somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের নিরাপত্তার আয়োজন কতটুকু?

১৪ ই জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ভারত পাকিস্তান ও ইরান ইজরাইল সংঘাত যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার সামনে নিয়ে এসেছে। প্রথাগত সমরাস্ত্র আজ নতুন প্রযুক্তির কাছে খেলনায় পরিনত হয়েছে। বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান ও ঐতিহাসিক ভাবে প্রাপ্ত দুই বৈরি প্রতিবেশির মাঝে বর্তমান বাংলাদেশের নিরাপত্তা কোন স্তরে রয়েছে?

সত্যি বলতে ছোট বাংলাদেশ কখনো এই প্রতিবেশিদের প্রতি আক্রমনাত্মক হবে না, সক্ষমতা বা প্রয়োজন কোনটিই নেই। কিন্তু বৈশ্বিক প্রক্ষাপটে প্রয়োজনীয় অধিকার ও আত্মমর্যাদা নিয়ে টিকে থাকার জন্য নূন্যতম প্রতিরোধ সক্ষমতা আমাদের থাকা প্রয়োজন। সেই প্রক্ষাপটে আমাদের অবস্থান কোথায়?

সম্প্রতি সংগঠিত হওয়া দুটি সংঘাত পর্যালোচনা করলে ব্যবহৃত প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়।

ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে উভয় পক্ষ ব্যবহার করেছে মূলত এয়ার টু গ্রাউন্ড মিসাইল, গ্রাউন্ড টু গ্রাউন্ড মিসাইল। ড্রোন, ড্রোন সোয়ার্ম। পাকিস্তান ভারতীয় জেট ভুপাতিত করেছে এয়ার টু এয়ার বি ভি আর মিসাইল দিয়ে। যার রেঞ্জ ৩০০ কিলোমিটার। ভারতের কাছে এত দূর পাল্লার এয়ার টু এয়ার মিসাইল নেই। এয়ার টু গ্রাউন্ড মিসাইলের স্পেশালিটি হচ্ছে এটি লঞ্চ করার পর ট্র্যাক করার জন্য সময় খুব কম পাওয়া যায়। তাই সহজে ইন্টারসেপ্ট করা যায় না। পাকিস্তান ও ভারত এ জাতীয় মিসাইল গুলি ইন্টারসেপ্ট করতে পারে নি। উভয় পক্ষই ব্যলেষ্টিক মিসাইল ব্যবহার করেছে। সেগুলিও ইন্টারসেপ্ট করা সহজ নয়। এছাড়াও আক্রমন নিখুত করার জন্য পাকিস্তান চিনের জিপিএস ব্যবহার করেছে। চিনের স্যাটেলাইট থেকে লাইভ ইমেজ পেয়েছে যা থেকে ভারতের গতিবিধি জানতে পেরেছে। পাকিস্তান আক্রমনে আরো ব্যবহার করেছে আর্লি ওয়ার্নিং বিমান যা পাকিস্তানের ফাইটার বিমানের রাডারের রেঞ্জ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। পাকিস্তান ভারতের একটি এস ৪০০ সিস্টেম ধংশ করেছে। এই এয়ার ডিফেন্স রাডারের অবস্থান খুজে পেতে ব্যবহার করেছে ওয়েপন লোকেটর।

এয়ার ডিফেন্সের জন্য ভারত ব্যবহার করেছে রাশিয়ার এস ৪০০ এবং নিজস্ব উতপাদিত এয়ার ডিফেন্স আকাশ মিসাইল। পাকিস্তান ব্যবহার করেছে চাইনিজ লং রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স। এছাড়াও ব্যবহৃত হয়েছে রাডার ও ড্রোন জ্যামার।


ইরান ইজরাইল সংঘাত টেকনোলজির মাপকাটিতে আরো এগিয়ে। এই যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে ষ্টেলথ বিমান, হাইপারসনিক মিসাইল, সুইসাইড ড্রোন, স্যাটেলাইট নেভিগেশন ইত্যাদি। এছাড়াও ছিল সাইবার এটাক।

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের নিরাপত্তার আয়োজন কতটুকু? সত্যি বলতে আমাদের কোন তেমন কোন প্রস্তুতিই নেই। বিক্ষাত চাইনিজ সমরবিদ সানজু লিখেছিলেন দেয়াল ঘেরা কোনো শহরে আক্রমন কোরো না। বর্তমান সময়ে আর দেয়াল তোলা হয় না। বর্তমান সময়ে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। আকাশ যার নিয়ন্ত্রনে, বিজয় তার।

আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষার অবস্থা খুব শোচনীয়। আমাদের কিছু সর্ট রেঞ্জ আকাশ প্রতিরক্ষা সিষ্টেম আছে, যা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ন স্থাপনার নিরাপত্তায় নিয়োজিত। বাকি পুরো দেশ সত্রুর আক্রমনের জন্য খোলা। আর আছে কিছু সোল্ডার লঞ্চড ম্যানপ্যাড ও এন্টি এয়ারক্রাফট গান। কোনো মিডিয়াম বা লং রেঞ্জ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই। ড্রোন নিয়ন্ত্রনে কোন জ্যামার নেই। পর্যাপ্ত্ রাডার সিষ্টেম নেই।

পৃথিবীর যখন পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধ বিমান ছুটি দেয়ার সময় হয়ে এসেছ, আমরা তখন তৃতীয় প্রজন্ম ও ৬ টা চতুর্থ প্রজন্মের ফাইটার বিমান ব্যবহার করি। সংখ্যার ব্যপারে আর নাই বলি। আমাদের কোন আর্লী ওয়ার্নিং বিমান নেই। পর্যাপ্ত রাডার, জ্যামার, ইলেক্ট্রিনিক্স অয়ারফেয়ার সিষ্টেম নেই।

আমাদের কিছু সর্ট রেঞ্জ মিসাইল আছে যা কিনে আনা। কেনা মিসাইল দিয়ে আর যুদ্ধ করা সম্ভব নয়। নিজের উৎপাদন ব্যবস্থা থাকা চাই। বর্তমানে যেহেতু বিমান নিয়ে শত্রুর আকাশে হানা দেয়া অনেক ঝুকিপূর্ন হয়ে গেছে, সেহেতু পর্যাপ্ত মিসাইল ও ড্রোন লাগবে।

নূন্যতম সক্ষমতা অর্জনের জন্য আমাদের মিনিমাম ৩৬ টি ৪.৫ জেনারেশনের বিমান সংগ্রহ করতে হবে। নিজস্ব ক্ষেপনাস্ত্র উৎপাদন ব্যবস্থা থাকতে হবে। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বাইরে থেকে কিনলেও তার ক্ষেপনাস্ত্র দেশেই উৎপাদন করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ড্রোন উৎপাদন করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের আর্লি ওয়ার্নিং রাডার ও ওয়েপন লোকেটর সংগ্রহ করতে হবে। সমান ভাবে নৌবাহীনিকেও লং রেঞ্জের মিসাইল দিতে হবে। ডিপ সি ক্যাপাবল জাহাজ দেশেই বানানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। আগামীর যুদ্ধে পদাতিক বাহীনির ব্যবহার সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে। সব কিছুই হবে প্রযুক্তিনির্ভর।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৭
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×