somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চ্যাটিং উইথ রুপন্থী (শেষ পর্ব)

২০ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



চ্যাটিং উইথ রুপন্থী (প্রথম পর্ব)

বিবাহিত আর অবিবাহিতের ব্যাপারটা তো কোনোক্রমে পার করা গেল । রোহান ধরেই নিলো – রুপন্থী অবিবাহিত (যেকোনো কিছুই ধরে নেওয়া যায়; এতে কোনো ক্ষতি নেই । একজন ল্যাংড়া-লুলা মানুষ ও ধরে নিতে পারেন – তার দু’খানা সবল কর্মঠ পা আছে এবং সেই পা দিয়ে তিনি নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করছেন)। কিন্তু খট করে মনে প্রশ্ন জাগে অন্যখানে – এ সুদীর্ঘ জীবনে রুপন্থী কী কারো প্রেমে পড়েছে ? কত জন প্রেমিক তার জীবনে এসেছে ? প্রেমের ধরণ-ধারণ, আচার-আচরণ ও প্রকরণ কেমন ছিল ? তারা কী দূর থেকেই ভালোবেসেছে নাকি :-/ .....................

রোহান আর ভাবতে পারে না । তার মস্তিস্কের করোটিতে বেশ প্রদাহ অনুভূত হচ্ছে । সে এর আগে ও দেখেছে জটিল কোন চিন্তা শুরু করলেই তার ব্রেইন সেলগুলি লাঁফাতে শুরু করে । লম্ফনরত সেলগুলি একটা পর্যায়ে সরাসরি করোটিতে গিয়ে আঘাত করে । তখন ই প্রদাহটা হয় । আচ্ছা, প্রেম-ভালোবাসা কোহেকাফে নিষিদ্ধ নয় তো ?

পরের বার কথা হলে এই সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয়গুলি জেনে নিতে হবে – ভাবতে ভাবতে বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয় রোহান । উদ্দেশ্য – এক টুকরো নিঁখাদ ঘুম । কিন্তু সে আশায় গুঁড়েবালি । তন্দ্রায় একটুখানি চোখ বুজে এলেই তার মনে হয় পাশে শুয়ে আছে কোহেকাফ নারী ! পাশ ফিরে সে হাত বাড়ায় তার স্বপ্নরাণীকে ছোঁয়ার জন্য , পারে না । এভাবে একবার, দুইবার, তিনবার, .................. পঞ্চান্নবার । নাহ্ , ব্যার্থতা প্রতিবারেই ঘুরে ফিরে আসে কিন্তু যার আসার কথা সে আসে না ! রোহানের মস্তিস্ক বিকৃতি ঘটতে থাকে । হ্যামারিং ঘটে ব্রেইন সেলগুলির । স্বাভাবিকতা হারিয়ে অস্বাভাবিক এক জগৎকে সে হাতছানি দেয় ইশারায় ; যে জগৎ আরাধ্য , অলীক আর কল্পনার কল্পতরু দিয়ে আগাগোড়া মোড়া ।



……………………………………………………………….



মাস ছয়েক পরের কথা । আগের তুলনায় রোহান এখন অনেকটাই অস্বাভাবিক ! মা , বাবা কিংবা বন্ধু-বান্ধব কারো কথার ই ঠিকমতো জবাব দেয় না সে ।

যদি মা কখনো জিজ্ঞাসা করে – ‘তোর কি হয়েছে , বাবা ?’
সে বিড়বিড় করে জবাব দেয় – ‘Nothing.’
মা আবার বলেন – ‘কি ঘটেছে ? আমি তোর মা ! আমায় সবকিছু খুলে বল্ , বাপ আমার ! কোনো কিছু লুকোস নে !’
রোহান অন্যদিকে চেয়ে বলতে থাকে – ‘Nothing happened ! Everything is okey, Mom.’

এভরিথিং যে ওকে নেই – একথা রোহানের মা যেমন বুঝতে পারেন ঠিক তেমনি খুব গুরুতর কিছু একটা যে ঘটেছে এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চিৎ হন । কিন্তু এই ‘কিছু’ টা কি হতে পারে ? – এ পশ্নটাই ঘুরে ফিরে আচমকা তার মনে দোল দেয় ।







অনূপ চ্যাটার্জী পেশায় একজন মনোচিকিৎসক । এলাকাজুড়ে ভীষণ সুনাম তার । কথিত আছে – বদ্ধ পাগল এবং উন্মাদরা ও তার তত্ত্বাবধানে গেলে সম্পূর্ন সুস্থ হয়ে যায় ।

বেশ কিছুদিন যাবৎ রোহানকে নিয়ে ডাঃ অনূপের চেম্বারে আসতে চাইছিলেন রোহানের মা , মালিহা রহমান । কিন্তু রোহানের সম্মতি ছিল না । অবশেষে মায়ের পীড়াপীড়িতে তাকে আসতেই হলো ।

ডাঃ অনূপ রোহান কে একবার টপ টু বটম দেখে নিলেন । তারপর তিনি রোহানের মা কে রুম থেকে বাইরে গিয়ে অপেক্ষা করতে বললেন । মালিহা রহমান বেরিয়ে যাবার পর ডাঃ অনূপ তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিমায় প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু করলেন :

‘বালক , তোমার নাম ?’
‘রোহান ।’
‘সম্পূর্ণ নাম বলো’
‘এ মুহূর্তে মনে আসছে না । মনে এলে পরে বলবো ।’
‘আচ্ছা , ঠিক আছে । তোমার পেশা ?’
‘স্বপ্ন দেখা’
:-* হুম্ । আচ্ছা বলোতো – তোমার সমস্যা কি ?’
‘কোনো সমস্যা নেই । আপনার কী আমাকে দেখে মনে হচ্ছে কোনো সমস্যা আছে ?’
‘নাহ্ , একদম ই না । এবার বলোতো – আমার কাছে কেন এসেছো ?’
‘মায়ের পীড়া-পিড়িতে’

ডাঃ অনূপ আর কথা বাড়ালেন না । রোহানকে পাঠিয়ে তার মা কে ডেকে এনে বললেন – দেখুন , আপাতত নিশ্চিৎভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না । সব ই অনুমানের ব্যাপার । সম্ভবত চাঁপা স্নায়বিক উত্তেজনা থেকে ব্রেইন হ্যামারেজ ; নার্ভগুলির অস্বাভাবিক স্পন্দন এবং সেরেব্রাল হেমিস্পিয়ারে অপঘাত । এভাবেই মেন্টালি ডাউন হয়ে পড়েছে আপনার ছেলেটি । ভয় পাবেন না । আপনাকে আমি কিছু টেষ্ট লিখে দিচ্ছি , এগুলি যত দ্রুত সম্ভব করিয়ে আনুন ।

মালিহা রহমান প্রেসক্রিপশনটি নিয়ে চেম্বার থেকে বেরিয়ে এলেন । তার একমাত্র ছেলের এই দুরবস্থা তিনি কোনোভাবেই মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না ।



সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৩
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

লিখেছেন গ্রু, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৮



ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।

মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×