ডিসেম্বর মাসে বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ থাকে দীর্ঘ দিন। বেড়ানোর জন্যও নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি সময়টাই বেস্ট। এবার ইচ্ছে ছিলো ডিসেম্বরেই উত্তরবঙ্গ বেরাতে যাওয়ার, যদিও এই সময়টায় ঐ দিকে প্রচন্ড শীত থাকে। নানান কারণে ডিসেম্বরে যাওয়া হয়ে উঠেনি, তবে শেষ পর্যন্ত ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের ২ তারিখ রাতে বেরিয়ে পরি উত্তরবঙ্গের পথে। আমাদের এবারের ভ্রমণটিকে বলা যেতে পারে হ্যারিটেজ ট্রিপ। ভ্রমণ পরিকল্পনাটা আগেই সামুতে প্রকাশ করেছিলাম। যদিও বাস্তবে পরিকল্পনাটা পুরাই উল্টে গিয়েছিল। প্রথম দিন পঞ্চগড় যাওয়া কথা থাকলেও আমরা নেমে গিয়েছিলাম বিরামপুর। জানুয়ারির ৩ তারিখ সকালে নাস্তা সেরে প্রথমেই চলে গিয়ে ছিলাম রতনপুর জমিদার বাড়ি বা রখুনি কান্ত জমিদার বাড়ি দেখতে।
জমিদার বাড়ি দেখা শেষে গ্রামের ভিতর দিয়ে একটি শটকাট রাস্তা ধরে স্বপ্নপুরীতে যাওয়ার পথেই চোখে পড়লো দক্ষিণ সাহাবাজপুর খ্রিষ্টান কবরস্থান। শটকাট রাস্তার বেহাল দশা শেষে পৌছে যাই স্বপ্নপুরীতে। স্বপ্নপুরী ভ্রমণ শেষে আমরা আবার উঠে বসলাম সিএনজিতে, সময় তখন দুপুর ১টা বেজে ৪৫ মিনিট। ছুটে চললাম আমাদের পরবর্তী গন্তব্য প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান এর দিকে। ঐখানে একটি কাঠের সেতু আছে সেটিই দ্রষ্টব্য সেখানকার।
সিএনজিতে ৩০ মিনিটেই পৌছে গেলাম নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যানে। শালবনের মাঝ দিয়ে চলে গেছে রাস্তা। কিছু দূর পিচঢালাই থাকলেও পরের অংশটুকু ইটের সলিং করা। তবে রাস্তা ভালো। লোকজনের আনাগোনা আছে। অনেকেই বেরাতে আসে এখানে। দেখতে পেলাম একটি যায়গায় এসে বাঁশ ফেলে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া আছে। গাড়ি আর সামনে যেতে দিচ্ছে না। এখানে কয়েকটি দোকান-পাট বসেছে। একটি বেশ ভালো পাবলিক টয়লেটও তৈরি হয়েছে। এখান থেকে কাঠের সেতুর দূরুত্ব মোটামুটি কম নয়। দেখা গেলো এখান থেকে ভ্যানে করেই যেতে হবে সেতু পর্যন্ত, অথবা হেঁটে যেতে হবে। আমরা একটি ভ্যানে নিয়ে রওনা হলাম।
বর্ষার সময় যখন ধানি জমি গুলি জলে তলিয়ে যায় তখন সেখানে নাকি প্রচুর লাল শাপলা ফোটে। তবে আমরা যখন গিয়েছে তখন শীতকাল হওয়ায় বর্ষার জল নেই, নেই লাল শাপলার দল। আছে শুধু সদ্য রোপন করা ধানি জমি। বেশ লোকজন আছে এখানে। অনেকেই বেড়াতে আসে বুঝা যাচ্ছে। বিকেলে এখানে বসে সময় কাটাতে মন্দ লাগবেনা। তবে আমাদের হাতে সময় নেই। মিনিট ১০-১৫ কাটিয়ে আমরা ফেরার পথে পেয়ে গেলাম একটি ঘোড়ার গাড়ি।
ঘোড়ার গাড়িতে দুলকি চালে ফিরে এলাম আমাদের রিজার্ভ করা সিএনজির কাছে। আমাদের পরবর্তী গন্তব্য মাত্র সাড়ে চার কিলোমিটার দূরের সীতাকোট বিহার।
=================================================================
এই সিরিজের পর্বগুলি-
উত্তরবঙ্গ ভ্রমণ ২০২২ : ভ্রমণ পরিকল্পনা
উত্তরবঙ্গ ভ্রমণ ২০২২ : রতনপুর জমিদার বাড়ি বা রখুনি কান্ত জমিদার বাড়ি
উত্তরবঙ্গ ভ্রমণ ২০২২ : দক্ষিণ সাহাবাজপুর খ্রিষ্টান কবরস্থান
উত্তরবঙ্গ ভ্রমণ ২০২২ : স্বপ্নপুরী
=================================================================
মরুভূমির জলদস্যুর ভ্রমণ বিলাস
সিলেট ভ্রমণ : হযরত শাহজালাল ও শাহপরান দরগাহ, চাষনী পীরের মাজার, বিছনাকান্দি, লালাখাল, জাফলং, হরিপুর পরিত্যাক্ত গ্যাস ফিল্ড
শ্রীমঙ্গল ভ্রমণ : লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক,
খাগড়াছড়ি ভ্রমণ : আলুটিলা গুহা, রিছাং ঝর্ণা, শতবর্ষী বটগাছ, ঝুলন্ত সেতু, অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহার
রাঙ্গামাটি ভ্রমণ : সুভলং ঝর্ণা ও কাপ্তাই হ্রদ, ঝুলন্ত সেতু, রাজবাড়ি ও রাজবন বিহার
বান্দরবান ভ্রমণ : নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, নীলাচল, মেঘলা, স্বর্ণ মন্দির
কক্সবাজার ভ্রমণ : রঙ্গীন মাছের দুনিয়া, আগ্গ মেধা ক্যাং, বিজিবি ক্যাম্প মসজিদ, ভুবন শান্তি ১০০ সিংহ শয্যা গৌতম বুদ্ধ মূর্তি, রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহার, রাংকূট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার, ইনানী সৈকত, টেকনাফ সৈকত, মাথিনের কুপ, টেকনাফ জেটি, সেন্টমার্টিন, ছেড়া দ্বীপ
নারায়ণগঞ্জ ভ্রমণ: ১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দির, টি হোসেন বাড়ি, কদম রসুল দরগাহ, সোনাকান্দা দূর্গ, হাজীগঞ্জ দূর্গ, বাবা সালেহ মসজিদ, বন্দর শাহী মসজিদ, সিরাজ শাহির আস্তানা, কুতুববাগ দরবার শরিফ, বালিয়াপাড়া জমিদার বাড়ী, পালপাড়া মঠ, বীরেন্দ্র রায় চৌধুরী বাড়ি, মহজমপুর শাহী মসজিদ
দিনাজপুর ভ্রমণ: রতনপুর জমিদার বাড়ি বা রখুনি কান্ত জমিদার বাড়ি, স্বপ্নপুরী
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৩:৩৪