somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

এই সমাজ- ৩৪

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার ঘরের বাজার আমি'ই করি।
দীর্ঘদিন বাজার করতে করতে আমি বেশ অভিজ্ঞ হয়ে গেছি। অভিজ্ঞ হওয়ার পরও লোকজন আমাকে ঠকায়। আমি কাউকে বিশ্বাস করেছি এবং সে আমাকে ঠকিয়েছে, এই বিষয়টা আমাকে অনেক কষ্ট দেয়। গতকাল আড়াই কেজি গরুর মাংস কিনেছি। সুরভি বলল, মাংসটা ভালো আনোনি। আমি বললাম, মাংস ঝুলানো ছিলো। আমি নিজে বেছে মাংস নিয়েছি। মাংস তো খারাপ হওয়ার কথা না! আসলে মাংস আমি ভালোটাই বেছে নিয়েছিলাম। ওরা আমার সামনে ভালো মাংসটা কেটেছে কিন্তু দেওয়ার সময় অন্য তেল চর্বি মাংসের প্রয়োজনীয় অংশ দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এরকম তো কথা ছিলো না। আমি তো টাকা কম দেই নি। যদিও সামান্য মাংস, কিন্তু আমার মনটা ভীষন খারাপ হয়েছে।

বাইরে বের হলে, সাধারনত আমি খালি হাতে বাসায় ফিরি না।
বাসার জন্য কিছু না কিছু কিনে নিয়ে যাই। যদি পকেটে টাকা নাও থাকে তাহলে পাড়ার দোকান থেকে একবাটি আইসক্রীম বা কোনো ফল এক, দুই কেজি বাকিতে নিয়ে যাই। দীর্ঘদিনের অভ্যাস। ঢাকা শহরের লোকজন গুলো প্রচন্ড বদমাইশ। ভয়াবহ মিথ্যাবাদী। আজকাল সত্য কথা কেউ বলে না। মিথ্যা বলতে বলতে এমন অবস্থা হয়েছে যে- দরকার না থাকলেও এখন তারা মিথ্যা বলে। মিথ্যা তাদের রক্তের সাথে মিশে গেছে। রিকশাচালক থেকে শুরু করে সব্জি বিক্রেতা। সব বদমাশ। মন মানসিকতা অতি নিম্মমানের। একজন সাংসারিক মানুষও যদি ঘর থেকে বাইরে বের হয়, অমনি সে অমানুষ হয়ে যায়। অথচ ঘরে তার মমতাময়ী স্ত্রী, ভালোবাসার সন্তান আছে। এই শহরে কোনো ভালো লোক নেই।

সেদিন বাসার সামনে থেকে চারটা ইলিশ মাছ কিনলাম।
ইলিশ গুলো মাঝারি সাইজের। প্রতিটা ইলিশের ওজন ৭/৮ শ' গ্রাম করে। এক হালি মাছের দাম নিলো- দুই হাজার টাকা। প্রতি পিছ মাছ পাঁচ শ' টাকা করে। বিক্রেতা বলল, স্যার একদম পদ্মার ইলিশ। খাইয়া খুব স্বাদ পাবেন। গন্ধে মন বইরা (ভরে) যাইবো। মাছ ভাজার জন্য তেল লাগবে না। মাছের তেলেই মাছ ভাজতে পারবেন। আমি খুব বুঝতে পারছি, মাছ বিক্রেতা মিথ্যা কথা বলছে। এগুলো পদ্মার ইলিশ মাছ না। পদ্মার ইলিশ সাধারণ ঢাকায় আসে না। এবং এই মাছ খেতে খুব স্বাদ হবে না। বিক্রেতা মিথ্যা কেন বলছে? জেলেরা যখন এই মাছ ধরেছে তখন কি বিক্রেতা জেলেদের সাথে ছিলো পদ্মা নদীতে? নিজের চোখে দেখেছে মাছ ধরতে? অথবা এই মাছ বিক্রি করার আগে কি বিক্রেতা নিজে রান্না করে খেয়ে এসেছে। তাই বলতে পারছে- 'খেতে খুব স্বাদ হবে? মাছের তেল দিয়েই মাছ ভাজা যাবে। সব দিক মিলিয়ে বলা যায়- মানুষ আর মানুষ নেই। সব অমানুষ হয়ে গেছে।

বিকালে হাঁটতে বের হয়েছি।
দেখি রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে এক লোক আমড়া বিক্রি করছে ভ্যানে করে। অথচ সে আমড়া না বলে, বলছে- 'বরিশাল' 'বরিশাল'। রীতিমতো চিৎকার করছে। অর্থাৎ এগুলো বরিশালের আমড়া। শুনেছি, বরিশালের আমড়া সবচেয়ে ভালো হয়। বড় বড় আমড়া হয়। খেতে মিষ্টি স্বাদ হয়। অথচ বিক্রেতা যে আমড়া বিক্রি করছে সেগুলো ছোট ছোট আমড়া। সম্ভবত বরিশালের আমড়া না। তবুও আমি দুই কেজি আমড়া কিনলাম। সাধারণত এরকম বিক্রেতাদের কাছ থেকে আমি দামাদামি করে কেনাকাটা করি না। আমি মনে করি, এরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ক'টাকা আর লাভ করবে। অথচ ওরা ক্রেতাকে ঠকায়। আমাকেও ঠকালো। ওজনে কম দিলো এবং ৫/৭ টা আমড়া পচা দিলো। আমার কথা হলো- আমি তো দামাদামি করি নি বা টাকা কম দেই নি। যা চেয়েছে তাই দিয়েছি। আমাকে ঠকালো কেন? আসলে মানুষ ঠকানো এই শহরের মানুষের অভ্যাস হয়ে গেছে।

বাংলাদেশের সমস্ত ব্যবসায়ীদের একটাই চিন্তা-
কিভাবে ক্রেতাকে ঠকানো যায়। ক্রেতাকে ঠকাতে পারলেই বিক্রেতারা মনে করে 'জিতে গেলাম'। এই মানসিকতা 'অতি সস্তা' মানসিকতা। সস্তা মানসিকতার লোক দিয়ে এই শহর ভরে গেছে। ওষুধ এর দোকান গুলো পর্যন্ত ওষুধের দাম বেশী রাখে। মানুষের কুটিলতা, জটিলতা আর নোংরামী গুলো তাদের মুখে ভেসে উঠে। আমি রাস্তায় বের হলেই সমস্ত মানুষের মুখে কুটিলতা আর জটিলতা গুলো স্পষ্ট দেখতে পাই। এজন্য আমি কোনো মানুষের সাথে সহজেই বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিতে পারি না। এই সমাজ নষ্ট হয়ে গেছে। পচে গেছে। এই শহরে কোথাও শান্তি নেই। এই শহরে কেউ ভালো নেই। এই শহরে কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না। এই শহরে কেউ কাউকে ভালোবাসে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১৩
২০টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×