুক, এখানে সহস্র লোক তার লেখাটি পড়তে পারবে। যতগুলি গুণে, বিশেষণে তিনি তার নেতাকে ভাসিয়েছেন, আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি সত্যি সত্যিই তার নেতাকে ভাসাতে যাচ্ছেন, ভাসিয়ে ফেলেছেন মোটামুটি। এত বেশী বিশেষণ, এত বেশীই বিশেষণ যে আমি বা আমার মত আমজনতা তো দূরের কথা, একজন ক্লাশ ওয়ানে পড়া বাচ্চাও যদি লেখাটি পড়ত তো হো হো করে হাসত, হাসতে হাসতে পেদেও ফেলত হয়তবা, ভরপুর কৌতুক বলা যায়। ভাই, এত আবেগ কেন? কিসের আবেগ? আবেগটা সাক্ষাতে, কাজে, কর্মে, মাঠে, মিছিলে, জন সেবায় দেখান না......! ফেসবুকে কেন? তাও এমন ভাবে আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন যে, নেতাকে জনগণের সামনে ভাল একজন হিসেবে তুলে ধরা তো বহু দূরের কথা একেবারেই কৌতুক এর চরিত্র বানায় ছেড়ে দিলেন, লেখাটি পড়ে কিছুক্ষণ হাসলাম, এরপর কষ্ট পেলাম কারন নেতা আমার এলাকার, লেখাটি তার সুনাম শুধু ধুয়ে দেয় নাই, তার যেটুকু বা ইমেজ আছে সেটুকুও খেয়ে দিচ্ছিল একদম। কি আর করার, চুপ তো আর থাকা যায় না, করলাম একটা মন্তব্য, পোড়া কপাল আমার, উত্তর পাওয়া তো বহু দূরের কথা, খানিক বাদে দেখি আমার কমেন্টই ডিলেট করে দেয়া হয়েছে। মেসেজও করলাম ভদ্রলোক কে “ভাই ডিলেট করলেন কেন?” মেসেজেরও উত্তর মিলল না কপালে।। পরে বুদ্ধি করে পাশে বসে থাকা এক ছোট ভাইকে বললাম মন্তব্য করতে, বলে রাখা ভাল, সেই ছোট ভাইও সেই দল করে, ঐ ভদ্রলোক যে দলের নেতা। সুতরাং ঐ লেখাটি ছোট ভাইটির কাছেও ভীষণ রকম হাস্যরসাত্মক এবং কৌতুকীও লেগেছে, যার কারনে আমি বলবার আগেই সেও মন্তব্য করেছে এবং অনেকটা আমার মতই বলেছিল সেখানে, তার কমেন্ট এর উত্তর মিলেছে এ রকম “আমি তেল মারি, তাতে আপনার কি সমস্যা….?”
ভাইজান, শুধু সমস্যা হলে তো কথাই ছিল না, ইহা অনেক অনেক বড় এক খানা সমস্যা। আপনি কোন মাপের রাজনীতি করেন, আপনি কোন লেভেলের নেতা, রাজনীতি করবার পিছে আপনার উদ্দেশ্য কি, এ ব্যাপারে আমাদের যথেষ্ট ধারণা হয়ে গেছে, আপনি বোধ হয় অতি আবেগের কারনে ভুলে গেছেন অথবা আপনি একদম জানেন না যে “ একজন নেতা শুধু মাত্র একজন লোকের নয়, একটি রাজনৈতিক দল শুধু মাত্র একজন লোকের জন্য নয়, তিনি সবার, দলটিও সবার”


(২)
হে পাতিহাঁস এবং এইরুপ পাতিহাঁসগণ, আপনি মনে রাখুন, শুধু মাত্রই আপনি নন, আপনার গুরুজি, আপনার থেকে সহস্রগুণ ত্যাগী নেতা, রাজপথের অকুতোভয় সৈনিক, মিটিং মিছিল, সাধ্যমত জন সাধারনের সেবা করনের অগ্রপথিক অনেক পরিচিত নেতাই আছেন, এবং তাদের কর্মকাণ্ড অবলোকন করি, তাদের কথাও শুনি, তারা কেউই আপনার মত এত এত এতসব ফেসবুকিও লোক দেখানো কৌতুকীও বিশেষণে তাদের নেতা ( যিনি আপনারও নেতা )কে বিশেষায়িত করেন না, আপনি মনে রাখুন, আপনি যেভাবে শুধুমাত্র নিজ স্বার্থ সিদ্ধির জন্য তেল খরচ করছেন এতে করে আপনার নেতার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হওয়া তো দূরের কথা, তিনি বরং আপনার ঐ নোংরা কালো তেল নামক মবিলের সমুদ্রে নিমজ্জিত হচ্ছেন। মিয়া, রাজনীতি করেন, নিজের নেতার নামের বানানটি ভুল করে লিখে আবার বিশেষণ যোগ করেন, আবার সে ভুলটি ধরে দিলেও সেটায় আমাদের সমস্যা কি তাই না?? ওরে পাতিহাঁস, তোমার নেতা শুধুমাত্র তোমার নেতা নয়, কেন ভুলে যাও? তোমার নেতা আরো সহস্র লোকের মনেও তো জায়গা করে নিতে পারেন তাই না?? তো সেই সহস্র লোক তো আর সবাই তোমার মত নয় যে, ফেসবুকে ছবি আর এত এত এত অহেতুক, মিথ্যা, কৌতুকীও বিশেষণের প্রচারণা চালিয়ে তাদের নেতাকে হাসির পাত্রে রূপান্তরিত করবেন।


(৩)
ইতিকথাঃ

উপরে বর্ণিত এ ভদ্রলোকটিকে একটি কাল্পনিক চরিত্র ভাবুন, এনার সুত্র ধরে বরং এরকম পাতিহাঁসদের বিবেচনা করুন, সত্যিকারের ত্যাগী নেতাগন, কেন্দ্রীয় নেতাগন ভাবুন, এরা কি সত্যিই নেতা? কর্মী? ত্যাগী? নাকি শুধু মাত্রই দলের লেবেলটি গায়ে লাগিয়ে, নেতার নামটি মুখে জপে জপে নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করে চলেছে...? আমরা আমাদের নেতাকে সবার সামনে, জন সাধারনের সামনে তুলে ধরবার পূর্বে একবার ভাবি যে সত্যিকার অর্থে আমার নেতা কি? কেমন? যাদের সামনে তাকে তুলে ধরছি, আমার নেতা তাদের জন্য কতটুকু করেছেন? কতটুকুই বা করছেন????? আসেন না একবার ভাবি? ভাবতে আর কতক্ষণ, তারপরেই না হয় বিশেষণগুলি যোগ করি, সত্যিকারের বিশেষণ। আপনি লেখেন আপনার নেতা গরীব দুঃখীর বিপদের সঙ্গী, আপনি, আপনার নেতা কি আদৌ এটা জানেন আপনার এলাকায় কতজন গরীব...?? কতজন না খেয়ে থাকেন??? কতজনের মুখেই বা খাবার তুলে দিয়েছেন ভাই?? আপনি লেখেন আপনার নেতা তরুণদের অহংকার, আপনি জানেন, আপনার নেতা জানেন আপনার এলাকা পুরোটা জুড়েই তরুণেরা নেশার সাগরে নিমজ্জিত?? আপনার এলাকা এখন মাদকদ্রব্য চোরাচালানে অন্যতম একটি চিহ্নিত এলাকা হয়ে উঠেছে??
আপনি লেখেন, আপনি লিখেই চলেছেন, আপনি অবিরত মিথ্যা বিশেষণ, অহেতুক, অযৌক্তিক বিশেষণে আপনার নেতাকে তুলে ধরছেন, আপনি বার বারই এটা ভুলে যাচ্ছেন যে “ আপনার নেতা শুধু মাত্রই আপনার চোখে আকাশে উঠছে, কিন্তু সচেতন জন সাধারনের চোখে আপনার ঐ তেল নামক নোংরা মবিলের সমদ্রে ক্রমশ ডুবেই যাচ্ছে......”

ভাইজান, রাজনীতি করছেন, নীতি টাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাবেন না যেন সেটা ফকিরনীতি হয়ে যায়, রাজনীতি যেহেতু করছেন, সেহেতু সর্বদিক বিবেচনায় রেখে, সত্য সুন্দরের পথ ধরে এমন ভাবে চলুন, এমনভাবে জনগণের সেবা করুন যেন নীতিটা সত্যি সত্যিই জনসাধারণের সামনে রাজ করতে পারে। আপনি যেভাবে এগুচ্ছেন, যেরকম করে যে পথ ধরে এগুচ্ছেন এতে করে আপনাকে নেতা বলতে গেলে আমাকে আগে চৌদ্দ মিনিট হো হো করে হাসতে হবে......!!! তাহলে কি বলব...?? খেতা......??
আপনি মিয়া খেতার মধ্যেও পরেন না, কারন খেতাও তবু এই শীতে অন্যতম একটি কাজের জিনিস, গরীব দুঃখীরা এই খেতাটিকে আঁকড়ে তাদের অসহ্য শীত পারি দেয়, আর আপনি যে মাপের নেতা, আপনাকে গরীব দুঃখীরা আঁকড়ে বাঁচা তো বহু দূরের কথা, আপনাকে ধরতে গেলেই তো জমে বরফ হয়ে যাবে......!
আপনি নেতাও না, খেতাও না.....!
এর মাঝামাঝি যেটা হয় সেটা লিখতে পারলুম না...। খুব হাসি পাচ্ছে......!!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০৮
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×