somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

অতি প্রাকৃত

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিজ্ঞান অথবা প্রকৃতির নিয়মের দ্বারা যার ব্যাখ্যা সম্ভব না তাই অতিপ্রাকৃত।
সায়েন্স ফিকশন গল্পগুলো মূলত অতি প্রাকৃত গল্প। আবার ধর্ম বলতে এই অতি-প্রাকৃত শক্তিতে বিশ্বাস ও এর প্রতি মানুষের ব্যবহার, ক্রিয়াকলাপ তথা মনোভাবকে বুঝায়। ব্লগাররা অনেক সময় গল্প লিখেন এবং সে গল্পগুলো 'অতি প্রাকৃত' গল্প বলে থাকেন। যদিও তাদের বেশির ভাগ গল্পগুলো 'অতি প্রাকৃত' হয় না। যাই হোক, সে আলোচনায় আমি যাবো না। আমার নিজের লেখা 'অতি প্রাকৃত' গল্প গুলোও অতি প্রাকৃত হয় না। 'অতি প্রাকৃত' ঘটনা আমার সাথে ঘটেছে। হরহামেশাই ঘটে। যায় ব্যখ্যা আমি খুঁজে পাই না। অবশ্য কারো কাছে ব্যখ্যা খুঁজতে যাইও না। আজ সেই অতি প্রাকৃত গল্পই বলব।

বিভিন্ন উৎসবে গ্রামে মেলা হয়।
এই গ্রাম্যমেলা আমার ভীষন পছন্দ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘প্রতিদিন মানুষ ক্ষুদ্র দীন একাকী। কিন্তু উৎসবের দিন মানুষ বৃহৎ, সেদিন সে সমস্ত মানুষের সঙ্গে একত্র হইয়া বৃহৎ, সেদিন সে সমস্ত মনুষ্যত্বের শক্তি অনুভব করিয়া মহৎ’। আমাদের দেশে এমন কোন জেলা বা উপজেলা নেই যেখানে মেলার আয়োজন করা হয় না। মেলা মানেই নাগর দোলা, পুতুল নাচ, বায়স্কোপ, হাওয়াই মিঠাই, বাদর নাচ, সাপ খেলা, লাঠি খেলা, পাপড় ভাজা, নানার রকম মাটির জিনিসপত্র, মেয়েদের চুড়ি-ফিতার দোকান। বাংলাদেশের বহু অঞ্চলের মেলাতে আমি গিয়েছি। আমার কাঁধে থাকে ক্যামেরা। যেটা ভালো লাগে ছবি তুলে নিই।

যেসব মেলায় আমি গিয়েছি-
গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দির মেলা, পাবনার বোঁথরের চড়ক মেলা, হবিগঞ্জের মুড়াবন্দ দরবার শরীফের মেলা, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ির মেলা, ফাইলা পাগলার মাজারের মেলা, রাঙামাটির পানছড়ি বৌদ্ধ মেলা, দিনাজপুরের নেকমর্দন মেলা, কুমিল্লার শীতলার মেলা, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের বারুনী মেলা, নরসিংদীর শাহরানীর মেলা, শরীয়তপুরের সুরেশ্বর মেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাতমোড়ার মেলা, যশোরের মধুমেলা, পঞ্চগড়ের নিরাশির মেলা, বরিশালের বিপিনচাঁদ ঠাকুরের মেলা, তাড়াইলের মাঘী পূর্ণিমার মেলা, কমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাতিসার মেলা, মুন্সীগঞ্জের ভাগ্যকূল মেলা, বিক্রমপুরের রামপালের মেলা, রংপুরের সিন্দুরমতি মেলা, নেত্রকোনার চন্ডীগড় মেলা, পিরোজপুরের খারবাক মেলা, খুলনার মোল্লার হাট মেলা, বাগেরহাটের খানজাহান আলীর মেলা, কুষ্টিয়ার মহরম মেলা, ছেঁউড়িয়ার লালন মেলা, নড়াইলের সুলতান মেলা ইত্যাদি।

বগুড়ার মহাস্থান গড়ের মেলার কথা আজ বলব।
সকাল থেকেই মেলা জমজমাট। পুরো মাঠে অসংখ্য দোকানপাট। হাজার হাজার মানুষ। চারিদিকে মানুষের কোলাহল। আমি মনের সুখে ঘুরে বেড়াচ্ছি। খুব ভালো লাগছে। নানান রকম খাবার বিক্রি করছে। যেটা ভালো লাগছে খাচ্ছি। চুড়ির দোকানে খুব ভিড়। নানান বয়সী মেয়েরা পাগলের মতো কাঁচের চুড়ি কিনছে। বিক্রেতার পাগলের মতো অবস্থা। চারিপাশ নিখুঁতভাবে খুটে দেখা আমার দীর্ঘদিনের অভ্যাস। আমি দেখলাম, একটা মেয়ে চুড়ির দোকানের সামনে মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটা সুতি শাড়ি পরা। শাড়িটা পড়েছেও কুচি ছাড়া, গ্রামের মহিলাদের মতোন করে। মাথা ভর্তি চুল। চুল একদম কোমর ছাড়িয়ে গেছে। সাজ বলতে শুধু মাত্র চোখে কাজল। মেয়েটাকে এত সুন্দর লাগছে যে আমি চোখ ফেরাতে পারছি না। বয়স কত হবে? ১৬/১৭।

আমি মেয়েটার কাছে গেলাম।
বললাম, তুমি এরকম মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে আছো কেন? তুমি কি চুড়ি নেবে? তোমার কোন রঙের চুড়ি পছন্দ? মেয়েটা কিছু বলল না। আমার দিকে তাকালো। যেন আমাকে বুঝতে চেষ্টা করছে- আমি দুষ্টলোক না, ভালো লোক। আমি বললাম, ভয় নেই। আমি মন্দ লোক নই। মেয়েটা হেসে দিলো। আমার কথা তার বিশ্বাস হয়েছে বোধহয়। মেয়েটা ইচ্ছে মতো চুড়ি কিনলো। দুই হাত ভর্তি করে চুড়ি পড়লো। সামান্য কাঁচের চুড়িতে এত খুশী হওয়ার কি আছে! আমরা পাপড় ভাজা খেলাম। শন পাপড়ি খেলাম। নাগরদোলায় উঠলাম। মেয়েটা প্রচন্ড আনন্দিত। মেয়েটার আনন্দে আমিও আনন্দিত। আমি মেয়েটার অনেক গুলো ছবি তুললাম। থাক কিছু সৃতি আমার কাছে। বাকি জীবনে হয়তো মেয়েটার সাথে আমার দেখা হবে না।

আমরা মেলার ভিড়, হই হট্রগোল থেকে বেড়িয়ে এলাম।
আমার ইচ্ছা আমি মেয়েটাকে তার বাসা পর্যন্ত দিয়ে আসবো। আমি বললাম, তোমার বাসা কোন দিকে?
মেয়েটা বলল, আমার কোনো বাসা নেই।
তাহলে তুমি কই থাকো?
মেয়েটা বলল, আমি আকাশে থাকি।
তোমার ভাই বোন, বাবা মা?
আমার কেউ নেই। আমি একা।
আমি বুঝলাম মেয়েটা আমার সাথে মজা করছে। হেয়ালি করছে।
মেয়েটা বলল, আমার যাবার সময় হয়েছে। আমি যাচ্ছি। এই বলেই মেয়েটা অদৃশ্য হয়ে গেল।

আমি প্রচন্ড অবাক! বিস্মিত! এটা কি করে সম্ভব! রক্তমাংসের একটা মানুষ অদৃশ্য হয়ে গেল! আমার মাথায় প্রচন্ড যন্ত্রনা শুরু হলো। পরের দিন আমি ঢাকা চলে এলাম। সবচেয়ে অবাক বিষয় মেয়েটার অনেক গুলো ছবি তুলেছিলাম। কিন্তু ক্যামেরাটায় মেয়েটার একটা ছবিও নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪৫
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×