somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রভাবিত আমি

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফেবারেটিসম নিয়ে আমি মাথা না ঘামালেও আমার চারপাশের মানুষগুলো এই ব্যাপারটা নিয়ে খুব যন্ত্রনা দিত আমাকে। আমারকে প্রায় সবাই পছন্দ করত আমার ভালো ব্যবহারের জন্য। আমার শত্রুরা সেটা পছন্দ করত না, আর আমার বন্ধুদের জন্য সেটা গর্বের বিষয় ছিল আমার প্রতি। কখন ভাবা হয়নি সবার মধ্যে যে কেন্দ্রীয় অবস্থানটা আমি পেয়েছিলাম তা এক সেকেন্ডে ভেঙ্গে পড়বে।সেদিন ক্যাফেটেরিয়ায় হটাৎ চোখ পড়ল একটা গম্ভীর ছেলের দিকে।কেন যেন এগিয়ে গেলাম।এভাবেই শুরু হয় জেমস আর আমার মধ্যবর্তী সম্পর্ক, যা শেষ হয়েছে দুঃস্বপ্নের শেষে ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠার মত।

জেমস ছিল সিনিয়র, আমি সফমোর। জেমসের অ্যনসেস্টররা ইউরোপীয়ান, কোন দেশের তা ও নিজেও জানেনা। তবে এমন ছিল না যে আমার তা জানতেই হবে, কেননা যে আমার কৌতুহল ও ভালবাসার উৎস, সে আমার সামনেই ছিল।

একটু একটু করে এগিয়ে গেলাম ভালবাসার সাজানো পথধরে। ঠিক সাজানো পথ ছিল কিনা জানিনা, কেননা সেই পথের শেষ আমাকে রক্তাক্ত করার উৎসব নিশ্চই যে ভালবাসে, সে তৈরি করে রাখবে না। একটু একটু করে জেমসের ভালবাসা পেয়েছি বলে মনে হতে হল। একইসাথে আমার বন্ধুদের আসল রুপ দেখতে পেলাম বলে মনে করলাম।

মানুষ যখন ভালবাসে, তখন সে চায় তার ভালবাসার মানুষটার কাছে যতটুকু সময় পারা যায়, ঠিক ততটুকু সময় একসাথে কাটাতে। আমি প্রতিদিন লাঞ্চে ওর পাশে বসতাম। আর জেমস যখন বুঝতে পারল আমার মনে ওর জন্য একটা দুর্বলতা বেড়ে উঠছে, তখনই ও আমাকে বলতে লাগলো আমি কখন কি করবো, কার সাথে কথা বলব, কার সাথে বলবনা, কিভাবে ব্যবহার করব, ইত্যাদি। এক কথায় আমকে ও কন্ট্রোল করতে চাইল, বলা বাহুল্য আমিও ওর কথা মানতে লাগলাম।

জেমস আমার বন্ধুদের পছন্দ করলনা, তাই ওর কথায় ওদের এড়িয়ে চলতে লাগলাম। আমার বন্ধুরা বলতে লাগলো আমি বদলে গেছি, আমি আর ওদের বন্ধু নই আর। কিন্তু জেমসকে কষ্ট না দিতে পেরে বন্ধুদের কাছ থেকে একটু একটু করে দুরে সরে গেলাম। বাবা মা আমাকে যেন চিনতে পারেনা, অদ্ভুত আচরন করতে লাগল সবাই।

গ্রীষ্মের তপ্ত বিকেলে ঠিক এক বছর পর আমি হাসপাতালের সামনে জেমসের পাশে বসে আমাদের জীবনের শেষেরবারের আগের ওর সাথে বলা কথাগুলো বললাম। প্রচন্ড অসহায় বোধ করছিলাম। অমনযোগী আমি কখনই জেমসকে চিনতে পারিনি, পারিনি ও যখন আমাকে কন্ট্রোল করতে লাগলো, পারিনি যখন ও আমার ভালবাসাকে পুজি করে আমার আমাকে ব্যবহার করল।

আমার পকেটে তখন আগের রাতের ড্রাগ পরে আছে। একটু আগে নিজ হাতে আমার রক্তের, শুধু জেমসের আমাকে ব্যবহারের নির্দশন আমার সন্তানকে ঈশ্বর নামের কারো কাছে পাঠালাম পৃথিবী থেকে দুর করে।

জেমসের দিকে চাইতে ইচ্ছা করছিল না, বললাম আমাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে আস। জেমস বুঝতে পারল ওর আসল রুপ আমি দেখেছি, তাই যা বললাম তাই করল। বাড়ীতে ঠিকই ফিরলাম, কিন্তু যেই আমাকে নিয়ে সবার ধারনা ছিল অসাধারন, সে যেন নিভে গেছে।

এরপরও জীবন থামেনি, চলতে লাগল, তবে আগেরমত নয়,খুড়িয়ে। জেমস এসেছিল, প্রার্থনা করে বলেছিল সে ভুল করেছে। কিন্তু এবার আর ভুল হলনা, আমার পথ থেকে সরে যেতে বললাম ওকে, দৃড়কন্ঠে!

(অসমাপ্তের সমাপ্তি)


সম্পুর্ন গল্প, কল্পনাদের সংমিশ্রন। প্র‌থমব্যক্তিতে লেখতে বেশি ভালোলাগে বলে লিখলাম। একটা কথা, ''যে ভালবাসে, সে নিয়ন্ত্রন করতে চায়না, ব্যবহার করেনা, বরং যার মনে ভয় থাকে আসল রুপ বেরিয়ে পড়ার, যে প্রতারনা করে, সে চায়''।

''ভালো থাকুন''
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১২ ভোর ৬:৪৬
৩১টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×