গতকাল বাসায় অনুষ্ঠান গেছে।
ভাবীর জন্মদিন ছিলো। জন্মদিন মানেই ভালো মন্দ রান্না করে খাওয়া। রানা করেছে সুরভি। মোরগ পোলাউ। ফার্মের মূরগী না। মোরগ দিয়েই মোরগ পোলাউ রান্না হয়েছে। সাথে ছিলো গরুর টিকিয়া আর স্প্রাইট। খাওয়া শেষে পায়েশ আর পুডিং। সুরভির রান্না ভালো হয়েছে। আমি পুডিং খাই না। তবে পায়েশ খাই। পায়েশটা ভালোই হয়েছে। আমি নিজে আমুলিয়া থেকে খাটি গরুর দুধ এনেছি। সেই দুধেই পায়েশ রান্না হয়েছে। দুপুরের খাওয়াটা বেশ হয়েছে। বেশি খেয়ে ফেলেছি। যখনই ভাবি কম খাবো। তখনই আরো বেশি খাওয়া হয়ে যায়। আমার পেট বেড়ে গেছে। সব গুলো প্যান্ট টাইট হচ্ছে। আর কিছু বাড়ে না, শুধু পেট বাড়ে! আজিব!!
রাতে ভাবী বাইরে থেকে খাবার আনিয়েছেন।
চিকেন ফ্রাই, ফ্রাইড রাইস আর ভেজিটেবল। তার জন্মদিন উপলক্ষ্যে সে সবাইকে খাওয়াবে। দুইটা কেক কাটা হয়েছে। একটা কুপার আরেকটা মিঃ বেকারের কেক। খেতে ভালোই লেগেছে। সুরভি ঘরে দই বানিয়েছে। আইসক্রীম বানিয়েছে। বেশ খাওয়া দাওয়ার মধ্যে দিয়ে ভাবীর জন্মদিন পালন করা হলো। এরকম জন্মদিন প্রতিদিন আসুক। তবে আমাদের বাসায় প্রতিমাসে একটা করে জন্মদিন পালন হয়। কারন আমাদের বাসায় বারো জন সদস্য। এছাড়া বিবাহ বার্ষকী আছে। বিশেষ বিশেষ দিন তো আছে। করোনার কারনে এখন রেস্টুরেন্টে যাওয়া হয় না। তাই সবাই মিলে বাসায় ভালো মন্দ রান্না করে খাই।
গতকাল রাতের কথা।
সুরভি বলল, ভাত খেতে ইচ্ছা করছে না। আমি বললাম, কি খেতে ইচ্ছা করছে? সুরভি বলল, নুডুলস। আমি বললাম, বানাও নুডুলস। সুরভি বলল, আমার নুডুলস রান্না করতে ইচ্ছা করছে না। আমি বললাম, কোনো অসুবিধা নাই। আমি ভালো নুডুলস রান্না করতে পারি। রাত এগারোটায় সমস্ত খাবার ফ্রিজে রেখে দিলাম। এবং আমি নুডুলস রান্না করলাম। আমি ভালো নুডুলস রান্না করতে পারি। খেতে খুব স্বাদ হয়। তবে দুই মিনিটে নুডুলস বানাতে পারি না। সুরভি আমার বানানো নুডুলস খেয়ে মুগ্ধ! বলল, এখন থেকে সব সময় নুডুলস তুমি বানাবে। সাথে সাথে সে তার কয়েকটা বান্ধবীকে ফোন করে জানালো- আমি নুডুলস ভালো রান্না করতে পারি। এবং বান্ধবীরা বলেছে তারা আমার রান্না করা নুডুলস খেতে আসবে।
আমার এক বন্ধুর ধারনা আমার অনেক টাকা।
সে প্রায়ই আমার কাছ থেকে টাকা লোন নেয়। আমিও ধার দেই। অবশ্য বন্ধু সময় মতো টাকা ফেরত দিয়ে দেয়। কিন্তু করোনার শুরুতে ২০ হাজার টাকা নিলো। সেই টাকা আজও দিলো না। সাত মাস হয়ে গেলো। অথচ বন্ধুর সাথে নিয়মিত দেখা হয়। চা খাই, গল্প করি। করোনার কারনে বন্ধুর চাকরি চলে যায়। আমার বন্ধুটা ভালো। মায়া হয় আমার অনেক ওর জন্য। আমি কয়েকজনকে ওর চাকরির জন্য বলেছি। যাদেরকে চাকরির কথা বলেছি, ওরা কেউই আর এখন আমার সাথে যোগাযোগ করে নি। এমন কি ফোন করলেও ধরে না। আজিব! চাকরি না দিতে পারলে দিবি না, ফোন ধরতে সমস্যা কি?
চায়ের দোকানের বিল্লালের করোনা ভালো হয়েছে।
সে ঢাকা ফিরে এসেছে। দোকান খুলেছে। গতকাল তার দোকানে গিয়েছিলাম। চা টা খেয়েছি। বিল্লাল গ্রাম থেকে আমার জন্য চারটা নারকেল এনেছে। সুরভি সেই নারকেল দিয়ে আজ নাড়ু বানিয়েছে। চার টা হরলিক্সের বোতলে ভরে রেখে দিয়েছে। নারকেলের নাড়ু খেতে আমার ভালো লাগে। আমার মা নারকেলের নাড়ুটা সেইরকম বানায়। মার কাছ থেকে সুরভি শিখে নিয়েছে। মার থেকেও সুরভি এখন ভালো নাড়ু বানাতে পারে। সেদিন ভাবী তালের পিঠা বানিয়েছিলো। খেতে একটুও ভালো হয় নাই। তালের পিঠা আমার মা ভালো বানায়। এখন আর মা কোনো রান্না করে না। মাকে রান্না করতে বললে বলে, আমি সব রান্না ভুলে গেছি।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২১