somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

মানুষ এবং তাদের ধর্ম

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রত্যেক ধর্মই অহিংস কিন্তু সহিংস হচ্ছে মানুষ।
ইন্দিরা গান্ধীর স্বামীর নাম ছিলো ফিরোজ গান্ধী। নাম শুনে মনে হতেই পারে ফিরোজ মানে মুসলিম। আসলে শুধু মাত্র নাম দিয়ে মানুষের ধর্ম বুঝা যায় না। এই সমাজের ৯২ ভাগ মানুষই নিজের ধর্মের বা বিশ্বাসের বাইরে চিন্তা করতে অক্ষম। প্রতিটি ধর্মেরই এক বা একাধিক ধর্মীয় বই, ধর্মগ্রন্থ থাকে। প্রতিটি বই-ই আমাদের ধর্মের বিষয়ে জ্ঞানের পাশাপাশি জীবন ধারণের সঠিক পথ বলে দেওয়া থাকে। একসময় ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ মিলে এক ভারত ছিলো। 'হিন্দু' শব্দটি বহিরাগতরা হিন্দুদের দিয়েছে। মূলত সিন্ধু নদের তীরের মানুষদের 'হিন্দু' বলা হতো। সেই হিসেবে পাকিস্তানের মুসলমানরাও জাতিতে হিন্দু জাতি, বাংলাদেশি মুসলমানেরাও জাতিতে হিন্দু জাতি। মানুষকে ধর্ম দিয়ে ভাগ করা ঠিক না। মানুষের আসল পরিচয় সে 'মানুষ'। অবশ্য ধর্মের কারনে দেশভাগ হয়ে গেলো! বিভিন্ন ধর্মের লোকেরা মিলেমিশে থাকতে পারে না।

সৃষ্টিকর্তার কাছে রাজা ও ভিখিরি সব এক।
হিন্দু ধর্মের মূল আদি গ্রন্থ বেদগ্রন্থ। হিন্দু ধর্মের গ্রন্থগুলো সরাসরি ঈশ্বর থেকে কোনো ফেরেশতার মাধ্যমে আসে নি। প্রাচীন মনিষীরা ধ্যানরত অবস্থায় ঈশ্বরের সান্নিধ্যে আসেন এবং ঈশ্বর থেকে অনুপ্রানিত হয়ে নিজেরাই বেদগ্রন্থ রচনা করেন। রামায়ন হচ্ছে রামের যুগের কাহিনী। সেই সময়ে রাম কিভাবে রাবনের কাছ থেকে নিজ স্ত্রী সীতাকে উদ্ধার করে, দুষ্টের দমন করে শিষ্টের পালন করেছেন সেই কাহিনীর পৌরানিক রূপ হচ্ছে রামায়ন। মহাভারত হচ্ছে ধর্মযুদ্ধের কাহিনী। কৃষ্ণ এখানে অন্যতম চরিত্র। যিনি রাম, তিনিই কৃৃ্ষ্ণ। উনারা দুজনই বিষ্ণু দেবতার আবতার। মানে উনারা এক যুগে ছিলেন রাম, এক যুগে কৃৃ্ষ্ণ। সে যাকগে, আস্তিকতা বা নাস্তিকতা দুটি দর্শন। দর্শন থাকে মননে। কর্মে সঠিক থাকলে জীবন ঠিকই তার প্রবাহে চলবে।

সবার সব ধর্মের সব ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা উচিত।
সবচাইতে বড় ধার্মিক ব্যাক্তি হলেন- যার প্রার্থনাস্থল হচ্ছে বিবেক, সবচাইতে বড় পূণ্য হচ্ছে মানবতার সেবা। এই রকম ধার্মিক মানুষ আমার আত্মার আত্মীয়, পরম সুহৃদ। পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়লেই সে ভাল ব্যক্তি তা আমি মনে করি না। বহু দুষ্টলোককে দেখেছি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরতে। অনেক ধার্মিককে দেখেছি স্ত্রীর গায়ে হাত তুলতে। আমার মনে হয়, মানুষের মনে ধীরে ধীরে ঈশ্বরের প্রতি ভয় ও ভক্তি আরো কমবে। যদি এমন হতো- এক সুন্দর সকালে এই বিশ্বের সবাই নাস্তিক হয়ে যাবে। তাতে এই বিশ্বের লাভ বই ক্ষতি কিছু হবে বলে তো মনে হয় না। মানবজাতির ইতিহাস মাত্র ২ লক্ষ বছরের। আর সংগঠিত ধর্মের বয়স তো মাত্রই ৫ হাজার বছরের কাছাকাছি। তাই ধর্ম ছাড়াও এই বিশ্বসংসার বেশ ভালো ভাবেই চলবে আশা করি। একজন আসল আস্তিক হওয়ার জন্য অবশ্যই একজন ভালো নাস্তিক হওয়া প্রয়োজন। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ স্বামী বিবেকানন্দ হতে'ই পারেন।

মুক্তমনা কারা? যার মন মুক্ত।
মন মুক্ত মানে সে কোনো ছাপার অক্ষরের নির্দেশাবলী মেনে চলতে রাজি নয়, মন যখন সত্যের সন্ধান করে তখন সে মুক্ত। ধর্ম যখন জিজ্ঞাসা না মিটিয়ে চোখ বুজে মেনে নেওয়ার নির্দেশ দেয় তখন মন বিদ্রোহী হয়ে ওঠে, ধর্মবিমুখ হয়ে ওঠে। জীবনে সবথেকে বড় অনুচিত কাজ হল মনের দরজা বন্ধ রাখা। ধার্মিকদের প্রধান সমস্যা হলো- 'আমি যা জানি সেটাই সত্য, বাকি সব মিথ্য'- এই মনোভাবে স্থির থাকা। এটাই অজ্ঞানতার জন্ম দেয়। ঈশ্বর বা আল্লাহর অস্তিত্ব মানুষের কল্পনাপ্রসূত। কল্পনার রাজ্য থেকে বের হয়ে এলেই বোঝা যায় ঈশ্বর নামের ধারণাটি আধুনিক সমাজে সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়। ধর্মের আফিমে বুঁদ না হয়ে তাই এখন দেশ বিদেশে বেশি সংখ্যক মানুষ নাস্তিক হচ্ছে।

নাস্তিকরা বেশ স্বাধীন।
নাস্তিকদের কোন ধর্মীয় লেবাস নেই। অবশ্য এই কট্রর সমাজ নাস্তিক পরিচয় প্রকাশিত হলে তাকে একঘরে করে দেবে অনেকে। অথবা কুপিয়ে মেরেও ফেলতে পারে। এরা বড় হিংস্র। মিথ্যা, লোক দেখানো ধর্মকর্ম করলে বা এর অভিনয় করলেও অনেক বৈষয়িক লাভ এই সমাজে। দাড়ি ও টুপিওয়ালা যে লোকটি ঘুষ ও সুদ খাচ্ছে, খাদ্যে ভেজাল দিচ্ছে, পণ্য মজুদ করছে আবার মসজিদে নামাজেও যাচ্ছে, তার সাথে নাস্তিকের কি বা পার্থক্য? কিন্তু সমাজে তার অনেক কদর যেটা নাস্তিকের নেই বললেই চলে। নাস্তিকেরা এই সমাজে অবহেলিত। একজন মানুষ যেদিন বুঝে যায় বহুদিন ধরে আঁকড়ে রাখা বিশ্বাস বা সংস্কারগুলোর কোন ভিত্তি নেই, সেই উপলব্ধিটাই অবিশ্বাস। অবিশ্বাস শিখিয়ে দেওয়া যায় না, ক্রিটিকাল চিন্তা করে নিজে নিজে এটা অর্জন করতে হয়।

ধর্ম মানুষকে দূর্দান্ত মিথ্যা সান্ত্বনা দেয়।
যেমন, কারো সন্তান মৃত জন্মেছে, এক্ষেত্রে 'আল্লাহ' বা 'ভগবান' দয়াময়। তিনি এই নিষ্ঠুর জগতে তার সন্তানকে রাখতে চায়নি বলেই তো এমন হয়েছে! কারো সন্তান তিনটে হাত-চোখ, চারটে পা আর একটা মাথা নিয়ে জন্মেছে, সেক্ষেত্রে 'তোমার সন্তান স্পেশাল! ভগবানের আশীর্বাদ না থাকলে এমন হয়! একজন দুর্ঘটনায় একটা পা হারিয়েছেন, প্রভুর অসীম করুণায় একটা পা বেঁচে গেছে। প্রভুর অশেষ দয়ায় দুটো হাত রক্ষা পেয়েছে। কিন্তু হাত-পা সব বাদ গেলে- প্রভুর সীমাহীন অনুকম্পায় প্রাণটা তো বেঁচে গেছে। কম বয়সে আপনজন মারা গেলে প্রভু দয়া করেছেন, মাঝ বয়সে মারা গেলেও তাই, এমনকি আবার বেশি বয়স মারা গেলেও তাই! ভালো যা হয় সব করে আল্লাহ, আর মন্দ যা হয় সব করে শালায়।

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৫
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×