somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

জীবনের গল্প- ৪

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :






দোস্ত, আমার বউকে আমার আর ভালো লাগে না।
হাসানের মুখে এই কথা শুনে আমি খুব অবাক হলাম। মনে মনে বললাম, গাধা বলে কি!
হাসান আবার বলল, না ওকে আমি তালাক দিব না কিন্তু আরেকটা বিয়ে করবো নিশ্চিত।
আমি বললাম, ঘটনা কি খুলে বল।
হাসান বলল, দোস্ত ওর সাথে বিছানায় শুতে ইচ্ছা করে না। একটুও ভালো লাগে না। ওর কোনো কিছুই আমাকে আকর্ষন করে না। কাছে টানে না। আমি গত তিন মাস ধরে ওর সাথে ঘুমাই না। আলাদা বিছানা করে ঘুমাই। এর মধ্যে তিনবার ও আমার কাছে এসেছিল। আমি ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছি। ওকে দিয়ে আমার চলবে না। আমি মন স্থির করে ফেলেছি- আরেকটা বিয়ে করবো। পয়ত্রিশ বছর সেই কবেই পার করে ফেলেছি। আর পয়ত্রিশ বছর কি বাঁচবো? তাই বাকি যতদিন বাঁচি একটু আনন্দ করে বাচতে চাই।

আমার বন্ধু হাসান। চমৎকার ছেলে।
দেখতে একদম আফগানিস্তানীদের মতোন। উচা-লম্বা, গায়ের রঙ ফর্সা। হাসান শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনলজি থেকে ফ্যাশন ডিজাইনের ওপর পড়াশোনা করেছে। বিয়ে করেছে ছয় বছর হয়ে গেছে। এক বছর প্রেম করে বিয়ে করেছে। এখন হাসানের এক ছেলে, এক মেয়ে। সে চাকরি করছে একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগে। টঙ্গীতে নিজের বাড়ি। বাবা-মা, ভাই-বোন সবাই মিলে খুব সুন্দর ভাবে মিলেমিশে থাকে। একটা হাসি খুশি পরিবার বলা চলে। হাসানের বাবা ব্যবসায়ী। জমি জমা ভালোই আছে। পিক-আপ ভ্যান'ই আছে তেরটা। একবার হাসান তার বাবাকে না জানিয়ে পিক-আপ ভ্যান নিয়েই কক্সবাজার চলে গিয়েছিল। আরেকবার গিয়েছিল বান্দারবন।

হাসানের বৌ এর নাম লিলি। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে।
লিলি ভাবী'র মুখটা ভীষন মায়া-মায়া। সে তার সংসারে সারা দিন খাটে। সাতজনের রান্না একা নিজ হাতে করে। নিজের দু'টা বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে আসে, নিয়ে আসে। সংসারের সব কাজ খুব সুন্দর সামলাচ্ছে। দারুন সাংসারিক মেয়ে। রোগা পাতলা ছিপছিপে শ্যামবর্ণ। লিলি ভাবী সব মিলিয়ে চমৎকার মেয়ে। এই সমাজে এরকম ঘর সংসারী মেয়ে খুব কম আছে। বেশির ভাগ মেয়েই বাহিরমূখী। ভাবী সব সময় চোখে কাজল দেন। তার চোখ খুব সুন্দর। চোখে কেমন মায়া মায়া ভাব। মোটা করে কাজল দেওয়ার কারনে চোখে বিষন্না চলে আসে। ভাবীর হাতের রান্না বেশ ভালো। বহু দিন তার হাতের রান্না খেয়েছি। বিশেষ করে মটরশুটি দিয়ে কই মাছ আর নতুন আলু ও টোমেটো দিয়ে শিং মাছের ঝোল- দারুন রান্না করেন।

আমি হাসানকে অনেক বুঝালাম। সে আমার কথা মানতে চায় না।
তার একই কথা আমি আবার বিয়ে করবো। করতেই হবে। পুরুষ মানুষের তো শরীরের একটা ক্ষুধা আছে। বয়স বাড়লে- ক্ষুধাও বাড়ে। লিলি মিইয়ে যাওয়া মুড়ির মতোন হয়ে গেছে, নেতিয়ে যাওয়া মুড়ির সাথে আমার থাকা সম্ভব না। আমি বললাম, হাসান লক্ষ কোটি মানুষ এক স্ত্রী নিয়ে সুখে জীবন যাপন করছে। হাসান রেগে গিয়ে বলল, কোনো বিবাহিত শালা সুখে নাই। সব শালা ভাব দেখায় সুখে আছে। খোঁজ নিয়ে দ্যাখ সুযোগ পেলে আরেক বিয়ে করবে। এক বৌ নিয়ে সুখে থাকা যায় না। আমার সাহস আছে এই জন্যই আমি বলছি- আমি আবার বিয়ে করবো। ধর্মের দিক থেকেও কোনো বাঁধা নেই। তাছাড়া আমার আর্থিক অবস্থা ভালো। লিলি'র ভরণপোষণ সব দেওয়া হবে।

আজ হাসান আমাকে ফোন করে জানালো সে এ মাসের ৩১ ডিসেম্বর বিয়ে করবে। আমি যদি বিয়েতে যাই তাহলে সে খুব খুশি হবে। আমি ফোন কেটে দিলাম। হাসানের সাথে আর সম্পর্ক রাখব না বলে। এই নষ্ট সমাজে আমি অনেক দেখেছি- বেশির ভাগ পুরুষ এক নারীতে সন্তুষ্ট থাকে না। হয় সে আরেকটা বিয়ে করে, না হয় পরকীয়া করে অথবা ব্রোথেল এ যায়। অনেক শিক্ষিত ছেলেকে বলতে শুনেছি- এক মেয়ে নিয়ে সারা জীবন কাটিয়ে দেওয়া সম্ভব না। যারা পারে তারা মহান। আমার এক কলিগ প্রায়ই বলতো চল্লিশ এর পর আরেকটা বিয়ে করবো। সে নাকি প্রথম বিয়ের সময় তার বউকেও বলে রেখেছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৫
৩১টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×