বিগত বেশ ক'বছর ধরেই প্রযুক্তি বাজারে সিঙ্গেল বোর্ড কম্পিউটার (এস.বি.সি.) এর বেশ রমরমা অবস্থা চলছে। যারা প্রযুক্তি নিয়ে খোঁজ-খবর রাখেন তারা হয়তো জেনে থাকবেন মূলত রেসবেরী পাই ফাউন্ডেশনের উৎপাদিত পাই কম্পিউটার এই নতুন যাত্রার পথিকৃত। ২০১২ সাল থেকে তারা অত্যন্ত সুলভে পৃথিবীর সবার হাতে কম্পিউটার তুলে দেয়ার মহান ব্রত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। অনেক বছর ধরেই তাদের জনপ্রিয়তা বেশ তুঙ্গে।
প্রচলিত ধারার কম্পিউটারগুলো মূলত এক্স৮৬ আর্কিটেকচারে তৈরী। জনপ্রিয় কোম্পানী যেমন ইন্টেল, এ.এম.ডি. মূলত এই ধারার মাইক্রোপ্রসেসর উৎপাদন করে থাকে। স্বাভাববিকভাবে আমরা অফিস কিংবা বাসা বাড়িতে যেসব ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপ কম্পিউটারগুলো দেখি, বিশেষ করে যেগুলোতে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার হয়, সেগুলোই মূলত এই ধারার কম্পিউটার।
পাই কম্পিউটারগুলো মূলত এ.আর.এম. আর্কিটেকচারের হয়ে থাকে। আধুনিক স্মার্টফোন কিংবা টিভি, ওয়াচ, রাউটার ছাড়াও অসংখ্য ছোট ছোট ডিভাইসে এই আর্কিটেকচারের মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার হয়ে থাকে। বোঝার সুবিধার্থে বলতে পারি বাংলাদেশে এ্যান্ড্রয়েড ভিত্তিক যত ডিভাইস দেখতে পাবেন তার সবই এই ধারার অর্ন্তগত।
এ.আর.এম. ভিত্তিক কম্পিউটিং প্রযুক্তির জনপ্রিয়তার অন্যতম কারন হলো, এই মাইক্রোপ্রসেসরগুলো আকারে বেশ ছোট হয়ে থাকে এবং কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। এক্স৮৬ প্রযুক্তির মাইক্রোপ্রসেসর তুলনামূলকভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারে শাস্ত্রয়ী নয় বিধায় অনেক বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানী, বিশেষ করে যারা সার্ভার ভিত্তিক প্রযুক্তি সেবা প্রদান করেন, তাদের মাঝে সাম্প্রতিক সময়ে এ.আর.এম. ভিত্তিক কম্পিউটিং প্রযুক্তির ব্যবহারে বেশ উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। মূলত তুলনামূলকভাবে দামে কম ও ব্যবহারের দিক থেকে পরিচালন খরচ কম হওয়া একটা বড় কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, এ.আর.এম. ধীরে ধীরে মূল ধারার কম্পিউটার (এক্স৮৬) এর বাজারে ঢোকার প্রবেশ করছে। বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানও এ ব্যাপারে ব্যাপক উৎসাহ দেখাচ্ছেন। বাজারে ইতোমধ্যেই এই ধারার বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে যা ভোক্তা পর্যায়ে চলে গেছে।
আমার ব্যক্তিগত ধারনা আগামী এক/দুই দশকে এই ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। এক্স৮৬ মাইক্রোপ্রসেসর ভিত্তিক বাজার ধীরে ধীরে এ.আর.এম. দখল করে নেবে, বলা যায় এটা অবশ্যসম্ভাবী।
ছবি কপিরাইট: পাই ফাউন্ডেশন
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৫৩