somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিজেদের অজান্তে যেভাবে আমরা আল্লাহ ও রসুল ( সাঃ ) এর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছি....!

৩০ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুঃখিত ছবি আপলোড করা গেলোনাহ্.....

ফাহামিদা দরিদ্র পরিবারের ৩য় সন্তান, তারা ৪ ভাই বোনদের মধ্যে প্রথম ২ জন বোন একমাত্র ভাইটি ছোট্ট। ফাহমিদার বাবা কৃষক কৃষি কাজ করে সংসার চালাতে হয়...!

ফাহমিদার বড় দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। এখন ফাহমিদার বয়স ২১ গ্রামের মেয়েদের ১৭/১৮ বছর হবার পর বিয়ে না হলে কত রকম কানাকানি হয়......! ফাহমিদার ব্যপারেও কানাকানি চলছেই....

ফাহমিদার জন্য ঘর আসছেনা তা নয়, এরই মধ্যে ১৪টির মত ঘর এসেছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে, কিন্তু ফাহমিদার বাবা দরিদ্র, কৃষির যা অবস্থা তা দিয়ে কোন রকমে সংসারের ঘানি টেনে যাচ্ছে...। ফাহমিদাকে যারাই দেখতে এসেছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তারাই বিভিন্ন কারনে ফাহমিদাকে দূরে টেলে দিয়ে চলে গেছে!

ফাহমিদাকে যতবারই দেখতে এসেছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে ততবারই স্বপ্নে বুক বেঁধেছে ফাহমিদা!!! এবার হয়তো কাঙ্ক্ষিত বিয়ে হয়ে যাবে...... যতবার স্বপ্ন দেখেছে ততবারই স্বপ্ন ভেঙ্গে তচনচ হয়ে গেছে।

স্বপ্ন ভেঙ্গে যাবার পেছনে ফাহমিদার কোন হাত নেই...... তবে স্বপ্ন ভাঙ্গার পেছনে হাত আছে প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার! ফাহমিদা'র স্বপ্ন ভঙ্গের পর ফাহমিদা শুধুই ভেবেছে..... এগুলো আমার স্বপ্নভঙ্গ নয় বরং এগুলো আমার দুঃস্বপ্ন.....! আর দুঃস্বপ্ন ভেঙ্গে যাওয়াটা ভালো, খারাপ কিছু নাহ্।

বিয়ে করতে এসে যারা যৌতুক নামের শুয়োরের গোস্ত দাবী করে তাদের সাথে চিন্তা চেতনা ও বিবেক যুক্ত কোন নারীর বিয়ে হতে পারেনা, তাদেরকে বনের পশুর সাথে বিয়ে দিয়ে বন্যপশুর সাথে বসবাস করার সুযোগ করে দয়া উচিত.....!

ফাহমিদা ভাবছে যারা থাকে দেখতে এসেছে তার মধ্যে দুয়েকজন ছাড়া বাকি সবাই ফাহমিদাকে পছন্দ করেছে।



পছন্দ করলে কি হবে? ফাহমিদার বাবা তার ২ মেয়ে বিয়ে দিতে গিয়ে ফসলি জমি গুলো বিক্রি করে দিয়েছে...! এখন ফাহমিদাকে বিয়ে দেয়ার খরচ ফাহমিদার বাবার নেই! !

ফাহমিদার বাবার কপালে ভাঁজ পড়েছে চিন্তায় কি করবেন তিনি....! সম্বল বলতে ফাহমিদার বাবার ভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই। মাঝেমধ্যে ভাবে ভিটা বিক্রি করে ফাহমিদার বিয়ে দেবে... কিন্তু ভাবনা সহজ হলেও কাজটা করা খুবই কঠিন। ভিটা বিক্রি করলে থাকবে কোথায়?

এভাবে চলতে থাকে দিনের পর দিন.... হটাৎ একদিন জুমাবারে ফাহমিদার বিয়ে প্রস্তাব নিয়ে আসে প্রতিবেশীর এক আত্মীয়! ফাহমিদাকে পছন্দ করে ফাহমিদার হবু বর। বরের পক্ষ হতে বলা হলো আমাদের কিছু চাওয়া নেই সমাজিকতা রক্ষা করে ফাহমিদাকে আমার হাতে তুলে দিলেই হবে৷ বললেন ফাহমিদার হবু বর।

সামাজিকতার বেড়াজালে বন্দী আমাদের সমাজ, সমাজিকতার কথা শুনিয়ে দিয়ে বরকর্তৃপক্ষ আত্ম খুশিতে থৈথৈ...... সামাজিকতা কি? ?

১. সামাজিকতা হলো ৫০০/৭০০/১০০০ বর যাত্রী, যাবতীয় ফার্নিচার, পোশাক, আরো অনেক কিছু......!

২. সামাজিকতার নাম দিয়ে নগদ টাকার কথা না বলে কনে পক্ষকে নাজেহাল করা.....!

ফাহমিদার বাবা ভাবে অন্য যারা মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন তারা সবাই নগদ টাকা যৌতুক চেয়েছিলেন! যেহেতু এই ছেলেটি নগদ টাকা যৌতুক চাইনি সেহেতু ছেলে ভালো হবে, যেভাবেই হোক এবার মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেব।

মাসখানেক আগে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হয়, যাতে করে ফাহমিদার বাবা সামাজিকতা বজায় রেখে বিয়ের আয়োজন সম্পাদন করতে পারে। ফাহমিদার বাবা সামাজিকতা রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন মহাজনের কাছে যেতে থাকে অগ্রীম ফসলের শস্য বিক্রির হিসেবে টাকা আনতে...... ফসলের শস্য কত তুলতে পারবে সেই অনুযায়ী টাকা দিতে রাজি মহাজন..... কিন্তু শস্য অনুযায়ী টাকা নিতে গেলে সামাজিকতা রক্ষা করা সম্ভব নয়....!

ফাহমিদার বাবা কিছু টাকা মানে লক্ষাদিক টাকা এক্সট্রা চাই কিন্তু মহাজন দিতে অপারগতা জানান!! ফাহমিদার বাবা সামাজিকতার কথা চিন্তা করতে করতে বাড়ি ফিরে আসে।

সামাজিকতা ফাহমিদার বাবার কাছে বিষাক্ত ছোবলের মত লাগছে, কি করবে ভাবতে ভাবতে আবার ফাহমিদার বাবা মহাজনের কাছে যায়, গিয়ে বিভিন্ন কৌশলে মহাজনকে বুঝাতে চেষ্টা করে যে মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য জরুরী টাকার দরকার, মহাজন বলে হ্যাঁ টাকা দিতে পারি টাকার নিশ্চয়তা চাই! ফাহমিদার বাবা বলে আমার সয়সম্পত্তি যা ছিলো তাতো বিক্রি করে দিয়েছি, এখন ভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই....। মহাজন বলে যদি ভিটার কাগজ বন্ধকের হিসাবে টাকা নিতে চান প্রয়োজনীয় টাকা নিতে পারেন!

ফাহমিদার বাবা রাজি হয় ভিটার দলিল জমা দিয়ে মাসিক সুদের হিসেবে টাকা নেন তিনি।

ছড়া সুদ ১০০ তে ২৫% হারে......। কথা হলো সুদের টাকা মাসে মাসে পরিশোধ করতে হবে এবং ৬ মাস পর মূল টাকা পরিশোধ।

ফাহমিদার বাবা টাকা নিয়ে এসে সামাজিকতা বজায় রেখে মেয়ের বিয়ে দেয়।

বিয়ের পর সুদ পরিশোধ করতে থাকে ফাহমিদার কৃষক বাবা।

আমার জানা মতে ইসলামে সুদ সম্পূর্ণ ভাবে হারাম, আরো বলা আছে সুদ দেয়া নেয়া লেনদেনের জন্য সাক্ষী সুদের জন্য পর্দ লেখক সবাই সমান অপরাধী।

কোরআনে স্পষ্ট করে বলা আছে সুদের অপরাধীদের সাথে আল্লাহ এবং আল্লাহর রসুল ( সাঃ ) যুদ্ধ ঘোষণা করবেন.... প্রশ্ন হচ্ছে কোন মানুষটি আল্লাহ এবং আল্লাহর রসুল ( সাঃ ) এর সাথে যুদ্ধ করতে চাইবেন???? সামজিকতার নামে যৌতুকের জন্য যদি সুদি টাকা নিয়ে বিয়ের আয়োজন ও প্রয়োজনীয় আসবাব পত্র কেনাকাটা করা হয় তার জন্য দায়ী কে???

আমরা কি নিজেদের অজান্তে নিজেদেরকে সুদে যুক্ত করে আল্লাহ এবং রসুল ( সাঃ ) এর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছিনা? ?

এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর যতদিন আমরা সচেতন হয়ে খুঁজবোনা ততদিন অজান্তে আমারা আল্লাহ এবং রসুল ( সাঃ ) যুদ্ধে লিপ্ত হব!!!













কোরআনের আয়াত অনুযায়ী..... সাধারণ ভাবে চিন্তা করলেও বুঝতে সক্ষম হই যে আমরা আল্লাহ এবং রসুল ( সাঃ ) এর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছি! !! !!!
সুদ বিষয়ে ডাঃ জাকির নায়েক এর বিশ্লেষণ শুনুন এখানে....
আমাদেরকে এখনই সচেতন হওয়া দরকার দুনিয়াবী ললসার শিকার হয়ে আমরা যেন আখেরাত নষ্ট না করি। আল্লাহ যেন আমাদের বুঝার তাওফীক দান করেন। আমিন।

সামাজিকতার নামে কুসংস্কার ও কুসংস্কৃতি দূর করার লক্ষ্যে আমি যৌতুক বিহীন বিয়ে করেছি এবং বিয়ে করার ৬ মাস আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছি বাবা মা আত্মীয় স্বজনদের বুঝিয়ে সফল হয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।

আমার সফলতা দেখে আমার ছোট্ট ভাইয়েরা খুশি এবং তাদের ক্ষেত্রে যৌতুক বিহীন বিয়ে আয়োজন করার জন্য আমার সহযোগিতা চেয়েছেন। আমার এলাকায়ও আমাকে অনুসরণ করে যৌতুক বিহীন বিয়ে আয়োজন করার জন্য সাহসী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন অনেকে। যা আমাকে প্রতিদিন আনন্দিত করে.....!!! !!

আপনিও সাহসিকতার পরিচয় দিন যৌতুককে না বলুন, উন্নত সমাজ গড়তে এগিয়ে আসুন।ছবি সহ দেখতে এখানে ক্লিক করুনঃ এখানে ছবি সহ....! মোবাইলজেও থেকে সামুতে ছবি আপলোড করতে সমস্যা!!
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১:৪৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখনো নদীপারে ঝড় বয়ে যায় || নতুন গান

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২০

এ গানের লিরিক আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। ২৪ বা ২৫ এপ্রিল ২০২৪-এ সুর ও গানের প্রথম কয়েক লাইন তৈরি হয়ে যায়। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি অন্য একটা গান নিয়ে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×