এক সময় প্রায় প্রতিদিন বিকেলে রেললাইনে হাটতে যেতাম। রেল লাইনের এক ধারে বিশাল জলাধার ছিল। মুক্ত তাজা হাওয়া গায়ে মাখলে শরীর মন দুটোই সজীব হত। তার পর সেই জালাধার আস্তে আস্তে ভরাট হয়ে গেল। সেখানে এখন কুড়িল ফ্লাইওভার। এখন রেল লাইনে আর হাটতে যাওয়া হয় না। তবুও মাঝে মাঝে যাই, আগের দিন গুলির কথা ভাবি।
আজ বিকেলে অনেক দিন পরে ওইদিকে গেলাম। দেখলাম আগে যেখানে দুটি রেল ট্র্যাক ছিল, সেখানে আরো দুটি নতুল লাইন বসছে। যা চলমান উন্নয়নের অংশ। একটু কাছে গিয়ে দেখি লাইনের উপর একটা ট্রাক। যার দেখতে ঠিক আমাদের দেশের ট্রাকের মত না। রেল ট্র্যাকের উপর ট্রাক দেখে একটু অবাক হলাম। আরো কাছে গিয়ে দেখতে পেলাম ট্রাকের চাকা খুলে রেলের চাকা লাগিয়ে সেটু রেল ট্র্যাকে চলার উপযোগী করে মডিফাই করা হয়েছে।
তবে আশ্চর্য হলাম এটা দেখে যে এটা একটা ভারতীয় ট্রাক। মানে এই রেল লাইন বসানোর কাজটা কোন ভারতীয় কম্পানী করছে। দুঃখ পেলাম এই ভেবে যে ইঞ্জিনিয়ারিং এর এই সামান্য কাজটাও ভারতীয়দের দিয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা কি একটা রেল ট্র্যাক ও বসাতে পারি না? এমন লোক কি আমাদের দেশে নেই? আমাদের রেলওয়ে কি এই কাজ আগে কখনো করেনি?
চীনারাও আমাদের দেশে অনেক কাজ করে। চীনারা যখন আমাদের দেশে কাজ করতে আসে, তখন সব সরঞ্জাম ও ফোরম্যান পদমর্জাদার কর্মী পর্যন্ত তারা নিয়ে আসে। কিন্তু ভারতীয় কোন কম্পানী যখন আসে, তখন তারা লেবার পর্যন্ত নিতে আসে। একে তো আমাদের দেশের মানুষের ই পর্যাপ্ত কাজ নেই। এই সব কাজ যখন বিদেশীরা নিয়ে নিচ্ছে, এই অভাবের মধ্যে যখন তারা আমাদের ডলার নিয়ে নিচ্ছে, শুধু মাত্র আমাদের নীতি নির্ধারক দের ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থে, এর চেয়ে হতাশাজকন জাতীর জন্য আর কি হত পারে।
ঋণ করে আনা টাকা আবার সব বিদেশীদের দিয়ে দিচ্ছি। সব সরঞ্জাম ও নিশ্চয়ই তারাই সরবরাহ করছে। লাভের গূড় সব ওদের পেটেই যাচ্ছে। আর আমাদের রেল তো লোকসানেই চলবে।