বর্তমান সময়ে দেশে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। অনেকে এই অর্জনকে সরকারের অর্জন বলে দেখানোর চেষ্টা করছেন। যদিও তা পুরোপুরি সঠিক নয়। তবে সরকার যে এই বিষয়টি নিয়ে ভাবছে এটা ভাল খবর।
কিন্তু আমাদের দেশের এই অর্জনে সরকারের সহযোগিতা বা ভূমিকা কতটুকু? বর্তমান বৈশ্বক প্রেক্ষাপটে আদৌ কি এটা কোন অর্জন?
বর্তমান ট্রিলিয়ন ডলারের অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে বাংলাদেশের আয় মাত্র ১ বিলিয়ন। যা মাত্র ০.১%। কিন্তু বৈশ্বিক ফ্রিল্যান্সারদের বড় একটা অংশ বাংলাদেশী। যার অর্থ হচ্ছে আমাদের বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সারই অত্যন্ত সাধারন ও সস্তা মানের কাজ করেন। অর্থাৎ খুব অল্প সঙ্খক ছাড়া বেশিরভাগ লোকের ই তেমন কোন স্কিল নেই। সরকারী পর্যায়েও স্কিল ডেভেলপমেন্টের তেমন ভাল কোন উদ্যোগ চোখে পড়ে না। বিভিন্ন প্রাইভেট ট্রেনিং সেন্টার গুলো যে কাজ করছে তাও খুবই ব্যাসিক পর্যায়ের।
২০১২-২০১৩ সালে আমি নিজেও ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে যুক্ত ছিলাম এবং খুব ব্যসিক পর্যায়ের কিছু কাজ করতাম যাতে ছাত্রাবস্থায় নিজের খরচ মোটামুটি চলে যেত। আমি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে ধারনা পাই আমার এক বন্ধুর কাছে। সেও তার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিনিয়র ভাইয়ের কাছে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করতে হয় তার ধারনা পায়। আমার কাছ থেকেও আমার কয়েক বন্ধু ও ছোট ভাই ফ্রিল্যান্সিং এর প্রাথমিক ধারনা পায়। বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং এভাবেই ব্যাক্তি উদ্যোগে এসেছে এবং বড় হয়েছে। তার পর সরকারের নজর পড়েছে।
আমাদের এই গ্রুপের বেশিরভাগ ই এখন আর ফ্রিল্যান্সিং সাথে যুক্ত না থাকলেও দুজন এটাকে ফুল টাইম প্রফেশন হিসেবে নিয়েছে। তারা এখন মোটামুটি- ২০০০-৪০০০ ডলার মাসে আয় করে। আমাদের বা আমার পরিচিত কেউই সরাসরি সরকারি কোন সহযোগিতা পায় নি। বরং ব্যক্তি উদ্যোগে স্কিল অর্জন করেছে। অবশ্য সরকার কাউকে ধরে তার ভেতর স্কিল দিয়েও দেবে না। সরকার পারে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে।
আমাদের সরকার কি কি করেছে?
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন যে কাজটি সরকার করেছে তা হচ্ছে কম্পিউটার সামগ্রির সহজলভ্যতা।
ইন্টারনেটের দাম কমানো।
গ্রাম গঞ্জে পর্যন্ত ৩জি নিয়ে যাওয়া।
ফ্রিল্যান্সিং এর আয়ের উপর ইন্সেন্টিভ একটি ভাল উদ্যোগ। তবে এখনো এর মধ্যে অনেক কনফিউশান আছে। সবাই এই সুবিধা পাচ্ছে না।
কমদামে দোয়েল ল্যাপটপ একটা ভাল উদ্যোগ ছিল তবে ভাল পরিকল্পনার অভাবে তা নষ্ট হয়।
যে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি করতে পারত কিন্তু করে নিঃ
ইন্টারনেট স্পিড, বাংলাদেশে ইন্টারনেটের স্পিড পৃথীবিতে কমের মধ্যে অন্যতম।
ইন্টারনেটের দাম কমলেও তা অন্যান্য দেশ এবং আমাদের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে এখনো অনেক বেশি।
দুর্বল একাডেমিক সিলেবাস, দুর্বল শিক্ষা ও পরিক্ষন পদ্ধতির উন্নয়ন। (নবম শ্রেনীতে আমি খুব আগ্রহ করে কম্পিউটার বিষয় নিয়েছিলাম, কিছু থিওরি ছাড়া কিছুই শিখানো হয় নি। গ্রামের স্কুলের এখনো একই অবস্থা। অনেক কম্পিউটার শিক্ষক কম্পিউটার অন অফ ছাড়া এখনো কিছুই জানেন না)
উপযুক্ত ট্রেইনিংয়ের ব্যবস্থা করা।
ভাল, সহজ ও সস্তা পেমেট সিস্টেম নিয়ে আসা।
ফ্রিল্যান্সিং এর ব্যপারে প্রচারনা ও উদবুদ্ধ করা।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০২২ দুপুর ১:৫৬