somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

ইশতেহার

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ইশতেহারে স্পষ্টভাবে সব দল'ই ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ভালো-ভালো কথা লিখে। নির্বাচনের ইশতেহার কি কি হবে তা দেশের জনগন ঠিক করে দিবে। রাজনীতিবিদদের উচিত জনগনকে জিজ্ঞেস করা- দেশের মানুষ কি চায়? ডিজিটাল বাংলাদেশ বলেন আর অবকাঠামো উন্নয়ন বলেন, এগুলো তো যুগের চাহিদা। যে সরকারই আসুক এগুলো করতে'ই হতো। দেশের জনগন রাজনীতিক দলকে সরকারে পাঠায় দেশের উন্নয়ন করার জন্য। আমরা এটা করছি, আমরা ওটা করেছি বলার দরকার নাই রাজনীতিবিদদের। জনগনের চোখ আছে।
আমি একজন দেশের নাগরিক হিসেবে রাজনীতিবিদদের কাছে যে রকম ইশতেহার আশা করি, তা নিম্মে দেওয়া হলো -

১। সরকারী হাসপাতাল থেকে সমস্ত দালাল কান ধরে বের করে দেওয়া হবে। এবং সবাই যেন ঠিকভাবে চিকিৎসা পায় তা ১০০% নিশ্চিত করা হবে। ডাক্তাররা চিকিৎসায় অবহেলা করলে তাদের তিন মাসের জন্য কারাগারে পাঠানো হবে। ঘুষ বা তদবির করেও পার পাওয়া যাবে না।

২। ফুটপাত দিয়ে কেউ বাইক চালাতে পারবে না। এক কথায় সমস্ত বাইকারদের ভদ্র বানিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে। তারা বাইক নিয়ে রাস্তায় বের হলেই অভদ্র আচরণ করে। জরিমানার ব্যবস্থা করা হবে। পুলিশকে ঘুষ দিয়ে ছাড়া পাওয়া যাবে না।

৩। ফুটপাত দিয়ে যেন জনগন শান্তি মতো হেঁটে তার গন্তব্যে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করা হবে। এবং অলি-গলিতে যারা মাছ আর সব্জির বাজার বসিয়ে পুরো রাস্তা জ্যাম লাগিয়ে দেয়- তাদের জন্য নিদিষ্ট একটা জায়গা দেওয়া হবে। আর যে সমস্ত পুলিশ এই সমস্ত হকারদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা নেয় তাদের কান ধরে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। এরা দেশের শত্রু।

৪। যে সমস্ত হাসপাতালে সামান্য রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে এবং ডাক্তাররা ভিজিট বেশি নেয়, যে সমস্ত হাসপাতালে অযথা রোগীদের কাছ থেকে টাকা বেশি নেয় তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডেলিভারী কেসে কিছুতেই ৪০ হাজার টাকা হতে পারে না। কোনো কোনো হাসপাতাল এক লাখ টাকারও বেশি নেয়। এরকম মামা বাড়ির আবদার কঠোর হস্তে বন্ধ করা হবে।

৫। ইংলীশ মিডিয়াম স্কুল গুলো প্রচুর টাকা বেতন নেয়। তাদের কান ধরে শায়েস্তা করা হবে। একটা কেজি ক্লাশের স্টুডেন্টের বাবা মায়ের কাছ থেকে ১৪ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন নেয়। বাহ!! কি মজা! এদেরকে কঠিন শিক্ষা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে।

৬। লোকাল বাসে উঠতে এবং নামতে যেন কারো কোনো বেগ পেতে না হয়- সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যে সমস্ত ড্রাইভার নিয়ম অমান্য করবে তাকে সাথে সাথে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

৭। একটি দেশের উন্নতির জন্য সব সময় তিনটি খাতকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হয়।
এক, শিক্ষা।
দুই, কৃষি এবং
তিন, পর্যটন।
এই তিনটি খাতে সবার আগে নজর দেওয়া হবে। এবং সৎ, শিক্ষিত, যোগ্য লোকদের এ খাতের দায়িত্ব দেওয়া হবে। বয়স্ক লোকদের এ খাতে দেওয়া হবে না। বিশেষ করে যারা ঠিকভাবে হাঁটতে পারে না। মঞ্চে বসেই ঘুমিয়ে পড়ে। অলস।

৮। অতীতে যারা দূর্নীতি করেছে- তাদের গ্রেফতার করা হবে। এবং তাদের সমস্ত অবৈধ টাকা নিয়ে নেওয়া হবে। তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে নেওয়া হবে। তাদের আত্মসাৎ করা টাকা দিয়ে ছিন্নমূল মানূষদের কল্যানে কাজে লাগানো হবে। আর একটা মানূষও রাস্তায় ঘুমাবে না। ফুটপাতে ঘুমাবে না। ফুটওভার ব্রীজে ঘুমাবে না।

৯। বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা- তারা আইন মানে না। আইননের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না। দেশের প্রতিটা নাগরিককে আইন প্রয়োগ করে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করা হবে। তখন কেউ আইন ভঙ্গ করবে না। তাতে লক্ষ লক্ষ সমস্যার সমাধান এমনিতেই হয়ে যাবে।

১০। রাস্তা ঘাটে-বাসে নারীদের দিকে বেশির ভাগ পুরুষই কুৎসিত ভাবে তাকায়। কিছু বদ গায়ে হাত দেয়। তাদের কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে। জনসম্মখ্যে তাদের কান ধরে উঠবোস করানো হবে। যে দেশ নারীদের সম্মান দেয় না, সে দেশ কিভাবে সামনের দিকে এগোবে?

১১। ঋণ খেলাপীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। ব্যাংকের টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলার দিন শেষ। কানে ধরে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হবে।

১২। সংখ্যালঘুদের বাড়ি ঘর এবং তাদের মুর্তি যারা আগুন দিবে বা ভাঙ্গবে- সাথে সাথে তাদের গ্রেফতার করে তাদের মুখে কালি মেখে, গলায় জুতার মালা দিয়ে সারা শহর চক্কর দেওয়া হবে। জ্বী, তাদের সাথে এরকম করাটাই সমীচীন অন্যথায় তাদের ভালো পথে আনা যাবে না। কারন বদমাইশী তাদের রক্তের সাথে মিশে গেছে।

১৩। যে সব মন্ত্রী-এমপি ক্ষমতায় থেকে অসৎ ভাবে দেশে-বিদেশে গাড়ি, বাড়ি করবে তাদের কান ধরে কারাগারে পাঠানো হবে। এবং তাদের সমস্ত সম্পদ সরকারি কোষাগারে নিয়ে নেওয়া হবে।

১৪। আমাদের দেশে রাজনীতিবিদগন নির্বাচনের আগে অনেক প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচনে জয়ী হবার পর প্রতিশ্রুতি পালন করেন না। যারা প্রতিশ্রুতি পালন করবে না তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।

১৫। মসজিদ, ঈদগাহ মাঠ, মন্দির, এতিমখানা, আস্তানা, খানকা শরিফসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নতির চেয়ে, প্রতিটা গ্রামে যেন একটা লাইব্রেরী এবং স্কুল থাকে তার ব্যবস্থা করা হবে।

১৬। দেশে কোনো চাঁদাবাজ থাকবে না। সরকার দলীয় লোক বা পুলিশ চাঁদাবাজী করতে পারবে না। নো নেভার। চাঁদাবাজি করলেই- তাদের কারাগারে নিক্ষেপ করা হবে। পুরো বাংলাদেশে চাঁদাবাজ দিয়ে ভরে গেছে। বাস স্ট্যান্ড, নদীর ঘাট, ফুটপাত- এদের কান ধরে বিদায় করা হবে। যদি কাজ না থাকে তাহলে তারা রিকশা চালাবে কিন্তু চাঁদাবাজী করতে পারবে না।

১৭। মাদক নিয়ন্ত্রণ করা হবে কঠোর হাতে। সেমিনার, মিটিং আর ভালো কথায় মাদক বন্ধ হবে না। মাদকের সাথে যারা জড়িত তাদের কোনো ভাবেই ক্ষমা করা হবে না। সাথে সাথে গুলি করে মেরে ফেলা হবে। যে পর্যন্ত একটা মাদক বিক্রেতা থাকবে সে পর্যন্ত গুলি চলবে। ডাইরেক্ট গুলি। অন্য কোনো উপায় নেই, কঠোর হওয়া ছাড়া।

১৮। সরকারী চাকরীতে কেন ঘুষ লাগবে? অথবা যে কোনো চাকরীতে কেন ক্ষমতাবান মামা চাচার ফোন লাগবে? যার মামা চাচা নেই, সে কি করবে? চাকরী পেতে ঘুষ এবং মামা চাচার ফোন চিরতরে বন্ধ ঘোষনা করা হবে। যার যোগ্যতা আছে সে এমনিতেই চাকরি পাবে।

পোষ্টটি অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে তাই এখানেই শেষ করছি।
আরও অনেক কিছু লেখার ছিল। যাই হোক, আসলে দেশ থেকে দুর্নীতি বন্ধ করতে পারলে এমনিতেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আর ভালো কাজ করার ইচ্ছা থাকলে- ভালো কাজ করা যায়। ভালো কাজ করলে মানুষ আপনাকে ভালোবাসলে। সারা জীবন মনে রাখবে। শুধু অসৎ টাকায় পাজারো গাড়িতে ঘুরলেই হবে না। টাকার বিনিময়ে কোনো অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হলেই হবে না। দেশকে ভালোবাসুন। দেশের মানুষকে ভালোবাসুন। দেশের জন্য কাজ করুন। জয় বাংলা।

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৫
২৫টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×