১৯৭৫-এর ঘাতকরা জাতির নৈতিকতার মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে।
------------------------------------------------------------------
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করা কেবল একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ছিল না, এটি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ জাতীয় বিপর্যয়। ওই দিন আমরা হারিয়েছিলাম স্বাধীনতার স্থপতি, গণতন্ত্র ও প্রগতির স্বপ্নদ্রষ্টা এক মহান নেতাকে। কিন্তু এর চেয়েও গভীর ক্ষতি হয়েছিল জাতির আত্মা ও নৈতিকতার।
ঘাতকেরা কেবল একজন মানুষকে হত্যা করেনি, তারা আমাদের জাতীয় চরিত্রকে আঘাত করেছে। এর পরপরই বাংলাদেশকে অন্ধকারের পথে ঠেলে দেওয়া হয় যেখানে সংস্কৃতি, সাহিত্য, বিজ্ঞানমনস্কতা, প্রগতিশীল চেতনা ধীরে ধীরে নির্বাসনে যায়। একটি প্রজন্মকে সুকৌশলে বিভ্রান্ত করা হয়, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সংকীর্ণ করে তোলা হয়।
আজ আমরা সেই প্রজন্মের সংকট স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি। অনেক তরুণ কবিতা-উপন্যাস পড়ে না, শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি তাদের আগ্রহ ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে। ভালো সিনেমা, ভালো গান বা নন্দনশীল বিনোদনের পরিবর্তে তারা অনেক সময় নিম্নমানের বিনোদনে ডুবে যাচ্ছে। খেলাধুলা, ক্রীড়া ও সুস্থ বিনোদনের ক্ষেত্রেও তাদের অংশগ্রহণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাচ্ছে।
অধিকন্তু, উদ্বেগজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, কিছু তরুণকে ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। বিজ্ঞানের প্রতি অনীহা, যুক্তিবাদী চিন্তার প্রতি অস্বস্তি এবং অন্ধ আবেগের বশবর্তী হয়ে ভুল পথে হাঁটার প্রবণতা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত।
আমরা যদি নৈতিকতা ও সংস্কৃতি থেকে বিচ্যুত হই, তবে একটি সুন্দর দেশ ও আলোকিত পৃথিবীর স্বপ্ন দেখা বৃথা। কারণ, একটি জাতির শক্তি শুধু অর্থনীতিতে নয়, তার মূল শক্তি নিহিত থাকে নৈতিকতা, মানবিকতা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞানমনস্কতা ও সুস্থ জাতীয় চেতনায়।
অতএব, এখনই আমাদের প্রয়োজন নতুন প্রজন্মকে সঠিক পথে ফেরানো। তাদের বই পড়ায়, সাহিত্য-সংস্কৃতিতে, খেলাধুলায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় সম্পৃক্ত করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা তাদের হৃদয়ে জাগিয়ে তুলতে হবে। কারণ আগামী বাংলাদেশ গড়বে এই প্রজন্মই।
যদি আমরা তাদের সঠিক শিক্ষা, নৈতিক দিকনির্দেশনা ও আলোকিত সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করাতে পারি, তবে তারা আবারও বাংলাদেশের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনবে। নইলে অন্ধকারই গ্রাস করবে আমাদের ভবিষ্যৎ।
-- সালাউদ্দিন রাব্বী.
সংখ্যালঘু বাচাও আন্দোলন,
বাংলাদেশ


অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



