
আমরা দেখেছি যারা অন্ধকারে আকন্দ ধুন্দুল
জোনাকিতে ভ’রে গেছে; যে-মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ–কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;
----- জীবনানন্দ দাশ -----
আকন্দ
অন্যান্য ও আঞ্চলিক নাম : সাদা আকন্দ, অর্ক, সুর্য্যাহবয়, ক্ষীরী, সদাপুষ্প, বিকীরণ, মন্দার, বসুক,অলর্ক, রাজাহব, দিব্যপুম্পিক, হ্রাসভাগনি, শ্বেতার্ক, গণরূপ, প্রতাপশ।
Common Name : Giant Milkweed, White Crown Flower , Giant Milkweed Crown Flower, Gigantic-Swallow-Wort, White Calotrope ইত্যাদি
Scientific Name : Calotropis gigantea (সম্ভবতো)

শিবঠাকুরে পূজো সিদ্ধ হয়না বেল পাতা, ধুতোরা, আকন্দ ফুল ব্যতিরেকে। আকন্দের পাঁচটি পাঁপড়ি নির্দেশ করে শিবের অপর রূপ পঞ্চাননকে। শিবপূজায় একটি আকন্দ ফুল অর্পন করে ফল পাওয়া যায় স্বর্ণ অর্পনের সমান, এমনটাই বর্ণিত পুরাণে। বলা হয়-
“আকন্দ বিল্বপত্র আর গঙ্গাজল
এই পেয়ে তুষ্ট হোন ভোলা মহেশ্বর।”

আকন্দ এক প্রকার গুল্ম জাতীয় ঔষধি উদ্ভিদ। রাস্তা পাশে এবং পরিত্যক্ত স্থানে বেশি পাওয়া যায়। এই গাছ সাধারণত: ৩-৪ মিটার পর্যন্ত উচুঁ হয়ে থাকে। কচি ডাল লোমযুক্ত। পাতা ৪ থেকে ৮ ইঞ্চি লম্বা এবং পাতার নিজের ভাগ ভেলবেটের ন্যায় নরম। তবে মে- জুন মাসে ফল পাকলে ফেটে বীজ বাতাসে ভেসে বেড়ায়। বীজ থেকে বংশ বিস্তর সম্ভব হলেও সাধারণ এর মোথা ও সাকার অংশ থেকে বংশ বিস্তার হয়ে থাকে।
আমাদের দেশে সাধারণত তিন ধরনের আকন্দ দেখতে পাওয়া যায়। লাল আকন্দ, শ্বেত আকন্দ ও ছোট আকন্দ।
লাল আকন্দের ফুলের রং সাদার মধ্যে বেগুনি রং এর। শ্বেত আকন্দের ফুলের রং সাদা। এই দুই ধরনের আকন্দই বেশি দেখা যায়। এছাড়া ছোট আকারের আরেক রকম আকন্দ আছে, তবে সেটি খুব একটা দেখা যায় না।

"আকন্দফুলের কালো ভীমরুল এইখানে করে গুঞ্জরন
রৌদ্রের দুপুর ভ’রে;"
----- জীবনানন্দ দাশ -----
আকন্দ গাছের পাতা বা ডাল ভাঙ্গলে দুধের মত সাদা কষ (তরুক্ষীর) বের হয়। এই কষ খুবই বিষাক্ত। চোখে লাগলে চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
আকন্দের ছাল ,পাতা, ফুল ও কষ ঔষধি হিসেবে ব্যবহার হয়।
এটি বায়ুনাশক, উদ্দিপক, পাচক, পাকস্থলীর ব্যথা নিবারক, বিষনাশক, ফোলা নিবারক।
প্লীহা, দাদ, শোথ, অর্শ, ক্রিমি ও শ্বাসকষ্টে উপকারী।
চারিদিকে বাংলার ধানী শাড়ি-শাদা শাঁখা- বাংলার ঘাস
আকন্দ বাসকলতা ঘেরা এক নীল মঠ- আপনার মনে
ভাঙিতেছে ধীরে ধীরে;-চারিদিকে এই সব আশ্বর্য উচ্ছাস;
----- জীবনানন্দ দাশ -----

আর কবিগুরু লিখেছেন -
“আছিলে কাব্যের দুয়োরাণী
পথপ্রান্তে গোপন আঁধারে।
সঙ্গী যারা ছিল ঘিরে তারা সবে নামগোত্রহীন,
কাড়িতে জানে না তারা পথিকের আঁখি উদাসীন।
ভরিল আমার চিত্ত বিষ্ময়ের গভীর আনন্দ,
চিনিলাম তোমারে আকন্দ।”

ছবি ও বর্ণনা : মরুভূমির জলদস্যু।
তথ্য সূত্র : বাংলাপিডিয়া ও উইকিপিডিয়া, অন্তর্জাল।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:০১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


