আজ দেশ বাচাতে, গনতন্ত্র বাচাতে ও দেশের মানুষদের বাচাতে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে।
-------------------------------------------------
বাংলাদেশ আজ ইতিহাসের এক কঠিনতম সময় পার করছে। একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের অর্জন, মর্যাদা ও সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর জাতি যে অন্ধকার যুগে প্রবেশ করেছিল, আজকের সময় তারই এক বিপজ্জনক পুনরাবৃত্তি।
১৯৭৬ সালে সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান সরাসরি রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকে পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেন। এরপর ১৯৮২ সালে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সামরিক শাসনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে রুদ্ধ করে দেন।
১৯৯১ সালে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া নির্বাচিত হয়ে শাসনে এসে বারবার সংবিধান ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কৌশল নিয়েছেন। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার দেশকে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির কেন্দ্রস্থলে পরিণত করেছিল।
আজ ২০২৪-২৫ সালে এসে আবারও দেখা যাচ্ছে, দেশের ভেতরে ও বাইরে স্বাধীনতা বিরোধী এবং বিদেশি প্রভুভক্ত গোষ্ঠী একজোট হয়ে বাংলাদেশকে একটি ‘ক্লায়েন্ট স্টেট’ বা ‘নিয়ন্ত্রিত উপনিবেশে’ পরিণত করতে চায়। তারা চায়, বাংলাদেশ যেন নিজের সিদ্ধান্ত নিজে না নিতে পারে চায়, বিদেশি শক্তির ছায়ায় পরিচালিত একটি দুর্বল রাষ্ট্র হয়ে উঠুক।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের নির্বাচন শেষে রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী একটি অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রেখেছে, যার কোন গণতান্ত্রিক ভিত্তি নেই। তারা একদিকে জনগণের অধিকার হরণ করছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিকভাবে মিথ্যাচার করে দেশকে অকার্যকর প্রজাতন্ত্র হিসেবে চিত্রিত করতে চাইছে।
হ্যাঁ, শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনে ভুল থাকতে পারে। সমালোচনা গণতন্ত্রের অংশ। কিন্তু তাই বলে কি আমরা সেই অপশক্তিদের হাতে দেশ তুলে দেব, যারা একাত্তরে পাকিস্তানিদের দোসর ছিল? যারা বারবার গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, ইতিহাস বিকৃত করেছে, এবং যুদ্ধাপরাধীদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিয়েছে?
আজ দেশের স্বাধীনতাকামী, প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন ঐক্য।
আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি, তাদের এখনই একটি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করতে হবে:
একটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের জাতীয় মঞ্চ,একটি তথ্যভিত্তিক জবাবদিহির সংগঠন,এবং একটি তরুণ প্রজন্মকে জাগ্রত করার প্ল্যাটফর্ম।
এই যুদ্ধ আর অস্ত্রের নয় এটা চেতনার, সত্যের, দেশের প্রতি ভালোবাসার যুদ্ধ।যারা ইতিহাস বিকৃত করছে, বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, প্রোপাগান্ডায় জনগণকে দিশেহারা করছে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো আজ জাতির নৈতিক দায়িত্ব।
বাংলাদেশ কারো অনুগ্রহে টিকে থাকা রাষ্ট্র নয় এটা লাখো শহীদের রক্তে কেনা।আজ সেই রক্তের ঋণ শোধের সময় ঐক্য, প্রজ্ঞা এবং দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে।