ধরুন পৃথিবীর তিনটি ভূ-খন্ড বাংলাদেশের তিনটি ধর্মের সাধু ব্যক্তিদের জন্য বেছে নেয়া হলো- একটি হিন্দুদের, আরেকটি খ্রীষ্টানদের এবং অপরটি মুসলমানদের সাধু ব্যক্তিদের জন্য । এর পরে এক একটা ভূ-খন্ড এক এক জাতের সাধু ব্যক্তিদের রেখে আসুন, এর কিছুদিন পর ঐ ভূখন্ডগুলি ভিজিট করে আসুন, দেখুন কোনটার কি অবস্থা হলো ।
হিন্দু সাধুদের ভূ-খন্ডে গেলে সবকিছু দেখে শুনে মনে হবে যেন ৫-৬ হাজার বছর পূর্বের দুনিয়ায় এসে পড়েছি। অর্থাৎ ৫-৬ হাজার বছর পূর্বে বনে জংগলে বসে যে সব মুনি-ঋষি তপজপ করতেন সেইখানে এসে পড়েছি। সেখানে দেখা যাবে কদুর বস হাতে বৈরাগীদের আর দেখা যাবে সন্যাসীদের। তাঁদের বেশির ভাগ দেখা যাবে শ্মশান ঘাটে । আর কোলকাতার কালিঘাট মন্দিরের সামনে গায়ে ছাই মাখানো যেসব উলংগ সাধু আছে তাঁদেরকেও সেখানে দেখতে পাওয়া যাবে । যা দেখে মনে হবে যেন সভ্যতার কোনো ছোঁয়া তাঁরা পায়নি ।
২নং ভূ-খন্ড যেখানে খ্রষ্টান সাধু ব্যক্তিদের বাস করেন সেখানে ৫০ বছর পর একটি লোক ও পাবেন না, কারন তাঁদের যারা সাধু তারা কেউ বিবাহিত নন । কাজেই ৫০ বছর পর নতুন কোনো সন্তান সন্তুতিও সেখানে জন্ম নেবে না। কাজেই সে ভূ-খন্ড জনশুন্য হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না । আর পৃথিবীর সব খ্রীস্টান যদি সাধু হয়ে যায় তবে ৫০ বছর পর এ পৃথিবীতে আর একটি খ্রীস্টান ও পাওয়া যাবে না । এ কারণেই তাদের ধর্মে সবার ধার্মিক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই । আর একটি কথাই কিন্তু একটি মহা সত্য কথা, তা হচ্ছে খ্রীস্টানদের কোনো সাধুই সাধুর ব্যটা নয়, কারণ তাঁর পিতা সাধু হলে তো বিয়েই করতেন না । তাঁদের যত সাধু সবাই কিন্তু সাধারণ লোকের ছেলে । আমি বলি না তারা কোনো খারাপ লোকের ছেলে । তবে তারা যে, কোনো সাধু ব্যক্তির সন্তান নন, এটা তাদের ধর্মেরই বিধান । এটা তাদের নামে কোনো গালাগালি ও নয় কুৎসাও নয়। যা বাস্তব শুধু তাই বলছি। হ্যাঁ তবে একটি কথা বলা দরকার তা হচ্ছে এই যে যদি ও সব নবীই বিবাহ করেছেন একমাত্র ঈসা (আঃ) ছাড়া। আর ঈসা (আঃ) এর অনুগত অনুসারী হওয়ার জন্য খ্রীস্টান সাধুগন বিবাহ করেন না । কিন্তু এর ভিতরে এমন একটি মহাসত্য লুক্কায়িত আছে যা হয়তো খ্রীস্টান সাধুগন চিন্তা করেন না । তা হচ্ছে এই যে, হযরত ঈসা (আঃ) ছিলেন বিনা পিতায় সন্তান তাই হয়তো পুরুষ সূলভ কোনো পৌরুষত্ব জন্মসূত্রে তিনি লাভ করেননি বিবাহের অযোগ্য ছিলেন । কিন্তু তাই বলে তিনি নবী হিসেবে বিবাহ নিষেধ করেননি ।
৩য় ভূ-খন্ডে যেখানে মুসলমান সাধুদের রেখে আসা হয়েছিল সেখানে গেলে দেখা যাবে একটা বেহেশতি রাষ্ট্র সেখানে কায়েম হয়ে গেছে । মুসলমানদের সাধু ব্যক্তি যেহেতু প্রতিটি বিভাগেই আছে তাই মুসলমান সাধুদের বেছে নিয়ে সেখানে যেমন পুরুষ যাবে যেখানে মেয়ে ও যাবে । সেখানে যেমন আলেম মৌলভী যাবেন তেমন সেখানে কুলি মজুরও যাবে। সেখানে প্রত্যেক বিভাগের কর্মচারী থাকবেন । পুলিশ মিলিটারীও থাকবেন, সব ধরনের কারিগর ও থাকবেন এবং ব্যবসায়ী ও থাকবেন । কারণ মুসলমানদের সুফি মুত্তাকীন পরহেজগার লোক সব ক্ষেত্রেই আছে । আর এই ধরনের সৎ লোকগুলিই যদি কোনো এক ভূ-খন্ড একত্রিত হতে পারেন তবে সেখানে যে বেহেশতি রাষ্ট্র কায়েম হবে তা না বললে ও বুঝতে কার ও কষ্ট হওয়ার কথা নয়।
এবার চিন্তা করুন যে ধর্মের সাধু ব্যক্তিদের দ্বারা একটা দেশ ছলতে পারে না : সে ধর্ম কি করে আল্লাহর মনোনীত ধর্ম হতে পারে? এই যুক্তিতে খ্রীস্টান ধর্ম যে যুক্তিগ্রায্য নয় তা প্রমাণ হলো । অতঃপর হিন্দু সাধুদের বেলায় দেখুন তাদের সাধুদের ভূ-খন্ডকে কেউ কি সভ্য লোকের ভূ-খন্ড হিসেবে স্বীকার করবে? হ্যাঁ তবে যারা যুক্তি মানতে নারাজ তাদের কথা ভিন্ন ।
খন্দকার আবুল খায়ের রচিত মহা সত্যের ডাক বই হতে নেয়া ।