somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা কি খাচ্ছি-৬

২৩ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাজারে ভেজাল ফার্মফ্রেশ দুধ
আকিজের বশির ও আগোরার নিয়াজকে আদালতে তলব


ঢাকা: ঈদ ও রমজান সামনে রেখে বাজার ছেয়ে ফেলেছে আকিজের ভেজাল ফার্মফ্রেশ পাস্তুরিত তরল দুধ। দফায় দফায় রাসয়নিক পরীক্ষায় এ দুধে ভেজাল ধরা পড়েছে। আদালতে মামলা হয়েছে কিন্তু দুধটির বাজারজাতকরণ বন্ধ রাখেনি আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ। আর এতে সহায়তা করে যাচ্ছে রহিম আফরোজ কোম্পানির সিস্টার কনসার্ন আগোরা।

আকিজের প্রধান শেখ বশিরউদ্দীন আহমেদকে ভেজাল খাদ্য উৎপাদনকারী এবং আগোরার প্রধান নিয়াজ রহিমকে ভেজাল খাদ্য বিক্রয়ের অপরাধে দায়ী করেছে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত। এ অপরাধে এ দুজনকে আগামী ২৮ আগস্ট আদালতে হাজির হওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওই দিনই এ মামলার রায় দেওয়া হবে।

কিন্তু এ অবস্থায়ও ভেজাল দুধ বাজারজাত করা বন্ধ রাখেনি আকিজ। আগোরার আউটলেটগুলোতে এবং অলিতে গলিতে দোকান-পাটে হরদম বিক্রি হচ্ছে ক্ষতিকর ফার্মফ্রেশ।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ২৫ আগস্টা বেলা ১২টায় ৬৯ মগবাজারের আগোরা সুপার শপ থেকে আকিজ কোম্পানির ফার্মফ্রেশ ব্র্যান্ডের পাস্তুরিত তরল দুধ আলামত হিসেবে সংগ্রহ করেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নমুনা সংগ্রহকারী কুটি মিয়া। তিনি আগোরার স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ ওয়াসিমের কাছ থেকে এ নমুনা সংগ্রহ করেন।

কুটি মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ওই দুধ যথাযথব্যবস্থায় সংগ্রহ করে বেলা দেড়টার মধ্যে ডিসিসির জণস্বাস্থ্য পরীক্ষণাগারে রাসয়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। রাসয়নিক পরীক্ষার পর ডিসিসির পাবলিক অ্যানালিস্ট গোলাম সারোয়ার ৩১ আগস্ট ২০১০ তারিখে ডিসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মর্কতার কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তিনি ওই প্রতিবেদনে বিশুদ্ধ খাদ্য বিধি ১৯৬৭ অনুযায়ী পরীক্ষিত দুধে ভেজাল বলে রিপোর্ট দেন।

ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান শেখ বশিরউদ্দীনকে এক নম্বর আসামি ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রধান নিয়াজ রহিমকে দুই নম্বর আসামি করে বিশুদ্ধ খাদ্য আইন ১৯৫৯ (সংশোধিত ২০০৫) এর এর ৬ এর (১) ও (৭) ধারায় মামলা করেন ডিসিসির ফুড অ্যান্ড স্যানিটেশন ইন্সপেক্টর ফখরেউদ্দীর মোবারক। বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে দায়ের করা এ মামলার পাবলিক প্রসিকিউটরও তিনি।

আদালতে দায়ের করা প্রসিকিউসনে তিনি উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত আসামিরা বিশুদ্ধ খাদ্য আইনে ৪৪ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

পাবলিক অ্যানালিস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী পরিক্ষীত দুধে আপেক্ষিক গুরুত্ব ১০২৮ - ১০৩২ এর স্থলে পাওয়া গেছে ১০৩০। দুগ্ধ চর্বি যেখানে থাকার কথা সর্বনিন্ম ৫ ভাগ সেখানে তা আছে মাত্র ২.৫ ভাগ। দুগ্ধচর্বি বিহীন দুগ্ধজাত কঠিন বস্তু থাকার কথা কমপক্ষে ৮.৫ ভাগ, অথচ আছে ২.২ ভাগ। এতে বিশুদ্ধ খাদ্য বিধিমালা ১৯৬৭ মতে পরিক্ষীত পণ্যটি ভেজাল হিসেবে উৎপাদিত হয়েছে এবং বাজারজাত হয়েছে।

মামলার পর আসামি প্রতিষ্ঠান আকিজ আদালতে ফ্রেশ দুধ সংগ্রহ করে তা পুনঃপরীক্ষার আবেদন জানায়। আদালত সে আবেদন মঞ্জুর করেন এ শর্তে যে আসামি পক্ষ এর সব ব্যয়বহন করবে। ২০১১ সালের ৪ মে এ নির্দেশ দেন খাদ্য আদালত। ১৫ মে ২০১১ সালে নমুনা সংগ্রহে নামেন আকিজ ফুড এন্ড বেভারেজের ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) ও সহ-ব্যবস্থাপক। তার সঙ্গে ছিলেন, ডিসিসির নমুনা সংগ্রহকারী কুটি মিয়া এবং ফুড এন্ড স্যানেটারি ইন্সপেক্টর ফখরুদ্দীন মোবারক। তারা ২৩৯ বড় মগবাজারের চিত্রাঙ্গন জেনারেল স্টোর থেকে ফার্মফ্রেশ পাস্তুরিত তরল দুধের নমুনা সংগ্রহ করেন।

তবে সূত্র জানায়, নমুনা সংগ্রহ বিঘ্নিত করতে ওই দিন পুরো রমনা এলাকায় ফার্মফ্রেশ সরবরাহ বন্ধ রেখেছিল আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ।

সংগৃহীত দুধ আবারও যথাযথ ব্যবস্থায় জমা দেওয়া হয় বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে। আদালত তা পুনঃপরীক্ষার জন্য পাঠান ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ডেইরি সায়েন্সের প্রধান প্রফেসর ড. হারুনুর রশীদের কাছে। এ পরীক্ষায়ও ফার্মফ্রেশ দুধটি ভেজাল প্রমানিত হয়।

এরপরও আকিজ কোম্পানি আবারো পরীক্ষার আবেদন জানালে আদালত তা প্রত্যাখ্যান করে।

আগামী ২৮ আগাস্ট এ মামলার রায় ঘোষিত হবে।

মামলা সংশ্লিষ্টরা বলেন, আদালতের রায়ে ফার্মফ্রেশ ভেজাল তা নিশ্চিত হবে। তবে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, এতকিছুর পরেও আকিজ ও আগোরা ফার্মফ্রেশ বাজারজাত করা অব্যাহত রেখেছে। ভেজাল দুধ খেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরাসহ অনেকেই।

আদালতে গচ্ছিত ফার্মফ্রেশের প্যাকেটে দেখা যায়, ব্যাচ নম্বর আছে, উৎপাদনের তারিখ আছে, কিন্তু নেই মেয়াদাত্তীর্নের তারিখ। প্যাকেটের জোড়ার নিচে লেখা আছে উৎপাদনের ৭দিনের মধ্যে ব্যবহার করা উত্তম। কিন্তু কথাটি এমন জায়গা লেখা আছে কোন গ্রহাকেরই নজরে আসবে না।

বাংলাদেশ সময় ০৯২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১২
আরএম/এমএমকে[email protected]

View this link
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ২:৫৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×