দেশটাকে এক ঘরে করে পেলা হচ্ছে...! বাংলাদেশ সফরে আসছেন না আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দ
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট সমাধানে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটিশ, মার্কিন, অস্ট্রেলীয় নেতৃবৃন্দসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রভাবশালী দেশের পক্ষ থেকে বারংবার তাগিদ দেয়া হচ্ছে। ইতোপূর্বে বাংলাদেশের সরকার ও বিরোধী পক্ষকে চিঠি দিয়ে সংলাপের মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ যেন বিভিন্ন ফোরামে তার আহ্বানেরই প্রতিধ্বনি করছেন। এ অবস্থায় বাংলাদেশ নিয়ে প্রতিবেশী প্রভাবশালী দেশ ভারত, চীন ও পাকিস্তান এখনো নীরব। প্রভাবশালী বিশ্ব নেতৃবৃন্দও বাংলাদেশ সফরে আসতে চাইছেন না। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ সফরে আসছেন এমন প্রচারণা চলছে। বিশ্ব অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ’র মতো প্রতিষ্ঠানও এখন বাংলাদেশ নিয়ে নানা মেরুকরণে সামনে চলে আসছে। রাজনৈতিক সংকটের কারণে মাত্র দুইমাসের ব্যবধানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বের পূর্বাভাস থেকে নি¤œমুখী সূচকের দিকে সরে এসেছে আইএমএফ। বিশ্লেষকরা একে রাজনৈতিক সমস্যার ফল হিসেবেই মনে করছেন। ধীরে ধীরে এসব অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের অবস্থানকে প্রকাশ করতে শুরু করেছে বলে তারা মনে করেন।
সরকারি তরফ থেকে প্রচারণা ছিল যে, চলতি মাসেই জাপান সফরের সময় ঢাকা আসতে পারেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। কিন্তু গতকাল বুধবার রাতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন্স ব্লুুম বার্নিকাট কেরির বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর বাংলাদেশে সম্ভাব্য সফর নিয়েই চলছে ধোঁয়াশা। সরকারের বিভিন্ন সূত্র থেকে তাদের সফরের কথা বলা হলেও আদতে এমন সম্ভাবনা নেই বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানান দিচ্ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মতোই বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট, মানবাধিকার পরিস্থিতি, বাকস্বাধীনতা, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ এবং দ্রুত রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবটও। প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাঠানো চিঠির বিপরীতে এ কথা বলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার এশিয়াবিষয়ক সহকারী লকলন স্ট্রাহান চিঠির উত্তর দেন। এতে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের সার্বিক বিষয়গুলো গভীরভাবে পযর্বেক্ষণ করছে। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বাস করে রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে বাংলাদেশের সমস্যা সমাধান সম্ভব।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কটে আঞ্চলিক পর্যায় বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তান নীরবতা পালন করছে এবং তারা চলমান অচলাবস্থায় হস্তক্ষেপ করতে অনিচ্ছুক বলে দাবি করেছে পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। পত্রিকাটির এক নিবন্ধে নিবন্ধকার আইমান আইযাজ বলেছেন, বাংলাদেশের চলমান অচলাবস্থা নাটকীয়ভাবে বদলে যাবে না। কারণ দুই দেশই মনে করে বাংলাদেশ সঙ্কট অভ্যন্তরীণ। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন ও কানাডা অত্যন্ত কঠোর ভাষায় রাজনৈতিক সহিংসতা ও চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার নিন্দা জানিয়েছে। তারা সরকার ও বিরোধী দলকে রাজনৈতিক সংলাপে বসতে আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন দেশটির দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে বর্তমান সঙ্কটের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মধ্যপ্রাচ্য এবং চীনও বাংলাদেশ নিয়ে এখন নীরবতা অবলম্বন করছে। এদিকে গত মঙ্গলবারও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিকে ১১ কংগ্রেস সদস্যের লেখা একটি চিঠি প্রসঙ্গ জানতে চেয়েছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেন পেসাকির কাছে। একই সঙ্গে তার কাছ থেকে লেখক অভিজিৎ রায়ের বিচার প্রসঙ্গে বাংলাদেশে এফবিআইয়ের তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। জেন পেসাকির পরবর্তীতে এ বিষয়ে জানানোর কথা বলেন।
বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লিবারেল ডেমোক্রেট দলের পার্লামেন্টারিয়ান ও লিবারেল দলের চিফ হুইপ লর্ড অ্যাভাবুরির এক প্রশ্নের জবাবে কনজারভেটিভ পার্টির পার্লামেন্টারিয়ান, ব্রিটিশ ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসের প্রতিমন্ত্রী ও হাউস অব লর্ডসে সরকার দলীয় চিফ হুইপ ব্যারোনেস অ্যানিলে বাংলাদেশের চলমান সব ঘটনা দ্রুত, স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের সম্পৃক্ততাকে যুক্তরাজ্য অব্যাহতভাবে উৎসাহিত করে। দেশব্যাপী সহিংসতা ও উত্তেজনার অবসানে সব দলকে একে অন্যের ওপর আস্থা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও তিনি মনে করেন।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি জানতে চান, জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের কাছে যুক্তরাজ্য সরকার বাংলাদেশ ইস্যুতে একটি প্রস্তাব দেবে কিনা, যাতে বলা হবে বাংলাদেশের সরকার ও বিরোধী পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ দিতে। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনকে আমন্ত্রণ জানাতে বলা হবে কিনা, যাতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো একটি সমঝোতায় পৌঁছতে পারে। তাদের রাজনৈতিক মতপার্থক্য দূর হয়। ব্যারোনেস অ্যানিলে গত ৯ মার্চ লর্ড অ্যাভাবুরির এসব প্রশ্নের জবাব দেন।
এতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেত্রী খালেদা জিয়ার কাছে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন চিঠি লিখেছেন। এ খবর পেয়েছি আমরা। এধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
অন্যদিকে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ হত্যাকা- নিয়েও আলোচনা হয় পার্লামেন্টে। এ বিষয়ে ৯ মার্চ প্রশ্ন করেন লিভারপুরের লর্ড অ্যাল্টন। তিনি জানতে চান, ১৯৪৮ সালের মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণার ১৮ অনুচ্ছেদের অধীনে বাংলাদেশের বাধ্যবাধকতার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে ব্রিটিশ সরকার তার অবস্থান জানিয়েছে কিনা?
এদিনই তার এ প্রশ্নের উত্তর দেন ব্যারোনেস অ্যানিলে। তিনি বলেন, আমরা মানবাধিকারের বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিই। বিশ্বাসযোগ্য কোনো অভিযোগ থাকলে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমরা তা নিয়ে উদ্বেগ উত্থাপন করে আসছি। আমরা আহ্বান জানাই সকল ঘটনা যেন দ্রুত, স্বচ্ছতার সঙ্গে এবং নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা হয়।
- See more at: Click This Link
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি
মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন
=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=
০১।
=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।
পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।
জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সমস্যা মিয়ার সমস্যা
সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।
তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন