ঢাকা শহরের প্রতি আমার অনেক রাগ।
অথচ এই শহর ছেড়ে কোথাও গেলে দুই দিনের বেশি থাকতে ভালো লাগে না। শহরে ফেরার জন্য অস্থির হয়ে থাকি। শহরে অনেক অসুবিধার মধ্যেও কিছু সুবিধা আছে- তা অস্বীকার করা যায় না।। বাড়ির কাছেই হাসপাতাল, দোকানপাট, শপিং মল, ফার্মেসী, বাজার। গ্রামে এই সুবিধা নেই। কেউ অসুস্থ হলে হুট করে হাসপাতালে আনা যায় না। অনেক দিকদারি। কাঁচা রাস্তা, রিকশা বা গাড়ি পেতে হলে বাজার পর্যন্ত যেতে হয়। এতক্ষনে রোগীর অবস্থা কাহিল। গ্রামে কোনো কিছু কিনতে হলেও বাজারে যেতে হয়। ঢাকা শহরে প্রতিটা অলিতে-গলিতে দোকান পাট থাকবেই। তবে ঢাকা শহরে খুব একসিডেন্ট হয়। গ্রামে হয় না। আবার গ্রামে টাটকা শাকসবজি পাওয়া যায়। গরুর দুধ পাওয়া যায়। শহরে খাঁটি দুধ পাওয়া যায় না। পানি মেশায় অথবা গুড়ো দুধ পানিতে মিশিয়ে বলে দেশী গরুর দুধ। তবে গ্রাম থেকে শহর সব দিক থেকেই এগিয়ে আছে। এই জন্যই তো শহরে এত লোকের বাস। এই শহরে আমি ঘুরে বেড়াই। পকেটে মোবাইল থাকে, কোনো কিছু ভালো লাগলে ছবি তুলে নিই।
১।
ঢাকাইয়া ভাষায় আমরুজ বলুন আর সাদা জাম বলুন, আপনাকে স্বীকার করতেই হবে, জামরুলের মতো নিরীহ-সাধাসিধে ফল খুব কমই আছে। ক্রান্তীয় অঞ্চলের ফল জামরুল। ভারত, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডে প্রচুর জামরুল হয়।
২।
'দারিদ্র' এই ছেলেকে মহান করে নি। করেছে কলা বিক্রেতা। অথচ এই ছেলের এখন স্কুলে যাওয়ার কথা। হেসে খেলে বড় হওয়ার কথা। এই সমাজে এ রকম ছেলের সংখ্যা প্রচুর।
৩।
ঈদের কয়েকটা দিন শহরটা বেশ ফাঁকা ফাঁকা থাকে। তারপর আবার আগের মতোন অবস্থা।
৪।
প্রেস। এখানে দৈনিক পত্রিকা ছাপানো হয়। সারারাত প্রেসে কাজ হয়। সকালে সারা দেশে পত্রিকা ছড়িয়ে যায়। এটা 'যায় যায় দিন' পত্রিকার নিজস্ব প্রেস। অবশ্য এই প্রেস থেকে অনেক পত্রিকা, ম্যাগাজিন ছাপানো হয়।
৫।
রাস্তার মোড়ে এক খাম্বার এই অবস্থা। পুরো ঢাকা শহরেই এই রকম বহু খাম্বা আছে। সিটি করপোরেশন ব্যবস্থা নেয় না কেন? কেন? তারা কি এই সব দেখে না? আগামী নির্বাচনের সময় তারা কি বলবে?
৬।
রাস্তার পাশে এক চায়ের দোকানে। অসংখ্য মানুষ এখানে কলা রুটি খায়। প্রতি পিস কলা দশ টাকা করে।
৭।
আকাশ ভরা মেঘ। রাস্তা ফাঁকা। ঈদের আমেজ।
৮।
না কোনো গাড়ি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়নি রিকশাটিকে। হঠাত রিকশার ডান পাশের চাকা ভেঙ্গে যায়। একজন যাত্রী ছিল। সে অবশ্যই ব্যথা পেয়েছে।
৯।
ঢাকা শহর একেবারে বৃক্ষহীণ নয়। কিছু গাছপালা আছে। গাছপালা দিয়ে ঢাকা মন্ত্রীপাড়া।
১০।
মাটি নয়, ইট পাথরেও প্রান প্রতিষ্ঠা হয়।
১১।
ওই যে রাস্তার ওই পাড়ে ধানমন্ডি। বঙ্গবন্ধুর বাড়ি। ৩২ নম্বর।
১২।
আমাদের বাসার কাছেই তিন হাত সমান এই মাংসের দোকান। সারাদিন তারা পাগলের মতো মাংস বিক্রি করে। ঈদের সময় তারা পুরো ফুটপাত দখল করে মাংস বিক্রি করে। লোকজন লম্বা লাইন ধরে মাংস কিনে। এই মাংসের দোকানের মালিক এখন বহু টাকার মালিক। সে পেছনে একটা পাঁচ তলা বিল্ডিং কিনে নিয়েছে। একতলা দুইতলা ফানির্চারের ব্যবসা শুরু করেছে। এই লোক মাংস কিনতে আসা মানুষকে ঠকায়। আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখি। ঈদের দুই দিন আগে বিশটা গরু এনেছে। বিশ টাই বিক্রি হয়েছে। ব্যস্ত রাস্তা। ব্যস্ত ফুটপাত। অথচ রাস্তার মধ্যেই গরু জবো করে। কাটে, বিক্রি করে। পাশের বাচ্চাদের কোচিং সেন্টার।
১৩।
তেজগা, লিং রোড। ঈদের চার দিন আগে। প্রচন্ড রোদ। চামড়া পুড়ে যাচ্ছে গরমে এমন অবস্থা। আমার পুরো শরীর ঘামে ভেজা। বাচ্চারা এক বিল্ডিং এর সামনে চৌবাচ্চায় লাফাচ্ছে। আমারও ইচ্ছা করছিল ওদের মতো করে লাফাই।
১৪।
মগবাজার, ওয়ারলেস। ইফতারীর কিছুক্ষন আগে। আমি হেঁটে হেঁটে বাসায় যাচ্ছিলাম।
১৫।
রাস্তায় ভ্যানে করে কাঁচের জিনিসপত্র বিক্রি করছে। পুলিশ দাবড়ানি দিলে, ভ্যান চালিয়ে বিক্রেতা গান গাইতে গাইতে অন্যত্র চলে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০১৯ রাত ১২:০৪