পাহাড়ের নিচে মায়াবি সবুজ প্রান্তর উচুনিচু টিলা পাহাড় সেই সাথে রয়েছে সুসাব্দু খাটি মিষ্টান্নের সমাহার এই সবই শেরপুর জেলা কে করেছে প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে আদর্শ স্থান । তাহলে আসুন দেরি না করে দেখেনেই শেরপুর জেলায় যা না দেখলেই নয় ঃ-

মধুটিলা ইকোপার্কে:
ভারত সীমান্তসংলগ্ন শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের মধুটিলায় গড়েউঠেছে ইকো পার্ক ।চারদিকে সবুজে ঘেরা এই পার্কে রয়েছে ছোট ছোট অনেক টিলা পাহাড়। মুটামুটি নিরিবিলি, অনেক রাস্তায় মানুষের পা পরে না বলে সবুজ হয়ে রয়েছে ।
পাহাড়ের চূড়ায় সাইট ভিউ টাওয়ারে উঠলেই চোখ জুড়িয়ে যায় সীমান্ত পেরিয়ে উঁচু উঁচু পাহাড় আর সবুজ অরণ্যের মনোরম দৃশ্য দেখে। দূরের অরণ্যকে একটু কুয়াশাচ্ছন্ন মনে হলেও এর সৌন্দর্যের কোনো কমতি নেই। গারো পাহাড়ের আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু পথ পেরিয়ে যত দূর এগোনো যায়, ততই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমারোহ।
এখানে ভ্রমণপ্রিয়দের দিনের বেলায় ব্যবহারের জন্য রয়েছে পাহাড়ের চূড়ায় মহুয়া রেস্টহাউস। এটি ব্যবহার করতে চাইলে ময়মনসিংহ অথবা শেরপুর বন বিভাগের অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।কিন্তু এতে রাতে থাকার পারমিশন নাই । ৪ টা রুম আছে সারাদিনের জন্য ৪০০০/টাকা নেয় । এ ছাড়া এখানে রয়েছে ডিসপ্লে মডেল, তথ্যকেন্দ্র, গাড়ি পার্কিং জোন, ক্যানটিন, মিনি চিড়িয়াখানা। ঔষধি ও সৌন্দর্যবর্ধক প্রজাতির বৃক্ষ, মৌসুমি ফুলসহ বিভিন্ন রঙের গোলাপের বাগান। রয়েছে বেশ কয়েকটি পিকনিক স্পটও। পার্কটিতে জীববৈচিত্র্য ও প্রাণীর সমাহারও চোখে পড়বে।

যাতায়াতঃ ঢাকা > শেরপুর > নলিতাবাড়ি>নন্নী বাজার>মধুটিলা ইকো পার্ক।ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে সরাসরি নালিতাবাড়ী পর্যন্ত গেটলক সার্ভিস রয়েছে।অথবা শেরপুর ড্রিমল্যান্ড বাসে এসে শেরপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী বাজার পর্যন্ত লোকাল বাস সার্ভিস রয়েছে। নন্নী বাজার থেকে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ভাড়ায় পাওয়া যায় মধুটিলা ইকোপার্ক ।
মধুটিলা ইকোপার্কে একটা রেস্টহাউজ আছে নামঃ মহুয়া ,
কর্ণঝোড়া/ রাজার পাহাড়ঃ
দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে বাসে বা যে কোনো যানবাহনে আসা যায় শেরপুর শহরে। এখান থেকে মাত্র ৩৪ কিলোমিটার দূরে শ্রীবরদীর কর্ণঝোরা বাজার। বাস, টেম্পুসহ যে কোনো যানবাহনে আসা যায় মনোমুগ্ধকর নয়ানিভিরাম স্থান রাজার পাহাড় থেকে বাবেলাকোনায়। পাশেই রয়েছে অবসর কেন্দ্র। রাত হলে সেখানে থাকার জন্য রয়েছে নিরাপত্তাবেষ্টিত আবাসিক ভবন। কম খরচে ,কম সময়ে এ গারো পাহাড় আপনাকে দেবে অনাবিল আনন্দ।
ছোট নদী ঢেউফা। এ নদীর শান্ত শীতল জলের স্রোতধারা এক টানা বয়ে চলেছে। সহজ সরল এ নদীর বুকে জেগে উঠা চরের বালু চকচক করছে। এর পাশেই বিশাল উঁচু টিলা রাজার পাহাড়। নদী আর সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি রাজার পাহাড় যেন ঐশ্বরিক স্বপ্নপুরি। এর কূল ঘেঁষে নানা কারুকার্যে সাজানো উপজাতি এলাকা বাবেলাকোনা। এ গ্রাম যেন যোগ করেছে সৌন্দর্যের নতুন মাত্রা। ঢেউফা নদীর দু’পাশে সবুজ বৃক্ষ আচ্ছাদিত অসংখ্য উঁচু-নিচু পাহাড়। গভীর মমতা আর ভালবাসায় গড়া উপজাতিদের বর্ণিল জীবনধারা। অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মিলিত আহ্বান।সৌন্দর্যময়ী এ স্থানটি শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের মেঘালয়ের পাদদেশে ,অবারিত সবুজের যেন মহা সমারোহ। গারো পাহাড় কত যে মনোমুগ্ধকর না দেখলে হয়ত বিশ্বাস হবেনা। যারা একবার দেখেছেন তারাই অনুভব করতে পেরেছেন।
কিংবদন্তি রয়েছে, প্রচীনকালে এক রাজার বাসস্থান ছিল এখানে। সে অনুসারে এ পাহাড়ের নাম হয় রাজার পাহাড়। কিন্তু এ পাহাড়ের আগের সৌন্দর্য এখন আর নেই। তবে এর বৈশিষ্ট প্রতিবেশী পাহাড়গুলো রয়ে গিয়েছে। গারো পাহাড়ে যতগুলো পাহাড় রয়েছে তার মধ্যে এটির উচ্চতা সবচেয়ে বেশি। এ পাহাড়ের চূড়ায় শতাধিক হেক্টর জমির সমতল বিরান ভূমি। এখান থেকে মেঘালয় যেন আরো কাছে মনে হয়। এর চূড়া সবুজ আর নীলের সংমিশ্রণে যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। যেন আকাশ ছোঁয়া বিশাল পাহাড়ের নৈসর্গিক দৃশ্য। এটি মনকে করে আবেগতাড়িত।
বাবেলাকোনা:
রাজার পাহাড় ঘেঁষা জনপদ বাবেলাকোনা। এখানে অসংখ্য উঁচু-নিচু টিলায় ঘেরা এক অন্যবদ্য গ্রাম। প্রাচীনকাল থেকে এখানে গড়ে ওঠেছে জনবসতি। ঝোপ-জঙ্গলে আবৃত্ত গ্রামটি কালের আবর্তে পরিবর্তিত। প্রাকৃতিক শোভামন্ডিত সবার কাছে পরিচিত রাজার পাহাড় থেকে বাবেলাকোনা।বাবেলাকোনায় গারো, হাজং, কোচ অধ্যুষিত উপজাতিদের সংস্কৃতি ভিন্ন মাত্রায় বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবনধারা। যেন প্রাকৃতিক বিরুপতা। এ যেন জঙ্গল আর জন্তু-জানোয়ারের নৈসর্গিক মিতালি। জনপদটির চলমান জীবন সংগ্রামের বিরল দৃশ্য। উপজাতিদের সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও চর্চার কেন্দ্রগুলোও যেন আলাদা আকর্ষণ। এসব হচ্ছে বাবেলাকেনা কালচারাল একাডেমি, ট্রাইবাল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশন অফিস (টিডব্লিও), জাদুঘর, লাইব্রেরি, গবেষণা বিভাগ, মিলনায়তন এর অন্যতম নিদর্শন। এখান থেকে উপজাতিদের সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা যায়। মিশনারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হচ্ছে এখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বর্ষাকালে ঢেউফা নদীর জোয়ারে কানায় কানায় ভরে উঠে। কিন্তু দিনের শেষে ভাটা পড়ে। শুকিয়ে যায় এ নদীর পানি। তবে খরস্রোতা এ নদীর পানির গতি কখনোই কমেনা। সারা বছরই হেঁটে পার হওয়া যায়। ক’বছর ধরে এ নদীর দু’পাশে দুটি ব্রীজ নির্মিত হওয়ায় এখন আর নদীতে নামতে হয়না। এর বুক জুড়ে বিশাল বালুচর যা নির্মাণ কাজে ব্যবহারের জন্য শহরে নিয়ে যাচ্ছে। এ যেন রাজার পাহাড় থেকে বাবেলাকোনা কুল ঘেষাঁ বিকল্প সমুদ্র সৈকত।
বাবেলাকোনার উপজাতিদের কারুকার্য মন্ডিত ধর্মীয় গীর্জা, মন্দিরসহ অসংখ্য প্রাকৃতিক নিদর্শনের সমাহার। উপজাতিদের চালচলন, কথাবার্তা ও জীবনপ্রণালী দর্শনার্থীদের অাকৃষ্ট করে। তাদের সংস্কৃতিতে রয়েছে ভিন্নতা। ওদের জীবন যেন প্রবাহিত হয় ভিন্ন ধারায়। এখানে রয়েছে ওয়ার্ল্ড ভিশন, বিট অফিস, বিজিবি ক্যাম্প এবং রাবার বাগান।

গজনী অবকাশ
শেরপুর থেকে আনুমানিক দূরত্ব = ৩০ কি:মি: বাসভাড়া= ৫০ টাকা। সিএনজি ভাড়া = ২৫০ টাকা। এখানে আসার জন্য সড়ক পথে যাতায়ত খুব সহজ। গজনী অবকাশ পর্যন্ত রয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের মসৃণ পিচঢালা পথ। শেরপুর থেকে লোকাল বাস,টেম্পু, সিএনজি অথবা রিক্সায় গজনী অবকাশ কেন্দ্রে যাওয়া যায়।
পাহাড়ের ঢালে, গায়ে অথবা পাহাড় চূড়ায় সারি সারি শাল, সেগুন, মহুয়া, গজারী, আকাশমনি, ইউকেলিপটাস, মিলজিয়ামসহ আরো নাম না জানা কত শত পাহাড়ি গাছ, বনফুল ও ছায়াঢাকা বিন্যাস যেন বিশাল ক্যানভাসে সুনিপুণ শিল্পীর রঙ-তুলির আঁচড়। শিল্পীর এ আঁচড় খুব সহজেই প্রকৃতিপ্রেমীদের হৃদয়ে দোলা দিয়ে যেতে পারে বলেই প্রতি বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার প্রকৃতিপ্রেমী নারী-পুরুষ, শিশু, বয়োবৃদ্ধসহ সবাই ছুটে আসেন শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী গারো পাহাড়ের মন ছুঁয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করতে।
প্রবেশ ফি:গজনী অবকাশ কেন্দ্রে গাড়ী প্রবেশের জন্য উপজেলা পরিষদ চেকপোষ্ট থেকে বাস-কোচ, ট্রাক-৩ শ টাকা। মাইক্রোবাস,পিকআপ, মেক্সি-১শ ৫০টাকা। জিপ,কার,টেম্পু-১শ টাকা এবং সিএনজি-৫০টাকা দিয়ে গেটপাস নিতে হবে। অন্যথায় গজনী অবকাশ কেন্দ্রে গাড়ী ঢুকাতে পারবেন না। তাছাড়া সীমান্ত পথে বিজিবি নকশী ক্যাম্পে সে পাস দেখাতে হবে। আর অবকাশ কেন্দ্রে টাওয়ারের জন্য জনপ্রতি ৫ টাকা, শিশু পার্কের জন্য ১০টাক, প্যাডেল বোড ২০মিনিটে ৬০টাকা, পানসিতরী নৌকায় জনপ্রতি-১০টাকা এবং পাতালপুরি ড্রাগন ট্যানেলে জন প্রতি ৫টাকা প্রদর্শনী ফি রয়েছে।
কলা বাগান:
সবুজের সাথে মিতালি করতে চাইলে চলে আসুন শেরপুরের অর্কিড পর্যটন প্রকল্পে। শেরপুর জেলা শহরের মধ্যেই ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে অর্কিড পর্যটন প্রকল্প। এ প্রকল্পের চারিদিকে রয়েছে সারি সারি দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির সবুজ গাছ, মাঠ জুড়ে রয়েছে সবুজ ঘাস আর সান বাঁধানো পুকুর। পুকুরের চারপাশে মাছ খেতে বসে থাকে সাদা-সাদা বক। সবুজ বাতায়নের ওই অর্কিড প্রাঙ্গণের খাঁচায় খেলা করছে বানর, টার্কিছ, খরগোশসহ দেশীয় বিভিন্ন জীবজন্তু। প্রিয়জন অথবা বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে বসে আড্ডা দেয়ার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি ছাতা এবং ছাতার নিচে রয়েছে বসার জন্য চেয়ার। চা, কফি ও সেভেন-আপ বা কোকাকোলা পানের জন্য রয়েছে ছনের তৈরী সুদৃশ্য ক্যান্টিন এবং রেস্ট হাউজ। এ যেন শহরের মধ্যে এক খন্ড সবুজের লীলা ভুমি। পরিবার-পরিজন নিয়ে হাতের কাছে বেড়ানো বা শহুরে জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে চমৎকার একটি পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র এই ‘অর্কিড পর্যটন কেন্দ্র’।শেরপুর জেলা শহরের পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের শেরপুর-ঝিনাইগাতী ফিডার রোডর সংলগ্ন কান্দাপাড়া মহল্লার স্থানীয় চাতাল ব্যাবসায়ী ও সৌখিন মনের অধিকারী মো: আজাহার আলী ১৯৯০ সালে প্রাথমিক ভাবে তার ধানের খোলার পাশেই প্রায় সারে ৫ একর জমির উপর সম্পূর্ণ ব্যক্তি খরচে নানা জাতের দেশী-বিদেশী বনজ ও ফলদ গাছ-গাছড়া রোপণ করে গড়ে তুলেন ‘অর্কিড বাগান'। সেসময় ওই বাগান ‘কলা বাগান’ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছিল। এরপর নানা প্রতিকূলতার মধ্যে ওই বাগানের সৌন্দর্য হারানোর পর আবার ২০০৮ সাল থেকে অর্কিড মালিক আজাহার আলী তার মনের মাধুরী মিশিয়ে প্রচুর টাকা খরচ করে নানা অবকাঠামো তৈরীর মাধ্যমে নতুন করে গড়ে তুলেন ‘অর্কিড পর্যটন প্রকল্প’। এবার তার অর্কিডে প্রবেশ করতে স্বেচ্ছাদান হিসেবে ২০ টাকা করে ধার্য করেছেন। প্রতিদিন ওই অর্কিডে বন্ধু-বান্ধবসহ ক্লান্ত জীবনের একটু অবকাশ কাটাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসছে শহরবাসী এবং জেলার অন্যান্য স্থানের লোকজন। বিশেষ করে ছুটির দিনে বেড়াতে আসা লোকজনের ভিড় বেশী হয়। কেউ যদি অর্কিড রিজার্ভ করে কোন প্রতিষ্ঠান বা পারিবারিক কোন অনুষ্ঠান করতে চায় তবে দিন চুক্তি ৫ হাজার টাকায় বুকিং করতে হয়। আপাতত রাত্রি যাপনের কোন ব্যাবস্থা না থাকলেও ভবিষ্যতে এখনে আবাসিক বাংলোসহ ভ্রমনবিলাসী ও বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য নানা সুযোগ সবিধা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্কিড মালিক আজাহার আলী। বর্তমানে প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৬ টা পর্যন্ত (সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত) অর্কিডে বেড়ানোর সুযোগ রয়েছে। সন্ধ্যার পর কোন দর্শনার্থীকে ভিতরে থাকতে দেওয়া হয়না।
সুতানাল দীঘি:
নালিতাবাড়ী উপজেলার অন্যতম ঐতিহাসিক দীঘি হলো কমলা রাণীর দীঘি বা সুতানাল দিঘি বা বিরহীনি দীঘি। খৃষ্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীতে মধ্যমকুড়া গ্রামে সশাল নামে এক গারো রাজা রাজত্ব করতেন। তাঁর আমলেই এই দীঘি খনন করা হয়। পরিখার মতো দীঘিটি খনন করা হয়েছিল ১৮০ বিঘা জমির উপর। দীঘিমধ্যে ছোট্ট ভূ-খন্ডের উপর একটি সুন্দর ঘর ছিল সেখানে রাজা রাত্রি যাপন করতেন। ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে প্রতিরক্ষা বাহিনী চতুর্দিকে টহল দিত। কালক্রমে ভূ-খন্ডটি ধ্বসে গেছে। রাজার শেষ বংশধর ছিলেন তাঁর রাণী বিরহীনি। এ দীঘিতে মৎস্য শিকারের জন্য প্রতি বছর দূর-দূরান্ত থেকে মৎস্য শিকারীরা আগমন করে থাকেন।
নাকুগাঁও স্থল বন্দর এবং এ সংলগ্ন ভোগাই নদী ও সেতু:
এর দৃষ্টি নন্দন আকাবাকা পথ সত্যিই চমৎকার। ব্রীজে দাড়িয়ে পাহাড় থেকে বয়ে আসা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ্য। ব্রীজে থেকে আকাবাকা রাস্তা পুরো ভিউটা দেখার মত। এটা নালিতাবাড়ী থেকে ১৪ কিমি দূরে অবস্থিত । এর আগে বারোয়ামারী পাশের পাহাড়ী টিলায় রয়েছে বাংলাদেশে অন্যতম খ্রিষ্টান মিশন। এখানে প্রতিবছর সারাদেশের পূণ্যার্থীদের নিয়ে ফাতেমা রাণীর তীর্থ উৎসব অনুষ্ঠিত হয় । এর পর নালিতাবাড়ীর শহরের পাশে ৫ কি মি দূরে ভোগাই নদীতে রাবার ড্যাম।

লাউচাপড়াঃ
জামালপুরের 'লাউচাপড়া' অবসর বিনোদন কেন্দ্রের এই নৈসর্গিক ও ছায়াশীতল পরিবেশ দর্শনে বছরজুড়ে ভিড় করছেন দেশ-বিদেশের শত শত পর্যটক। জামালপুর জেলা সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের উপজেলা বকশিগঞ্জ। আর শেরপুর জেলা সদর থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরের উপজেলা শ্রীবর্দী। অবসর বিনোদন কেন্দ্র লাউচাপড়ার অবস্থান বকশিগঞ্জ উপজেলার পাহাড়ি জনপদে হলেও শ্রীবর্দী উপজেলার কর্ণজোড়া বাজার থেকেও বেশি দূরে নয়। বকশিগঞ্জ থেকে ১৫ আর শ্রীবর্দী থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরের পর্যটন কেন্দ্র লাউচাপড়া। বকশিগঞ্জ ও শ্রীবর্দীর দু'টি পথ এক হয়ে মিলেছে চোখ জুড়ানো অপার সৌন্দর্যের আধার বলে খ্যাত লাউচাপড়ায়। এক সময় ঘন বন জঙ্গলের এসব পাহাড়-টিলায় শত প্রজাতির বন্যপ্রাণী থাকলেও এখন তা কমে গেছে। শূকর, বানর, বনমোরগ আর হাতির পাল ছাড়া এই বনে তেমন কোন প্রাণীর দেখা মেলে না এখন। তারপরও প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের ভিড়ে বছরজুড়ে উৎসবমুখর থাকছে ছায়াশীতল নৈসর্গিক লাউচাপড়া।

ঢাকাথেকে যাতায়াতঃ রাজধানী ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে যাতায়াতই সবচেয়ে উত্তম। উত্তরবঙ্গ থেকে টাঙ্গাইল-জামালপুর হয়েও আসতে পারেন সড়ক পথে শেরপুর । ঢাকা থেকে সরাসরি মাইক্রোবাস অথবা প্রাইভেট কারে আপনি এখানে আসতে পারেন।সময় লাগবে ৪ ঘণ্টা প্রায় ।
ঢাকার মহাখালি থেকে ড্রিমল্যান্ড বাসে সরাসরি শেরপুর ২০০/-
অথবা রিফাত পরিবহণে সরাসরি শ্রীবরদি বাজার, ভারা ৪৫০/-
অথবা ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে সরাসরি নালিতাবাড়ী পর্যন্ত গেটলক সার্ভিস রয়েছে। জনপ্রতি ভাড়া ২৫০/- টাকা। মহাখালী থেকে দুপুর ২টায় ছাড়ে এসিবাস। ভাড়া ৪৫০টাকা।
এছাড়া ঢাকা বঙ্গবন্ধু জাতীয় ষ্টেডিয়াম ৪ নং গেইট থেকে সরাসরি বিকাল ৩-৪টায় শিল্প ও বণিক সমিতির গাড়ী ঝিনাইগাতীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। ভাড়া ৩৫০টাকা ।

যেখানে থাকবেনঃ
শেরপুর শহরে রাতযাপনের জন্য ৫০ থেকে ৮শ টাকায় গেষ্ট হাউজে রুম ভাড়া পাওয়া যায়। শহরের রঘুনাথ বাজারে হোটেল সম্পদ, বুলবুল সড়কে কাকলী ও বর্ণালী গেষ্ট হাউজ, নয়ানী বাজারে ভবানী প্লাজা, বটতলায় আধুনিক মানের থাকার হোটেল রয়েছে। অনুমতি সাপেক্ষে থাকতে পারেন সার্কিট হাউজ, সড়ক ও জনপথ, এলজিইডি, পল¬ী বিদ্যুৎ কিংবা এটিআই রেষ্ট হাউজে। ঝিনাইগাতী ডাকবাংলো অথবা বন-বিভাগ ডাকবাংলোও থাকতে পারবেন। তবে থাকা-খাওয়ার জন্য ঝিনাইগাতী সদর অথবা শেরপুর শহরে চলে আসাই উত্তম। আর ভাল মানের খাবার পাবেন ঝিনাইগাতীর হোটেল সাইদে, হোটেল জোসনা, শেরপুর শহরের নিউ মার্কেটে হোটেল শাহজাহান, হোটেল আহার কিংবা কাকলী মার্কেটের হোটেল প্রিন্সে। এসব হোটেল অগ্রীম বুকিং ও অর্ডার সরবরাহ করা হয়।
শেরপুর জেলা প্রশাসকের নেজারত শাখা “(ফোন) ০৯৩১-৬১২৮৩/০৯৩১-৬১৯৫৪/০৯৩১-৬১৯০০,
সার্কিট হাউজ -০৯৩১-৬১২৪৫,
হোটেল সম্পদ-০১৭১২৪২২১৪৫
(হোটেল সম্পদ বেষ্ট। নন এসি ডাবল রুম ভাড়া পরবে মাত্র ৪০০/= এসি ডাবল রুম ভাড়া পরবে মাত্র ১০০০/= সিঙ্গেল এসি রুম ভাড়া পরবে মাত্র ৭০০/= )
,হোটেল সাইদ-০৯৩১-৬১৭৭৬,
কাকলী গেষ্ট হাউজ- ০১৯১৪৮৫৪৪৫০ ।
মজার খাবারঃ
শেরপুরের সুখ্যাত মিষ্টি, স্পঞ্চ মিষ্টি, দানাগোল্লা, জিলাপী, রস মালাই জন্য ভবতার মিষ্টান্ন, চারু সুইটস, নন্দগোপালের সুইটস এগুলোর শহরের কালীর বাজারে অবস্থিত।
এছাড়াও রুপকথা সিনামা হলের পাশে পার্থ দার লোভনীয় ছানা, প্যারা, মন্ডা এবং গরুর দুধের চা, তেরাবাজার মোড় এবং কোর্টের পেয়াজু ভাজা, নিউমার্কেটে বেল চা, লাল চা এর স্বাদ ভুলা যাবে না।
আর খাবার হোটেল খানা নিউমার্কেটে "খানা খাজানা" এবং "আলীশান" (ঢাকার মানে) ও
শাহজাহান হোটেল বেষ্ট। ওদের পরিবেশ ভাল এবং কাঁচা কলা সহ ভর্তার আইটেম গুলো খুব ভাল ।
শেরপুর শহর থেকে যদি গাড়ি ভাড়া করতে চান:
* হযরত রেন্ট-এ কার-এর ফোন: ০১৭১৪৯৯০৩৪৭।
* অথবা সুমন রেন্ট-এ কার : ০১৭৩৪১৮৩০৩৫।
লেখাটি প্রকাশে সহজগিতার জন্য মুস্তাক ভাই সহ সবাইকে ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


