somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আসুন নেপাল দেশটি সম্পর্কে জানি

২৪ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নেপাল , তৃতীয় বিশ্বের একটি ছোট্ট দেশ। নেপাল শব্দের অর্থ পবিত্র গুহা। নেপালের মোট আয়তন প্রায় ১৪৭,১৮১ বর্গকিমি (৫৬,৮২৭ বর্গমাইল)। নেপালের আকৃতি অনেকটা চতুর্ভুজের মতন। শতকরা ৮০ ভাগ জনগণই হিন্দু ধর্মের অনুসারী। রাজধানী কাঠমুন্ডু দেশের সবচেয়ে বড় শহর এবং এর জনসংখ্যা প্রায় ৮০০,০০০(মেট্রোপলিটন এলাকায়: ১৫ লক্ষ)। পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট অবস্থিত। নেপালী বৎসর ১২ মাসে বিভক্ত এবং বছরের শুরু হয় মধ্য এপ্রিলে। নেপালে সাপ্তহিক ছুটির দিন হচ্ছে শনিবার। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড বনে যেতে পারে নেপাল।

কাঠমুন্ডু শহরের ভিতরে যে সব জায়গা দেখার মত সেগুলো হল: কাঠমুন্ডু দরবার স্কয়ার, পাঠান দরবার স্কয়ার, বুদ্ধুনাথ স্তুপা, পশুপতিনাথ মন্দির, মাংকি মন্দির, রয়েল প্যালেস ইত্যাদি। কাঠমাণ্ডুর কাছেপিঠে ছড়িয়ে আছে শয়েশয়ে মিন্দর ও তীর্থস্থান। নেপালে কেনাকাটা করতে গেলে দাম শুনে ভড়কে যাবেন না। পর্যটকদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো বাগিয়ে নিতে তারা অনেক বাড়িয়ে দাম বলে। দরদাম করে অর্ধেকেরও কমে কেনা সম্ভব। নেপালিরা খুবই আন্তরিক ও সাদামনের মানুষ। পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়া মাউন্ট এভারেস্টই যেনো নেপালের প্রতীক। মাউন্ট এভারেস্টসহ অন্যান্য সুউচ্চ চূড়াগুলোর আকর্ষণে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক ছুটে আসে দেশটিতে।

হিমালয়ের এই দেশে অক্টোবর – মে মাসের মধ্যে এলে সুউচ্চ হিমালয় কিংবা জঙ্গলে রাত্রি যাপন অথবা অবাধ ঘুরে বেড়ানো সবচেয়ে বেশি উপভোগ করা যায় ।ছোট্ট শান্ত ছবির মত সুন্দর এই দেশ টি ভ্রমন পিপাসুদের অতৃপ্ত মনে বিশাল তৃপ্তি নিয়ে আসবে তা চোখ বন্ধ করে বলে দেয়া যায় ।বাংলাদেশ থেকে নেপালের ভিসা করতে হয় না। নেপালের এয়ারপোর্টে গিয়ে ভিসা করতে হয়। কোন ঝামেলা না থাকলে ট্যুরিস্ট হিসেবে এমনিতেই ভিসা পাওয়া যায়। গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান ছাড়াও হিন্দুদের বেশ কয়েকটি পবিত্র স্থান পড়েছে নেপালের ভেতরে।হাজার হাজার বছর ধরে তাবৎ দুনিয়ার মানুষকে অভিভূত করে রেখেছে হিমালয়। হিমালয় হলো পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বতমালা। হিমালয় পর্বত থেকে নেমে আসা নদীগুলোই বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে নয়তো ভারত মহাসাগরে গিয়ে মিলিত হয়েছে। আমাদের দেশের বেশিরভাগ নদীর পানিই আসে হিমালয় পর্বতমালার বরফ গলে।


রাজধানী থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে পোখারা নামক স্থান। যেটাকে বলা হয় হেভেন অব দ্যা নেপাল। এটা হলো নেপালের শ্রেষ্ঠ পর্যটন নগরী। সমগ্র পৃথিবী থেকে প্রতিদিন হাজারো পর্যটক এখানে ভিড় জমায়। নেপালের খাবারের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গেলে বলতে হয় সেখানকার খাবার-দাবারে অনেকটা বাঙ্গালী ছাপ রয়েছে। ১৯৫৩ সালে এডমন্ড হিলারী এবং তেনজিং নরগে এভারেস্ট জয়ের পর এ যাবৎ প্রায় ৩ হাজার আরোহী এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করেছেন। নেপাল এবং চীনে দাঁড়িয়ে থাকা হিমালয়ের মাউন্ট এভারেস্ট চূড়ার উচ্চতা ৮ হাজার ৮৪৮ মিটার বা ২৯ হাজার ২৯ ফুট।নেপাল আশা করছে, পাঁচ বছর পর তাদের পর্যটন রাজস্ব ৫০ কোটি ডলারে পৌঁছুবে।


মন্দির ,স্বচ্ছ হ্রদ , সারি সারি সবুজ ভ্যালি , বন্য প্রানী সংরক্ষণ কেন্দ্র , পাহাড় কিংবা তাদের রাজপ্রাসদ সমূহ সব কিছুতেই মুগ্ধতা এ যেন পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গ ।নেপালের টুরিস্ট স্পট গুলোর দোকান গুলোতে ঘুরে খুব ই মজা পাবেন। এত রকম বাহারি পসরার মেলে – সব ই কিনতে ইচ্ছে করে। প্রচুর ফরেনার দেখবেন ঘুরছে কাধে ব্যাগ নিয়ে।কেউ ছবি তুলছে, কেনা কাটা করছে, রাস্তার পাশে গিটার নিয়ে বসে গান করছে। নেপালে আকাশপথে ভ্রমণের নিরাপত্তাও কম। গত দুই বছরে সেখানে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয় কমপক্ষে ৭৫জন। গত বছর ক্ষুদ্র বিমানে চড়ে মাউন্ট এভারেস্ট দেখতে যাওয়ার পথে নিহত হয় ১৯জন যাত্রীর সবাই। এদের সবাই ব্রিটেন ও চীনের নাগরিক।

পাহাড় কন্যা নেপাল হয়ে উঠেছে এশিয়া মহাদেশের অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্র । মৌসুমি জলবায়ুর এই ছবির মত সুন্দর এই দেশে জুন থেকে সেপ্টেম্বরে প্রচুর বৃষ্টি হয়ে থাকে ,বাকি সময়টা সাধারণত থাকে শুষ্ক ।অক্টোবর – নভেম্বর এ নেপালের শুষ্ক মৌসুম এবং বছরের সেরা সময় । বাতাস থাকে ঝিলিমিলি পরিষ্কার , অনেক দূরের কিছু ও আপনার চোখে ধরা পড়বে সহজেই , আর গ্রেট হিমালয় তার অপার রূপ মাধুর্য মেলে ধরবে আপনার সামনে যতটা আপনি চেয়েছিলেন তার চেয়েও বেশি ।নেপালের জাতীয় আয়ের একটি বড় উৎস হচ্ছে হিমালয়। প্রতিবছর এই পর্বত আরোহণের জন্য বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে বহুসংখ্যক পর্বতারোহী সেখানে যান। বিশেষ করে এপ্রিল ও মে মাসে এভারেস্টে সর্বোচ্চসংখ্যক পর্বতারোহীর সমাগম হয়।

নেপালের জাতীয় পতাকা বিশ্বের একমাত্র ত্রিভুজাকৃতির জাতীয় পতাকা। এটি রানা রাজবংশের দুই অংশের দুইটি প্রতীকের সমন্বয়ে গঠিত।ফেউয়া লেকে নৌকায় করে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ তুলনাহীন। লেকের অন্য পাড়টি পাহাড়-ঘেরা। পাহাড় বেয়ে চুইয়ে নামছে জল। আর তরুণ-তরুণীরা তাদের নৌকা থামিয়ে সেখানেই করছে পিকনিক।নাগরকোট যেমন এভারেস্ট দেখার জন্য, পোখারা তেমনি অন্নপূর্ণা দেখার জন্য। ভোররাতেই গাড়িতে করে চলে যাওয়া যায় পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে। সূর্য ওঠার সময় অপার্থিব সোনালি আভা যখন প্রকৃতি আর মন ছুঁয়ে যায়, তখন সত্যিই মনে প্রশ্ন জাগে, জগতে এত হানাহানি, এত বৈষম্য কেন?

লুম্বিনী বৌদ্ধধর্মালম্বীদের তীর্থস্থান হলেও তা সকল পর্যটকের কাছে আর্কষনীয় । লুম্বিনী মায়া দেবীর মন্দির যেখানে একটি পাথরে মহান বুদ্ধের জন্ম স্মারক রয়েছে । বুদ্ধ , বৌদ্ধ ধর্মের জনক এই লুন্বিনীতেই জন্ম গ্রহণ করেন বৈশাখের এক পূর্নিমা রাতে ৬২৩ খ্রিষ্টপূর্বে । এটি সিদ্ধার্থনগর থেকে থেকে ২২কিমি দূরে চুরিয়া রেঞ্জ এর নীচে অবস্থিত এবং হিমালয়ের পাদদেশ থেকে ২৪ কিমি দূরে । রূপান্দেহি জেলায় অবস্থিত লুম্বিনী কাঠমুন্ডু থেকে ৩০০ কিমি পশ্চিমে অবস্থিত ।গোরখা নেপালের ক্ষমতাসীন রাজকীয় পরিবারের পূর্বপুরুষের আদি শহর । এটির গড় উচ্চতা ১১৩৫ মিটার এবং কাঠমুন্ডু থেকে ১৪০কিমি পশ্চিমে অবস্থিত । পৃথ্বী নারায়ণ শাহ কাঠমুন্ডু উপত্যকার বিজেতা এবং আধুনিক নেপাল প্রতিষ্ঠাতা এখানেই জন্মগ্রহণ করেন । এর রয়েছে ৪ টি প্রধান নদী Chepe, Daraudi, Marsyangdi এবং Budhi Gandaki ।


৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×