somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অদ্ভুত সব গল্প – হুমায়ূন আহমেদ (কাহিনী সংক্ষেপ)

২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
বইয়ের নাম : অদ্ভুত সব গল্প
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ


পাঠকদের মনে রাখতে হবে আমার লেখা অন্যসব কাহিনী সংক্ষেপের মতো এই কাহিনী সংক্ষেপটিও স্পয়লার দোষে দুষ্ট। এই কাহিনী সংক্ষেপে সম্পূর্ণ উপন্যাসের মূল কাহিনীর ধারাবাহিক বর্ননা করা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাই এখানে উল্লেখ আছে। যেহেতু আমার কাহিনী সংক্ষেপ স্পয়লার দোষে দুষ্ট হয়, তাই আমি সবসময় অনেক দিনের পুরনো বইয়ের কাহিনী সংক্ষেপ লিখি।
====================================================================

অদ্ভুত সব গল্প বইটিতে মোট ৫টি অদ্ভূত গল্প আছে, যথা -


১ম গল্প : গুণিন
চান্দ শাহ ফকিরের আসল নাম সেকান্দার আলি, তার স্ত্রীর নাম ফুলবানু। ফুলবানু ৫ বছর যাবত অসুস্থ হয়ে বিছানায় পরে আছে। চান্দ শাহের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। কোনো আয় রোজগার নেই বললেই চলে। তিনি খুব গল্প করতে ভালোবাসেন। নানান ধরনের ফকিরি গল্প তিনি করেন, সকলকে বলেন তিনি নানান তন্ত্র মন্ত্র জানেন। আসলে সবই বোগাস। তিনি যখনই শোয়ার সময় গল্প শুরু করেন তখনই তার স্ত্রী ভীষণ রেগে যায়। একদিন রাতে তার স্ত্রীর অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেলে, তারপরেও তার স্ত্রী তাকে রুম থেকে বেরিয়ে বাইরে বসতে বলল। তিনি বাইরে বসে রইলেন। এমন সময় হঠাত একটা পরী এসে তার সাথে দেখা দিলো। পরী তাকে অনেক কিছুই দিতে পারে, কিন্তু যে কোনো একটা তাকে চাইতে হবে। গুনিন চাইল ফুলবানু যেন সুস্থ হয়ে যায়। পরী ফুলবানু কে সুস্থ করে দিয়ে চলে গেলো। কিন্তু হায় এই সত্যি কথাটা কার স্ত্রী কোনো দিন বিশ্বাস করবে না।



২য় গল্প : আয়না
শওকত সাহেব ছোট একটা আয়নাতে শেভ করেন, আয়নাটা পুরনো হয়ে গিয়ে পারা উঠে গেছে বলে পরিষ্কার দেখা যায় না। শেভ করতে গিয়ে তিনি গাল কেটে ফেললেন, সেই সময় তিনি দেখতে পেলেন আয়নর ভেতরে একটি ছোট্ট মেয়ে দেখা যাচ্ছে। মেয়েটি বলে উঠলো -"আপনার গাল কেটে রক্ত বের হচ্ছে।"
শওকত সাহেবের অফিসে নতুন কম্পিউটার এসেছে, এখন থেকে সব হিসাব কম্পিউটারে করা হবে। তিনি কম্পিউটার মোটেও পছন্দ করেন না। যে ছেলেটি কম্পিউটার শেখাচ্ছে সে সবাইকে শিখিয়ে ফেলেছে শুধু তিনি এখন পর্যন্ত কিছুই শিখতে পারেন নি। এক সময় তিনি হাল ছেড়ে দেন, তার দ্বারা কম্পিউটার শেখা হবে না। কিন্তু ছেলেটি হাল ছাড়ে না, তাকে শেখাতে চেষ্টা করে যেতেই থাকে। এবং এক সময় তিনি কম্পিউটার চালানো শিখে জান।
আয়নায় যে মেয়েটি আছে তার নাম চিত্রলেখা। আয়নার মেয়েটির সাথে তার কথা হয় কিন্তু তিনি মনে করেন তিনি পাগল হয়ে যাচ্ছেন, আয়না আসলে কেউ নেই। মেয়েটার সাথে কথা বলতে বলতে মেয়েটার প্রতি তার খুব মায় জন্মে যায়।
একদিন রাতে অফিস থেকে ফিরে তিনি দেখেন পুরনো হাত আয়নাটা নেই। তার স্ত্রী পুরানাটা ফেলে দিয়ে নতুন আরেকটা কিনে এনেছেন। পুরনোটা যে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে, সেই ডাস্টবিনে গিয়ে ময়লার মাঝে শওকত সাহেব আয়নাটি খুঁজতে থাকেন। তার সারা গা ময়লায় মাখামাখি হয়ে যায়।




৩য় গল্প : কুদ্দুসের এক দিন
কুদ্দুসের মেট্রিক পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে তার বাবাকে সাপে কাটে। বাবা মারা যাওয়ার কারণে তার আর পড়ালেখা করা হয় না।
এখন সে মাঝ বয়সী লোক। নানান ধরনের ছোটোখাটো কাজ করা সে জীবন অতিবাহিত করেছে। বর্তমানে একটা পত্রিকা অফিসে ফাই ফরমাস খাটার চাকুরী করে। একদিন অফিসের বড় সাহেব একটা চিঠি হাতে হাতে পৌঁছে দেয়ার জন্য তাকে পাঠা। যেখানে পৌছাতে হবে সেটা ১০ তালা একটা দালান। কুদ্দুস লিফটে উঠার পরেই সমস্যা শুরু হয়। বিদ্যুৎ চলে গিয়ে আধো অন্ধকার হয়ে লিফট বন্ধ হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে বিদ্যুৎ ছাড়াই লিফটটি শাইশাই করে চলতে শুরু করে। লিফটটি যখন থামে কুদ্দুস তখন লাফ দিয়ে লিফট থেকে বেরিয়ে আসে। বিচিত্র কোনো কারণ লিফটটি কুদ্দুস কে ত্রিমাত্রিক জগত থেকে বেরকরে নিয়ে চতুর্মাত্রিক জগতে নামিয়ে দেয়। চতুর মাত্রিক প্রাণীদের সাথে কুদ্দুস বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে। তারা কুদ্দুসকে বেস পছন্দ করে। যে হেতু চতুর্মাত্রিক প্রাণীদের কাছে সময় স্থির, তাই তারা ঠিক করে কুদ্দুস কে তারা তার বাবাকে সাপে কাটার আগ মূহুর্তে ফেরত পাঠাবে। সে তার বাবাকে সাপে কাটার হাত থেকে বাঁচাবে, পরীক্ষা দিবে। নতুন আরেকটা জীবন পাবে।




৪র্থ গল্প : ভাইরাস
নুরুজ্জামান সাহেব একটি রেস্টুরেন্টে খেতে বসে আরেক ভদ্র লোকের সাথে আলাপ হয়। সেই লোক নিজেকে ভাম্পায়ার বলে দাবি করে। তার বক্তব্য হচ্ছে ভাম্পায়ার একটা ভাইরাসজনিত রোগ। রক্ত বাহি এই ভাইরাস মৃত্যুহীন। যে মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয় সেই মানুষ মারা গেলে ভাইরাসগুলিও মারা যাবে বলে ভাইরাসরা কোনো ভাবে সেই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। ভাম্পায়ারদের দুটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা রোদের দিকে তাকাতে পারে না, তাই তারা সানগ্লাস পরে থাকে, আরা তাদের কোনো ছায়া পরে না। নুরুজ্জামান সাহেবেরও কোনো ছায়া পরে না।



৫ম গল্প : নিজাম সাহেবের ভুত
নিজাম সাহেব রাতে বাসায় ফেরার সময় ট্রাকের নিচে চাপা পরেন। ট্রাকের নিচে চাপা পরার পরেও তিনি কোন ব্যথা পেলেন না। কিন্তু কিছুক্ষণ পররই তিনি বুঝতে পারলেন যে আসলে তিনি মারা গেছেন। তিনি সবাইকে দেখতে পাচ্ছেন কিন্তু কেউই তাকে দেখতে পাচ্ছে না। এমন সময় একজন তাকে ডাকলো, সেও একজন ভুত। দুজনে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ কথা বললেন। এক সময় নিজাম সাহেবের ভুত পিঠে এক ধরনের টান অনুভব করলেন। তিনি দেখলেন তার পিঠ থেকে একটা ফিতা বেরিয়ে গেছে মৃতদেহের দিকে। অর্থাৎ নিজাম সাহেব এখনো মারা যাননি, ডাক্তাররা চেষ্টার করছে তাকে বাচাতে।

=========================
আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ:
হুমায়ূন আহমেদ
১৯৭১
অচিনপুর
অয়োময়
আজ আমি কোথাও যাব না
আজ চিত্রার বিয়ে
আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ
গৌরীপুর জংশন
হরতন ইশকাপন

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ভয়ংকর সুন্দর
মিশর রহস্য
খালি জাহাজের রহস্য
ভূপাল রহস্য
পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক
সবুজ দ্বীপের রাজা

অন্যান্য
তিতাস একটি নদীর নাম - অদ্বৈত মল্লবর্মণ

অনুবাদ
ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড - টমাজ হার্ডি
কালো বিড়াল - খসরু চৌধুরী
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৪৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×