somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম বিদেশ ভ্রমন ও বিড়ম্বনাঃ ২

১১ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রথম বিদেশ ভ্রমন ও বিড়ম্বনাঃ ১

শিলিগুড়ির ট্রেনের টিকিট কেটে বের হতে প্রায় তিনটা। ট্রেন হাড়বে সারে আটটায়। পাশে একটা হোটেল খুজে পেলাম ফ্রেশ হওয়া এবং কিছু সময় রেষ্ট নেয়ার জন্য। আমরা তিন ঘন্টা থাকব হোটেলে, তাই ভাড়ায় কিছুটা ছাড় চাইলাম। কিন্তু সে কোন ছাড় দেবে না। পুরো দিনের ভাড়া দিতে হবে ১০০০ রুপি। চলার মত আর শক্তি ছিল না তাই নিয়ে নিলাম। আমাদের পাসপোর্ট রেখে দিল, বিশ্বাস করল না। তাই কিছুটা ভয়ে ছিলাম। যাই হোক সন্ধায় বের হলাম হোটেল ছেড়ে। হোটেল ওয়ালা ৭০০ রাখল, ৩০০ ডিসকাউন্ট দিল দয়া করে। আমরা একটা মুসলিম রেষ্টুরেন্ট খুজে ঢুকে খাওয়া সারলাম। দুপুরে হাইওয়ের ধাবায় যা খেয়েছিলাম তা ছিল পৃথিবীর জঘন্যতম খাবার।

খাওয়া সেরে বের হলাম। মাটির কাপে চা খেয়ে সিগারেট ফুকতে ফুকতে ষ্টেশনের সামনে এলাম। আমাদের ঘড়িতে তখন ৮ঃ ২০। ভাবছি আমাদের তো বাংলাদশি টাইম মোবাইলে, লোকাল টাইম এখন ৭ঃ ৫০, হাতে সময় আছে তাই নিশ্চিন্ত।। আগেই শুনেছিলাম এদেশে যেখানে সেখানে সিগারেট ফুকলে ধরা খেতে হবে। তাই সাবধানী ছিলাম। ষ্টেশনের সামনে এসে সিগারেটটা ফেলে দিলাম। ছবিতে ষ্টেশনের সামনে যে খুটিগুলি পোতা আছে তার বাইরে থেকে সিগারেট বাডটা ছুড়ে ফেললাম। কিন্তু সেটা গিয়ে পড়ল খুটির ভিতরে। আমরা নিশ্চিন্ত মনে ষ্টেশনের সিড়ি বেয়ে মূল ভবনে উঠলাম।

এমন সময় পেছন থেকে ডাক পড়ল ও দাদা শুনুন। ও দাদা। আমরা পিছনে ঘুরলাম। এক গার্ড ডাকছে, আমরা দাড়ালাম। সে এসে বলল দাদা স্টেশনে সিগারেট খাওয়া মানা। আমি বললাম তো? সে বলল আপনি খেয়েছেন, এখন ফাইন দিতে হবে। আমি বললাম আমি তো ষ্টেশনের বাইরে খেয়েছি। সে দেখালো ওই যে সিগারেট বাড ফেলেছেন ভিতরে। আমি আবার বললাম ওটা তো বাইরেই, সে বলল ওই খুটির মধ্যে মানেই ভিতরে। পড়লাম বেকায়দায় এমন সময় স্টেশনে লাগানো একটা ঘড়িতে চোখ পড়তে দেখি সময় ৮ঃ২০। আমি ভাবছি হায় হায় আধ ঘন্টা সময় এগিয়ে এলো কিভাবে? আমি গার্ড কে জিজ্ঞেস করলাম এখন সময় কত? সে ও একই সময় বলল।

আমি বললাম আমি শিলিগুড়ির ট্রেন সাড়ে আটটায়। আমার দেড়ি হয়ে যাচ্ছে যেতে দাও। সে বলে আগে ফাইন দিন, জলদি দিন ট্রেন ছেড়ে দেবে। এমন সময় আমি আমার কলিগ কে আর খুজে পাই না। গার্ডকে বলি ভাই আমি বিদেশী, জানতাম না, আর কোথাও লেখাও নেই, সে দূরে দেয়ালে লাগানো আমাকে A4 সাইজের একটা কাগজ দেখিয়ে বলে ওখানে লেখা আছে। সে বলে ছাড়া যাবে না ফাইন না দিলে, জলদি বের করুণ ট্রেন ছেড়ে দেবে। অগথ্যা জিজ্ঞেস করি কত? সে বলে ৩০০ রুপি, আমার তো কপালে চোখ। আমি বলি ভাই কমিয়ে রাখ, সে বলে তাহলে অফিসে চলেন। আমি রাজি হলাম। আমরা দুজন দৌড়ে একটা রুমে ঢুকলাম। সেখানেও দেখি বেশ কিছু মানুষ স্কালের মত আটকে রেখেছে, ভিতরে লোহার শিকের একটা গারদ, তার মধ্যেও গাদাগাদি করা আরো কিছু লোক, তাদের কারো গায়ে ই জামা নেই।

গার্ড আমাকে নিয়ে এসে বলে এর ৩০০ ফাইন, আমি তো হা, আমি বলই অফিসে এলে না কমার কথা? সে বলে কোন কম নেই, এমন সময় আমার ট্রেনের আর ২/১ মিনিট আছে, আমি ৩০০ রুপি দিয়ে দৌড়ে আবার গেটের কাছে আসি, আমার কলিগ কে খুজি, পাই না, ১ মিনিট, ২ মিনিট কোন খবর নাই। হঠাত পেছন থেকে এসে হাজির। বললাম ভাই ট্রেনের সময় হয়ে গেছে, চলেন। আমরা দৌড়ে প্লাট ফর্মে গিয়ে দেখি ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে, লোকজনকে জিজ্ঞেস করে কনফার্ম হলাম এটাই ট্রেন। তারপর কোন রকম দৌড়ে ট্রেনে উঠলাম।

ট্রেনে উঠে জিজ্ঞেস করলাম ভাই কই ছিলেন আপনি, সে বলে ভাই সকালে যা ঘটছে, আবার যদি দুইজনই ধরা খাই তো কে উদ্ধার করবে, তাই আমি সটকে পরেছিলাম।

এদিকে আমি ৩০০ রুপি ফাইন দিয়ে ব্যক্কেল।

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:১২
৯টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×