যারা কবিতা লিখে তারা একটু বেশি নারীঘেষা হয়।
যারা কবিতা লিখে, এদের খেয়ে-দেয়ে আর কাজ নেই।
যারা কবিতা লিখে, এরা সমাজের বোঝা।
যারা কবিতা লিখে, অন্য কিছু পারে না বলেই কবিতা লিখে। কবিতা লিখে --- কি উল্টায়ে ফালায়েছে তারা? কোনো কবি কি আজ পর্যন্ত পেরেছে, কবিতা লিখে দেশের বা সমাজের বা পরিবারের অথবা নিজের ভালো করতে? কি হয় কবিতা লিখে?? বাজারে দ্রব্য মূল্যের দাম কমে? দারিদ্রতা কমে? এক কথা বলতে গেলে কবিতা দিয়ে কিচ্ছু হয় না। কিচ্ছু না। তবু একদল নির্বোধ লোক কবিতা লিখেই চলেছে। আমাদের মতোন দরিদ্র দেশ গুলোতে কবিতার পাঠক খুব বেশি কম। একটা কবিতা গড়ে দশজন লোক পড়ে না। আর কবিতার মানও অতি নিম্ম। এই দরিদ্র দেশে কবিতা লেখা ঠিক না। মানুষের পেটে ভাত নেই। কবিদের এটা বুঝা উচিত। কবিতা না লিখে দেশের মানুষের জন্য কিছু করা উচিত। কবিতার বই দুই শ' ছাপালে চারটা বিক্রি হয় না। শেষে কবি নিজের বই বিক্রির জন্য লোকের হাতে পায়ে ধরে। আর যার টাকা আছে সে নিজের টাকা দিয়ে সমস্ত বই কিনে মানুষকে উপহার দেয়। যাকে উপহার দেওয়া হয়, সে-ও কবিতা পড়ে না। শেষমেষ কবিতার বইটা পড়ে থাকে খাটের কোনায় অথবা আলমারি পেছনে। এটা বাস্তব। বাস্তব মেনে নেওয়া উচিত কবিদের। আবেগ দূরে রাখুন। আবেগ দিয়ে পেট ভরে না।
সব সময় যারা বই পড়ে আর থিয়োরি কপচায়, তারা দেশের কোনো কাজে লাগে না-ঠিক এই কথা ভাবতে-ভাবতে, একজন কবি শাহবাগের ব্যস্ত রাস্তা পার হচ্ছেন। কবির বয়স এখন চল্লিশ। এই বয়সে ভালোবাসা রুপান্তরিত হতে থাকে- স্নেহ-মমতায়। কবি'র ধারনা, ভালোবাসার চেয়ে স্নেহ ও মমতার শক্তি অনেক বেশি। কিন্তু কবি বুঝেন না বা বুঝতে চান না, স্নেহ মমতা আর ভালোবাসার চেয়ে হাজার গুন বেশি শক্তিশালী টাকা। কবিতা লেখা যায় ভুরি ভুরি। কিন্তু কবিতার চেয়ে বেশি দরকার টাকা ইনকাম করা। রিকশাওয়ালার মধ্যেও আবেগ আছে। সেও ইচ্ছা করলে কবিতা লিখতে পারে। যারা কবিতাকে মহিমান্বিত করে তারা অবশ্যই নির্বোধ।
যাই হোক, উদ্দেশ্যবিহীন হাঁটতে হাঁটতে কবি নিউ মার্কেট এলাকার দিকে চলে আসছেন-
একাএকা তার রাস্তায় হাঁটতে মন্দ লাগে না, অনেক রকম 'মানুষ' দেখা যায়। কবিতার পল্ট মাথায় আসে। এই তো মাত্র;ই একটা কবিতার লাইন চলে এলো- ''দুঃখজনক ব্যাপার হলো- নদী কখনও থামে না, মানুষের জীবন হঠাৎ থেমে যায়।''
কবির চায়ের পিপাসা পেয়েছে, রাস্তার পাশের দোকান থেকে এক কাপ চা হাতে নিলেন। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে তার মেজাজ বিগড়ে গেল, চা না গরুর মুত খাওয়াচ্ছে? কবি সহ্য করে গেলেন। কবিদের সহ্য করার ক্ষমতা অসীম। চা ফেলে দিয়ে একটা পান চাইলেন কবি। খয়ার ছাড়া, জর্দা ছাড়া পান। বিয়ে বাড়িতে তিনি অনেককে দেখেছেন- খাওয়ার পর কেউ কেউ একসাথে তিনটা পান
মুখে দিয়ে জন্তুদের মতো চিবোয় সেই অবস্থায় আবার কথা বলেতে আসে। ছিঃ। পান মুখে দিয়ে কবির মেজাজ আবারও বিগড়ে গেল- পান দোকানদার বিরাট বদ, না করা সর্তেও জর্দা ও খয়ার দু'টোই দিয়েছে। এই দেশের মানুষ গুলো বদ, কবি মনে মনে ভাবলেন এবং কুৎসিত তিনটা গালি দিলেন। এই দেশের জন্যই কোনো উন্নতি হচ্ছে না। তার ইচ্ছা করছে পানওয়ালার শার্টের কলার ধরে, কানের নিচে একটা দিতে। তিনি 'কবি' বলে পান দোকানদারকে মাফ করে দিলেন। ঠিক এই মুহূর্তে কবির মাথায় একটা কবিতার লাইন চলে এলো-'নগরে যারা থাকে, তারা সবাই নাগরিক চেতনাসম্পন্ন হয় না।'
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১৯ সকাল ১০:২৬