"মেঘ দেখে তোরা করিসনে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে।" ভোর বেলা ঘুম ভাঙ্গতেই লাইনটা মাথায় তিনবার ডং দিয়েছে। ঘুম ভাঙ্গার পর তিনবার জানালা দিয়ে আকাশের দিকে চোখ পিটপিট করেছিলাম। চতুর্থবার করার সাহস পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে চতুর্থবার চোখ খুললে সূর্য সত্যি সত্যি মেঘের আড়াল থেকে হেসে দিবে।
এই গরমে সূর্যের হাসি সহ্য হবে না। চৈত্রমাস সেই কবে পেরিয়েছে। বৈশাখ অর্ধেকটা গেল কাল-বৈশাখীর দেখা পাওয়া গেল না। চারিদিকে লু হাওয়া লুটোপুটি খাচ্ছে, ঝড় আসছে না। ঝড় এলে আমি গলা ছেড়ে গাইতাম,
ঝড় এল এল ঝড়
আম পড় আম পড়;
কাঁচা আম পাকা আম
টক টক মিষ্টি।
ঝড় আসছে না, গাওয়াও হচ্ছে না। তবে ফোন আসছে। অপরিচিত ফোন। ফোন রিসিভ করতেই দীর্ঘশ্বাস শোনা যাচ্ছে। তার পর পুপ পুপ। লাইন কেটে দেয়। দীর্ঘশ্বাসকে নেটওয়ার্কের দীর্ঘশ্বাস মনে করে আমি ফিরতি কল দিতেই অপর পাশ থেকে ফোন কেটে দেয়া হল। ফোন কাটার সাথে সাথে আমি বুঝে গেলাম এইটা রিয়া। আমার সাথে দুষ্টামি করছে।
একটু পরেই টুং করে একটা ম্যাসেজ আসলো। ম্যাসেজে লেখা, "বাবু ওঠ আর কত ঘুমাবে, অনেক সকাল হয়ে গিয়েছে তো..."
বাবু ডাক শুনে আমি মনে মনে হেসে ফেললাম। বাবু ডাকটাকে সকালের রং চায়ে ডুবানো টোস্টের মত কুড়মুড় করে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করল। আমি ফোন বন্ধ করে দিলাম।
আকাশে মেঘ কেটে যাচ্ছে। হয়ত ঝড় হবে না। হবে না বৃষ্টি। তপ্ত রোদে ভিজব।
আমি অর্ক। আমার অনেক মায়া জমেছে। মায়া ভুল। মায়া ছায়া। মায়া পাপ। তপ্ত রোদেরা মায়া ধুয়ে ফেলতে জানে।