ইলিশ ইলিশ মাতম কারীরা এখন কোথায়?
অতীতে বিএনপি–জামাত নেতারা মুখে ফেনা তুলে বলতেন, শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে "অসম চুক্তি" করেছে, ইলিশ রফতানি করে জাতীয় স্বার্থ বিক্রি করেছে।
গত ২ বছরের বাস্তব পরিসংখ্যান
বাংলাদেশের বাণিজ্য পরিসংখ্যানই স্পষ্টভাবে বলে দেয় ভারতের প্রতি আমাদের নির্ভরতার মাত্রা কতখানি:
দুই অর্থবছরে মিলিয়ে বাংলাদেশ ভারতে আমদানি করেছে প্রায় ২১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, আর রফতানি করতে পেরেছে মাত্র ৪–৫ বিলিয়ন ডলার। বাণিজ্য ঘাটতি বিপুল, যা দেশের অর্থনীতির জন্য একপেশে চাপ তৈরি করছে।
রাজনৈতিক দ্বিচারিতা
এখানেই আসে বিরোধীদের নগ্ন দ্বিচারিতা। তারা যখন ক্ষমতায় থাকে, তখন ভারতের সঙ্গে আঁকড়ে ধরে চলে, একচেটিয়া নির্ভরশীলতা তৈরি করে। আর যখন বিরোধী দলে থাকে, তখন ভারতের নামে আগুন ঝরায়।
প্রশ্ন হলো ইউনূস সরকার ক্ষমতায় এসে আজ পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে কোনো নতুন চুক্তি প্রকাশ করেনি, পুরনো বিতর্কিত চুক্তিও বাতিল করেনি। তাহলে বিএনপি–জামাত কেন নীরব? কারণ ভারতবিরোধিতা তাদের কাছে আদর্শ নয়, বরং রাজনৈতিক ব্যবসার হাতিয়ার। এই ভণ্ডামি এখন নগ্নভাবে প্রকাশ পাচ্ছে।
অর্থনৈতিক বাস্তবতা
বাংলাদেশের নিত্যপণ্যের চাহিদা মেটাতে সবচেয়ে সহজ উৎস হলো ভারত। সীমান্তঘেঁষা দেশ হওয়ায় পরিবহন খরচ কম, সরবরাহ দ্রুত, এবং চাহিদা পূরণ সহজ। এজন্যই ডাল–চাল–পেঁয়াজের সংকট হোক বা খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রথম সমাধান হিসেবে সরকার ভারতকেই বেছে নেয়। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে দেশের বাজার চিরস্থায়ীভাবে ভারতনির্ভর হয়ে পড়বে।
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য কোনো নতুন বিষয় নয়, কিন্তু দুই দশক ধরে একই চিত্র আমদানি আকাশছোঁয়া, রফতানি সামান্য। সরকার যেই আসুক না কেন, বাস্তবে ভারতের ওপর নির্ভরশীলতাই বেড়ে চলেছে। ইলিশ রফতানি হোক কিংবা প্রতিদিনের ডাল–পেঁয়াজ–চাল আমদানির তথ্য সব মিলিয়ে একটাই সত্য প্রকাশিত হয়: ভারত ছাড়া বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল রাখা কঠিন।
তাহলে প্রশ্ন হলো বিএনপি–জামাতের ভারত বিরোধী স্লোগান আসলে কার জন্য? জনগণের জন্য, নাকি ক্ষমতার রাজনীতির সস্তা নাটক সাজানোর জন্য? জনগণ এখন বুঝে গেছে, ভারতের বিরুদ্ধে শুধু মুখের বুলি আওড়ানো আর বাস্তবে ভারতের ওপর নির্ভরশীল থাকা এটাই হলো তাদের রাজনৈতিক ভণ্ডামির নগ্ন উদাহরণ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



