বন্ধুবরেষু,
আশা করি খোদার ফজলে ভালোই আছো। পরসমাচার এই যে,আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে তোমাকে উপহার দেয়ার নিমিত্তে পত্রমারফত প্রকূতির কাছে আমি যে আবেদন করিয়াছিলাম, প্রকূতি তা তোমায় দিতে সম্মত হইয়াছে।ঈদের দিন তুমি যখন তোমার সদ্য ক্রয়কূত লাল শাড়ী পড়বে, মেহেদী রাঙ্গা হাতে লাল চুড়ি পড়বে, একটা টকটকে লাল টিপ তোমার কপালে শোভা পাবে তখন সমস্ত পাখিরা গান ভুলে তোমার নুপুরের শব্দে মাতোয়ারা হবে বলে আমাকে কথা দিয়াছে।সুর্য বলিয়াছে, সেদিন তোমার পরিহিত লাল টিপে সে তার সব লাল রং ঢেলে দিয়ে তোমার সৌন্দর্যের কাছে ম্লান হয়ে রবে।ওই দূর আকাশ, উপুড় হয়ে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করবে, কখন দুষ্ট বাতাস তোমার চুল গুলোকে এলোমেলো করে দিয়ে পালায় সেই সৌন্দর্য দেখার জন্যে, সে আমাকে বলেছে তোমার এলো চুলগুলোর ঢাল নাকি পাহাড়ের ঢালকে হার মানায়, বাতাসের আলিংগনে তোমার মসূন চুলে যে ঢেউ উঠে, সে ঢেউয়ের কথা জেনে, প্রশান্ত মহাসাগরের সব ঢেউ মুহুর্তের জন্যে নাকি থমকে দাড়ায়।ঈদের দিন সকালে, মেঘ নিজ হাতে তার রং দিয়ে তোমায় কাজল পড়াতে চেয়েছে,রংধনু বলেছে তার লাল রং দিয়ে তোমায় আলতা পড়াবে,গোধুলীর লালচে রং তোমার ঠোঠ দুটোকে লাল করতে চেয়েছে।ঐ দিন পূথিবীতে ফোটা সব ফুল তোমার পায়ে লুটাবে, তোমাকে ফুল ভেবে প্রজাপতি এসে বসবে তোমার কাধে, তোমাকে খুশি করতে নাচবে ফড়িং, নাচবে গাছের পাতা, নাচবে সমুদ্রের ঢেউ।
তোমার এত্ত রুপ, এত্ত সৌন্দর্য দেখে প্রকূতির শ্রেষ্ঠ সূষ্টি ঐ চাদ লজ্জায়, প্রথম সন্ধায় উঠেই দ্রুত ডুবে যাবে, আর তোমাকে দিয়ে যাবে পূথিবী আলোকিত করে রাখার গুরু দায়িত্ব। তুমি সৌরভ ছড়াবে পূথিবীময়, পুর্ণিমার জোয়ারে ভাসাবে সমস্ত পূথিবীটাকে।তোমাকে স্পর্শ করার জন্যে, তোমার পদযুগল ধুয়ে দেয়ার জন্যে বার বার আছড়ে পড়বে সমুদ্রের ঢেঊ, তোমাকে বূষ্টি হয়ে ছোয়ার জন্যে মেঘগুলো করতে থাকবে নানা আয়োজন, তোমার পায়ের স্পর্শ পেয়ে আজন্মকাল ধরে উত্তপ্ত মাটি শীতল হবে, সবুজ ঘাসে চির যৌবনা হবে, সবুজ পূথিবী হবে আরো সবুজ, আরো ঘন গাড় সবুজ।বনের ফুল তোমার খোপা থেকে আর বনে ফিরে যেতে চাইবে না, মেহদীর রং চিরকাল ধরে তোমার হাতের সাথে ঠাসাঠাসি করে মেখে থাকতে চাইবে, সুর্যের দেয়া লাল টিপ আর সুর্যের কপালে ফিরে যেতে চাইবে না।তোমার ঐ নিস্পাপ তুমিকে তারা স্পর্শ করে, তোমার মত আরো পবিত্র, আরো নিস্পাপ হতে চাইবে।
কিন্তু জানো নীল পাখি, ঐ ঈর্ষাপরায়ণ আকাশ বলেছে, সে নাকি তোমার সব সাজ, সব সৌন্দর্য নষ্ট করে দেবে, আকাশ ভেঙ্গে বূষ্টি নামিয়ে সে নাকি তোমাকে জোর করে স্পর্শ করবে, সব কিছু ধুয়ে মুছে তোমার সৌন্দর্যকে ম্লান করে দেবে। কিন্তু তুমি বলো নীল পাখী তাই কি হয়? তুমি কি আর কূত্তিম রং মেখে সুন্দর হবে যে বূষ্টির পানিতে তা ধুয়ে যাবে? তোমার হাতের মেহেদীর রং, চুলের ঘন কালো মায়াবী রং, সুর্যের দেয়া কপালের টিপ, রংধনুর রঙ্গে রাঙ্গানো তোমার পায়ের আলতা সবই তো প্রকূতির, প্রকূতি ভালোবেসে তোমাকে দিয়ে যাবে, তাহলে ঐ অবুঝ বূষ্টি কি করে তোমার সৌন্দর্য ধুয়ে ম্লান করে দিবে তুমি বল?আমি অবশ্য আকাশকে বূষ্টি পাঠাতে নিষেধ করি নি।কারণ বোকা আকাশ জানে না, বূষ্টিস্নাত প্রকূতির রঙ্গে রঙ্গিন আমার বন্ধুটিকে আরো সুন্দর, আরো মায়াবী মনে হয়।
ঈদে প্রকূতি তোমায় এত কিছু দিবে কারণ প্রকূতির অনেক আছে। আমি নিঃস্ব, রিক্ত। অন্তরে জমানো বেহিসেবী ভালোবাসা ছাড়া আমার বন্ধুটির জন্য ঈদের উপহার পাঠানোর মত কিছুই নেই আমার। হে বন্ধু, আমার অন্তরে জমানো আজন্ম লালিত বন্ধুসুলভ ভালোবাসা তোমার ঈদ উপহার হিসেবে গ্রহণ কর। এক বুক ভালোবাসা রইল তোমার জন্য, এ ভালোবাসা খাটি, পবিত্র, এ ভালোবাসায় আছে শুধু বন্ধুত্বের দাবী, এ ভালোবাসায় আছে শুধু বন্ধু হিসেবে পাশে থাকবার প্রবল আকুতি। হে বন্ধু এই ঈদে তোমার জন্যে পাঠালাম, লাখ লাখ ফুলের মোড়কে প্যাকেট করা ব্যান্ড নিউ ভালোবাসা। সুখে থাকো, শান্তিতে থাকো, তোমার ঈদ কাটুক পবিত্র আনন্দ আর প্রিয়জনের বে-হিসেবী ভালোবাসায়।এই কামনায়-
তোমার e-বন্ধু
মামুন