বইয়ের নাম : তোমাদের জন্য ভালোবাসা
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
লেখার ধরন : বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ২০০৯
প্রকাশক : অন্বেষা প্রকাশন
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৭০ টি
সতর্কীকরণ : কাহিনী সংক্ষেপটি স্পয়লার দোষে দুষ্ট
কাহিনী সংক্ষেপ :
একটি শ্বেত বামন তারাকে লক্ষ্য করার সময় হঠাৎ করেই আবিষ্কার হয় এন্ড্রমিডা নিহারীকার এক পাশের একটি ছোট্ট নীল গ্রহ শ্বেত বামন তারা থেকে শক্তি চুষে নিচ্ছে। গ্রহটির নাম দেয়া হয় টাইফা। এর এক বছরের মধ্যে টাইফার সাথে অমিওক্রম রশ্মির মাধ্যমে যোগাযোগ হয়। অতিউন্নতো কোন প্রাণী সেখানে আছে। তাঁরা গণিত, পদার্থবিদ্যা জানে, তবে সেগুলি পৃথিবীর হিসাবে মেলে না। তাদের হিসাবে সময় হচ্ছে শূন্য আর মহাবিশ্বও কিছু নেই সবই শূন্য।
এরমধ্যে হঠাৎ করেই একদিন টাইফা গ্রহ শূন্যে মিলিয়ে যায়। সুপারকম্পিউটার সিডিসি হিসেব করে দেখে টাইফার পরে আরো কয়েকটি গ্রহ ও তারা মিলিয়ে গেছে চক্রাকারে। হিসেব অনুযায়ী এক বছর তিন মাসের মধ্যে পৃথিবীও ভেনিস হয়ে যাবে।
আর যখন কোন উপায় নেই সেই সময় বিজ্ঞান কাউন্সিলের এক প্রতিভাবান তরুন বিজ্ঞানী কাউন্সিলের প্রধান মাথুরাকে একটি সম্ভাবনার পথ দেখায়। কিছুদিন আগে বিশাল এক মহাকাশযান তৈরি হয়েছিলো সুবিশাল দূরুত্বের এক নক্ষত্রে যাবার জন্য। কয়েক প্রজন্ম লেগে যাবে সেখানে যেতে। কিন্তু মূল উদ্যক্তা মারা যাবার কারণে সব তৈরি থাকার পরেও প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। তরুণ বিজ্ঞানীর ইচ্ছে হচ্ছে মহাকাশযানে সামান্য পরিবর্তন করে সেখানে মানব শিশুদের শিক্ষার সুব্যবস্থা তৈরি করে মহাকাশযানে করে মানব শিশুদের পৃথিবী থেকে দূরে সরিয়ে দিতে হবে। তারা মহাকাশযানে করে মহাশূণ্যে ঘুরে বেরাবে যতদিন না বাসযোগ্য কোনো গ্রহ খুঁজে পায়। তাদের সমস্ত কিছু ঠিক ভাবে পরিচালনা করবে সিডিসি কম্পিউটার।
এদিকে মহাজ্ঞানী ও প্রতিভাশালী বিজ্ঞানী ফিহার দেখা হয় লী নামের একটি মেয়ের সাথে। তার কাছে ৫ হাজার বছরের পুরনো একটি বইয়ের মাইক্রফ্লিম আছে। সেখানে বিজ্ঞান কাউন্সিল আর ফিহার কথা লেখা আছে। ফিহা লীকে বিজ্ঞান কাউন্সিলের প্রধান মাথুরার কাছে পাঠিয়ে দিয়ে নিজে একটি নির্জন যায়গায় চলে যায় চুপচাপ কিছু হিসাব করবেন বলে। লী তার অদ্ভূত বইটি দেয় মাথুরাকে।
বইটি পড়ে মাথুরা দেখেন ৫ হাজার বছর আগে একজন লোককে হঠাৎ করেই তাকে ত্রিমাত্রিক পৃথিবী থেকে চতুর্মাত্রিক জগতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সময়ের কোন বাধা নেই, চোখের নিমিশে যে কোন সময়ের অতীত বর্তমান ভবিষতের যাওয়া যায়। তাঁর পক্ষে চতুমাত্রিক জগতের কোন কিছুই দেখা বা বুঝা সম্ভব নয়। তাই তার জন্য একটি নির্দিষ্ট ঘর তৈরি করা হয়েছে। সেখানে আছে তার স্ত্রী আনার অবিকল একজন কপি। চতুমাত্রিক প্রাণীরা আনাকে তৈরি করেছে তার শিক্ষক হিসেবে।
এরপরেই তাকে নিয়ে যাওয়া হয় টাইফা গ্রহে। তিন হাজার বছর আগে টাইফা গ্রহে মানুষ আসে। তারা এখানে বিজ্ঞানে অভূত উন্নতি করেছে। চতুমাত্রিক প্রাণীদের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। মায়ের গর্ভের শিশুকে গামা রশ্মির প্রভাবে ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে মস্তিষ্কের বিশেষ বিশেষ অংশ উজ্জবিত করে মহা জ্ঞানি গণিতবিদ, পদার্থবিদ ইত্যাদি বিজ্ঞানী তৈরি করা হয়। তারা থাকে বিকলাঙ্গ। এই সব দেখে তিনি অস্থির হয়ে যান।
প্রধান গণিতবিদ তাকে ডেকে বলেন ৫ হাজার বছর ভবিষতের বর্তমান পৃথিবীতে বিজ্ঞান কাউন্সিলের গণিতবিদ ফিহা ত্রিমাত্রিক সময় সমিকরণের একটি সমাধান করেছেন। চতুরমাক্রিক প্রাণিদের তাই ফিহাকে দরকার। তাকে গিয়ে ফিহাকে নিয়ে আসতে হবে বা হত্যা করতে হবে। তেজেস্ক্রিয়তা থেকে রক্ষার জন্য মানুষ যে শক্তিবলয় পৃথিবীর চারপাশে তৈরি করেছে সেটা ভেত করা চতুরমাক্রিক প্রাণীর পক্ষে অসম্ভব বলেই তাকে এখানে আনা হয়েছে ফিহার কাছে পাঠানোর জন্য। কিন্তু এক ডাক্তার তাকে জানায় ফিহা সময় সমিকরণের একটি সমাধান করেছেন। আরেকটি সমাধান করলেই চতুমাত্রিক জগতের রহস্য সমাধান হয়ে যাবে। তাই চতুমাত্রিক প্রাণীরা ফিহাকে হত্যা করে গোটা ত্রিমাত্রিক জগত বিলিন করে দিতে চাইছে। তিনি যদি ফিহাকে হত্যা না করেন তাহলে তাকে তার সময়ে ফিরিয়ে দেয়া হবে না।
এদিকে ৫ হাজার বছর পরের পৃথিবীতে তখন দেখা দিয়েছে সেই আসল সমস্যা টাইফা গ্রহ চতুরমাত্রিক জগতে ঢুকে গেছে এবং একটি নির্দিষ্ট পথে এগিয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে চতুরমাক্রিক জগত। ফিহা চলে গেছেন নির্জন বাসে, মাথুরা পড়ছেন প্রাচীন বইটি। তিনি বুঝে গেছেন ত্রিমাত্রিক সময় সমিকরণের দ্বিতীয় সমাধান যেটি অবাস্তব বলে ফিহা বাদ দিয়ে দিয়েছেন সেটা দিয়েই তৈরি করা যায় চতুরমাক্রিক জগত। প্রাচীন লোকটি যখন ফিহাকে হত্যা করে তার আগেই ফিহা তার দ্বিতীয় সমাধানটি মাথুরাকে দিয়ে দেন। সেই সমাধান ব্যবহার করে চতুরমাক্রিক জগতের এগিয়ে আসার পথে ছোট্ট একটি চতুরমাক্রিক জগত তৈরি করে পৃথিবীর সেই মহা বিপর্যয় আটকে দেয়া হয়।
পর্যবেক্ষণঃ যেহেতু ৩ হাজার বছর আগে পৃথিবী থেকেই টাইফা গ্রহে প্রথম মানুষ গিয়ে বসতি তৈরি করেছিল সেহেতু ৫ হাজার বছর পরের পৃথিবীর মানুষের সেটা জানা থাকার কথা ছিলো। কিন্তু তারা তা জানতো না। বিষয়টি পরস্পর বিরধী।
----- সমাপ্ত -----
=======================================================================
আমার লেখা হুমায়ূন আহমেদের অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ
আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ:
ভয়ংকর সুন্দর (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মিশর রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
খালি জাহাজের রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ভূপাল রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সবুজ দ্বীপের রাজা (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
তিতাস একটি নদীর নাম - অদ্বৈত মল্লবর্মণ
ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড - টমাজ হার্ডি
কালো বিড়াল - খসরু চৌধুরী
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:২২