somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফুলটি শ্মশানের জন্যে

০৮ ই মে, ২০১৯ দুপুর ১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

- তোকে ফেলতে বলছি, ফেলে দিবি। দার্শনিক আমাদের বইগুলোতে অভাব নেই যে নতুন একজন কে দরকার হবে নতুন করে।
- না ভাই। মানে এসব বলার জন্য কাওকে পাইনাতো তাই হঠাত আপনাকে বলে ফেললাম আরকি।
- কি জানি ছিলো লাইনটা। আবার বল।
- মানুষ শুধু শুধু মৃত্যুর বদনাম করে। যন্ত্রনাতো জীবন মানুষ কে দেয়।
- ঐটায় বরফ দে। না ভালোই। নেশার সাথে সাথে দু এক টা লাইন খারাপ না। আমাদের লাইনে কবি পাওয়া যায় না আবার দার্শনিক। বই টই পড়িস নাকি।
- জীবন তো সেফটি অন অফ করতে করতে গেল বা যাচ্ছে। এর মাঝখানে বই?... ছোটবেলায় পড়েছিলাম অনেক।
- ইংরেজীর টিচার হলেই ভাল করতি। যা ভাগ এখন। আর ঐ বস্তাটার কি করবি করে দিয়ে যা। মায়াটা কেমন হাটু গেড়ে বসে আছে। বয়স হয়েছে। খাবে? দিলে? ...হু ?


- আপনি কে? ও মাগো রক্ত...আ আপনি এখানে কি কিভাবে এলেন?? আমি পুলিশ ডাকব। বেরিয়ে যান বলছি।বেরিয়ে যান

- আপনার কোন ক্ষতি করার জন্য আমি এখানে আসিনি। একটু পর চলে যাব। গুলির আওয়াজ শুনছেন তো। বাইরে বের হওয়া যাবে না এখন। প্লিজ, একটু চুপ করুন ।

- এই গামছাটা নিন।যে যেভাবে রক্ত পড়ছে আপনি একটু পরেই জ্ঞান হারাবেন। আমি বেঁধে দিই?

- দরকার নেই।

- আপনি কে? আপনাকে গুলি করেছে...ওরা কারা?

- তা দিয়ে আপনি কি করবেন? থাকতে দিয়েছেন যদি চুপ করে কিছুক্ষন থাকেন তো আপনার উপকার আমি কোনদিন ভুলব না। কোন...দিন......ভু...



- মা এই খবর টা দেখেছিস। সন্ত্রাসী দুই গ্রুপ নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে ১৩ জন নিহত। কি হচ্ছে আজকাল । একজনের বয়স দেখ, মাত্র ২৬। দর্পনের মত ।

- তুমি এসব বাদ দেবে বাবা। সকাল সকাল এমন নেগেটিভ খবর অন্যকে শুনিয়ে কি মজা পাও বলতো?

- না রে। মজা না। মনে হয় কি জানিস? আমি যদি এদের সবার বাবা হতাম তাহলে এমন হতে দিতাম না। মেরে সোজা করে দিতাম হাই স্কুলে থাকতেই। এগুলো সব স্কুল থেকে আগেভাগে বিদায় নেয়া অপদার্থগুলো বুঝলি। কত মায়ের বুক আজ খালি হলো ......

- ওষুধ টা খাওতো । আর এসব পড়া বন্ধ করো।


- আমারে মারনের লেইগা সিদ্দীক ছাব তোমারে কত দিছে? আমি তার ডবল দিমু। তুমি আমার লগে আস। হেই মিয়া লোকটা বালা না। একদিন তোমার কাম শেষ হইয়া গেলে তোমারেও কাটব । বাবা আমি তোমার বাপের বয়েসী।
- বাবার কথাটা না বললেও হতো। এখন হা করেন তো দেখি। আর একটা কথা বাবা শ্রেণিটা আমার দুচোখের বিষ।


- হ্যালো স্যার... মায়ার জন্য আনবো??
- নাহ, কুত্তার মাংস কুত্তাকে খাওয়ানোটা বিশ্রী ব্যাপার হয়ে যাবে। ঝালাইয়ের দোকানে দিয়ে আয়। আর শোন ,রাতে আয় তোর জন্য একজনকে এনেছি। ছন্নছাড়া দার্শনিক লাইফ আর কত কাটাবি?
- মানে স্যার, আমি বুঝলাম না।
- আগে আয় বলছি ।

- আপনি এখানে? স্যার আমি একটু আসছি।

- বেশিদূর যাস না। কাজ আছে।

- নামিয়ে দিয়ে চলে আসি স্যার? খুব কি দরকার?

- আচ্ছা যা, আজ তুই কাটা তোর মত।



- আপনি এই ঠিকানা কোত্থেকে পেলেন? আপনি জানেন না আপনি কি করেছেন।
- ঐদিন খবরের কাগজে...
- হ্যা । স্যারের কিছু লোকও ছিলো। কিন্তু আপনি এখানে কেন? আপনি জানেন স্যার অনেক বিপদজনক লোক আর যদি অন্য অর্থ করে বসেন । আপনি কি বোকা?
- কি অর্থ।
- কি...... আমাদের এ লাইনে পরিচিত যার যত বেশী তার তত বিপদ। আপনি স্যার কে কতটুকু বলেছেন? আর ঠিকানা পেলেন কিভাবে?
- জোগাড় করে ফেলেছি। আপনার স্যার একজন বিখ্যাত মানুষ।
- এবং স্যার কোন ট্রেইল রাখেন না। আপনার জীবন এখন হুমকির মুখে। কেন এই ভুল করলেন বলেন তো? স্যারের সব রকমের ফেস আমি চিনি। এবারের টা বিভ্রান্তিকর লেগেছে।
- ঐদিন ঘুম থেকে উঠে দেখি আপনি নেই। ধন্যবাদ টা নিতে এসেছিলাম। দেবার অভ্যস নেই বোধয়।
- আপনার কি কোন আত্মীয়ের বাসা আছে দূরে কোথাও। যেখানে পৌছতে অন্তত দু একদিন লাগতে পারে?
- আমার শুধু বাবা ছাড়া এ জগতে কেউ নেই। এখন হয়তো...কেন বলুন তো?
- আজ সন্ধ্যায় আপনি এবং আপনার বাবা আপনাদের বাসার একদম সাথেই কোন বাসায় গিয়ে থাকবেন। জানিনা আপনি কিভাবে করবেন কিন্তু আপনাকে এটা করতেই হবে।
- কেন?
- একটা ঠাটিয়ে চড় খেলে বুঝতে পারবেন।
- আ আমি তো বুঝতে পারছিনা কি কিছুই। আপনি এমন করছেন কেন?
- যেটা বলছি সেটা করুন। আমার সন্দেহ যদি সত্য হয় তাহলে অন্য ব্যবস্থা করতে হবে। আপনি এখন যান। ধন্যবাদ নিতে এসেছেন তিনি। এই রিক্সা.. ম্যাডাম যেখানে যাবেন সেখানে নিয়ে যাবি আর ম্যাডামের কোন হেল্প লাগলে করে দিবি ঠিকাছে...... যান।

- তাহলে ওরা এসেছিলো।

- আমার খুব ভয় লাগছে বুঝলেন ।

- লাগাটাই কি স্বাভাবিক নয়। একটা মাত্র ভুল। আর এক্ষেত্রে হবে একবার ধন্যবাদ দিইনি বিধায়......

- আপনি কি মজা করছেন? বাবার সব বই এরা ছিড়ে কুটিকুটি করে ফেলেছে। আগুন দিয়ে সব কারটেনস পুড়িয়ে ফেলেছে। ঘরের কিছুই রাখেনি।

- আপনাদের সাথেও এমন হত। স্যার কোন ট্রেইল রাখেন না। আপনার সাথে যে কি হত বলতে পারছিনা। তবে আপনার বাবাকে হত মায়া পছন্দ করত না।

- মায়া কে?

- স্যারের বয়স্ক কুকুর। মাংস খেতে পছন্দ করে অনেক।

- আপনি আমাদের এখানে আর কখনো আসবেন না।

- হয়তো আসার মত অবস্থাই থাকবেনা। আচ্ছা যাই । ধন্যবাদ।



- মা আমার দরজা খোল। কি হয়েছে আমাকে বল। দরজা বন্ধ করে টিনেজারদের মত বসে আছিস ...এত বড় হয়ে... দরজা খোল..।

- বললাম তো কিছু হয়নি। তুমি খবরের কাগজ পড়ো । আমার কিছু হয়নি।

- তুই কি কাঁদছিস ?? এসব ছেলেদের নিয়তি এমনই হয় মা। ও বোধয় তোকে পছন্দ করত তাইনা মা ? ভেলা...লক্ষী মা আমার দরজা খোল।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৫
৯টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×