somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মধ্যরাতে_খুন (দ্বিতীয়_পর্ব)

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তিন ---

সাফিন মামা, ও সাফিন মামা এক কাপ চা খাইয়া যান । আপনারে তো দেখায় যায় না ।

চা দোকানীর কথা শুনে এগিয়ে গেলাম । পল্টূ এখানে চায়ের দোকান করে অনেক বছর ধরে । একটা সময় প্রায় প্রতিদিন এই দোকানে আড্ডা দিতাম অনেকটা সময় ধরে ।এখন আর তেমন আসা হয় না ।
নিরার এত এত কথা আর আমাকে বলা সব উপদেশ মাঝে মাঝে পল্টূ আমাকে স্মরণ করিয়ে দিত ।

ভাই বেশি সিগারেট খাইয়েন না । আপা মানা করছে । ভাই চুল দাঁড়ি তো বড় হইয়া গেছে আপা কিন্তু পছন্দ করে না । মাঝে মাঝে মনে হত পল্টূরে গরমকালে গরম জলে চুবাই । কিন্তু কিছু বলতে পারতাম না কারণ তারপর মহারাণীর হাতে শাস্তি পেতে হত । যতসব উদ্ভট বুদ্ধির সমাবেশ চলতো নিরার মাথায় আর আমি ছিলাম সেই সব বুদ্ধি বাস্তবায়নের একমাত্র কারিগর ।

--আমাকে একটা বাচ্চা হাতি কিনে দিবা আচ্ছা ? আমি হাতির পিঠে চড়ে দোকানে দোকানে গিয়ে চাঁদা উঠাব না দিলে বলবো এই হাতি ওকে একটা আছাড় মার । হেহেহে।
--ভাইয়ের কাছে একটা সুন্দর জিনিস চাইছেন আপা । হেহেহে হেহেহে।
আমি বসে বসে ভাবতাম কি পাগলের পাল্লায় পরলাম রে । নিরার সাথে আমার পরিচয়টাও ছিল অন্যরকম ।

২০১৪ এর প্রথম দিকের কথা , ঘড়ির সাথে অ্যালার্ম অ্যালার্ম খেলা তখন আমার জিবনে শুরু হয়ে গিয়েছিল । ঘুম ঘুম চোখে সকালের ক্লাস অথবা সামনে কোন মোটা মানব বা মানবীকে রেখে দুদণ্ড ঘুমের শান্তি ।
বাবার টাকায় আর নিজের ঘুণে খাওয়া কিছু বুদ্ধি নিয়ে মোটামোটা নামকরা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যাকলগ খাওয়া ছাত্র । কোন কাজ বলতে পারব না ছাড়া আর কিছুই বলতে পারি না ।

- ওই এই দিকে আয় ?

-আমাকে বলছেন ?

-তুই ছাড়া আর কেউ আছে এখানে । ওই দোকানে আমার জন্য এক বাটি ফুচকার অর্ডার দে । আর কি নাম তোর ?

- আ আ আমার নাম সাফিন ।

-এত আ আ করতেছিস কেন ? তাড়াতাড়ি অর্ডার দে , দিয়া এখান থেকে যা ।

- আ আচ্ছা ।

ফুচকার অর্ডার দিয়ে হাটা ধরলাম । আর ভাবতে লাগলাম কি হল ব্যাপারটা । শেষমেশ একটা মেয়ের কাছে ফাপর খেয়ে গেলাম কিন্তু আমি তো তাকে চিনি ও না । হায় হায় একি কি হল আমার সাথে । এসব ভাবতে ভাবতে হাঁটছি ।

কে যেন কাকে ভাইয়া ভাইয়া বলে ডাকছে মাথা ঘুরিয়ে দেখি সেই মেয়েটি আর আমাকেই ভাইয়া বলে ডাকছে ।
-ভাইয়া আই এম সরি । আমি আসলে নতুন ভর্তি হয়েছি আর কিছু ভাইয়া আমাকে এমনটা করতে বলেছে। আমি সত্যি অনেক অনেক দুঃখিত ।

মেয়েটির সরি বলার ধরণ হোক আর আমার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার কারণেই হোক আমার মনের মধ্যে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ভেজা রাস্তা তার সাথে বকুলফুলের গন্ধে মন মাতানো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল আকাশের রঙটা নীল হলে আরো বেশি ভাল হতো । ঠিক যেন প্রেম জেগে উঠা মুহূর্ত । এসব মনে পরলে আপন মনেই হেসে উঠি ।

সাফিন ভাই চা। ভাই নিরা আপা কেমন আছে । কোন খোঁজ খবর আছে ।

- নিরা মারা গেছে গত রাতে মারা গেছে ।

ডার্বি সিগারেটটা ধরিয়ে রাস্তায় হাঁটা শুরু করলাম ।

চার--

আজকে তোমার জন্য একটি লাল রঙের সার্ট কিনেছিলাম কিন্তু তুমি ছুঁয়েও দেখলে না । জানো প্রায় দুঘণ্টা ধরে দোকানে ঘুরে ঘুরে তোমার পছন্দের লাল রঙের সার্টটি কিনে এনেছিলাম । তুমি হইতো ভুলেই গেছ আজকে আমাদের প্রথম বিবাহবার্ষিকী । তোমার পছন্দের ইলিশ বিরয়ানী করেছিলাম কিন্তু তুমি এসে বললে অফিস থেকে খেয়ে এসেছ । আমি একটু ও কাঁদি নি জানো একটুও না ।

ডায়রির তেপ্পান্নতম পাতায় লিখা নিরা নামের মেয়েটির ছোট ছোট গল্প গুলো পরছি । লাশটি পোস্টমর্টেমে পাঠানো হয়েছে । কেসটির অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রমাণ এই ডায়রিটি । এখন রাত দুইটা বেজে সাতাশ মিনিট আমার সদ্য সমুদ্র ঘুরে আসা বউ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ।

কি নিষ্পাপ মেয়েটি ঘুমিয়ে রয়েছে ওর চোখের পাতাগুলি একটু একটু কাঁপছে স্বপ্ন দেখছে হইত ।সুন্দর কিছু স্বপ্ন যা হইত কল্পনা জগতে বিরাজ করে । বাস্তবতা মত কঠিন না এত নিষ্ঠুর না ।
ডায়রিটি পড়ায় মন দিতে হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুনিকে খুঁজে বের করতে হবে । আরও একটি অপরাধ দমন করতে হবে ।
(চলবে ----)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৫২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×