somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার পুরুষবোধ (পর্ব-6) ঃ প্রভার ঘরে ট্যাবলেট বাবুর নিশি অভিযান এবং আমার প্রথম স্ল্ল্যাং

০৭ ই জানুয়ারি, ২০০৭ রাত ১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্রিগেডিয়ারের এর স্ত্রীর সাথে বাবলু ভাই এর অভিসারের কাল্পনিক চিত্র আমাদের বড় করে দিলেও তার মেয়েও ভাবনার বাইরে ছিল না। আমরা সেই মেয়ের প্রেমে পড়তে পারিনি কারন ওরকম দুধে আলতা মেয়ের প্রেমে পড়াটা ছিলো সাহসের ব্যাপার। প্রভা ছিল সত্যিই সুন্দরী যার সাথে প্রেমের কল্পনা নিয়ে সিনেমা হয়। আর তার নামটিও ছিলো গল্পের বই এর মতো সুন্দর - প্রভান্বিতা ঊষা, সবাই ডাকে প্রভা। কিন্তু আমাদের সবাইকে অবাক করে দিয়ে প্রভা প্রেমে পড়ল ট্যাবলেট বাবুর। মাথায় সেই বয়সেই চুল নেই, একই ক্লাশে দুইবার করে থাকে, ট্যাবলেটের মতো গোলাকার একটা মাথা গাবদা ঘাড়ের উপর নিয়ে বেড়াতো বাবু। আমরা তখন হায় হায় করে উঠলাম -এ কি হলো- আক্ষেপে মাথার চুল ছিড়লাম - ঈশ আমি যে কেন বললাম না

একবার রাত্রে ধুমধমি চিৎকারে বাইরে বেরিয়ে এলাম। রাত আড়াইটায় আমরা কয়েকজন উঠতি কিশোর বেরিয়ে আসতেই সব শুনশান। চোর পালিয়ে যাওয়ার গল্প ব্রিগেডিয়ারের বাড়ির কেয়ারটেকার হাসিমুখে বলে যায়। বড়রা ঘওে ঢুকে যায় কিন্তু আমাদের ঘরে ঢুকতে ভালো লাগে না। আকাশে তখন পূর্ণ চাদ। ঘুমে অন্ধকার গোটা শহর।

জটলা পাকিয়ে ছেলেরা গল্প করি। হটাৎ কার যেন দরজায় লাথি মারার আওয়াজ ভেসে আসে। আমরা সচকিত হয়ে উঠি। ব্রিগেডিয়ারের বাসার থেকেই আসছে আওয়াজটা। আমরা এগিয়ে যাই। হটাৎ চোর বাসার পাশের অন্ধকার থেকে বেরিয়ে দৌড়ে পালায়। আমরা হৈ হৈ করে চোরের পেছনে দৌড়াতে গিয়ে থমকে যাই - বাবু!!! সেই ট্যাবলেট মার্কা গোলাকার মুখ। আমরা বুঝে যাই সবকিছু।

চোর ধরতে না পেওে আমরা ঘরে ফিরে আসি কিন্তু কল্পনায় জেগে থাকে প্রভার ঘরে বাবুর নিশি অভিযান এর রেশ। পরে জানতে পারি সত্যিকারের ঘটনাটা। বাবু প্রভার রুম থেকে বের হওয়ার সময় কেয়ারটেকার অন্ধকারে তাকে চোর মনে করেছিল , তখন তার সাথে ধ্বস্তাধ্বস্তির শব্দ শুনেই আমরা বেরিয়ে পড়তে পড়তেই সে চিনে ফেলে বাবুকে।
সে একটা ঘরে বাবুকে আটকে রাখে , ভাবে শান্ত হলে চুপচাপ তাকে বের করেদেবে কিন্তু বোকা বাবু ভয়ে দরজা লাথি মারতে শুরু করলে সবকিছু ফাস হয়ে যাবার ভয়ে তাকে বের করে দেয়া হয়।
সেই চোরের গল্প নেকদিন মুখে মুখে ফেরে। পাড়ার মহিলারা প্রভাকে চোরের কথা জিজ্ঞাসা প্রভা বলে ইয়া মোটা কালো এক চোরের গল্প।
প্রভার সাথে আমাদের একবার ঝগড়া লাগলো। রাস্তায় নেট টানিয়ে শীতকালে আমাদের ব্যাটমিন্টন খেলা হত। যে জায়গায় সেবার কোর্ট বানানো হলো সেটা ছিল ওদের বাসার উল্টোদিকে (ওটা আমাদের বাসারও উল্টোদিকে)। দুদিন খেলার পওে প্রভা খেলা সম্পর্কে আপত্তি জনায়। ব্রিগেডিয়ার সাহেব ঢেকে পাঠান আমাদের। আমরা হাজির হতেই মুখের পাইপ হাতে নিয়ে গম্ভীর গলায় বললেন- পাশের মাঠে গিয়ে কোট কাটতে তিনি আলো নিয়ে যাবার তারের পয়সা দিয়ে দেবেন। রাগে কাপতে কাপতে আমরা ফিরে আসি। সব রাগ গিয়ে পড়ে ট্যাবলেটের উপর। ওর প্ররোচনাতেই এটা হয়েছে আমাদের নিশ্চিত মনে হয়। এসময় ট্যাবলেটের এটা চিঠি আমাদের হাতে আসে। সেই চিঠি পড়ে আমরা জানি আদর করে সে তার প্রেমিকাকে প্রভাতের মা বলে ডাকে। একদিন ছাদে দাড়িয়ে আছি, প্রভা উঠেছে ছাদে - মুখোমুখি দাড়িয়ে হটাৎ চিৎকার করে বলে উঠি
ঊষার দুয়ারে হানে আঘাত
কোলে আসিল রাঙা প্রভাত ।।
শব্দগুলোর মধ্যে একটা আদিরসের ঈঙ্গিত ছিলো। এটিই ছিলো আমার জীবণের প্রথম স্ল্যাং।
প্রভা কবিতা শুনে টমেটোর মতো লাল রঙের হযে গেলো। হনহনিয়ে সে নেমে সোজা আমাদের বাসায়। আমি ভয়ে মরি। আমি ছাদ থেকে নেমে দৌড়।
সে বাসায় নালিশ দেয় নি স্বাভাবিকভাবেই কারন তাতে তাকে কবিতার অর্থ ব্যাখ্যা করতে হতো .. কিন্তু সে একটু ভয় দেখাতে চেয়েছিল।
কিন্তু সেরকম ছেলেই আমরা ছিলাম না।

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
১৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×