একজন শাষক যার নাম আবরাহা।
আবরাহা দেখলেন সবাই হজ্ব করতে কাবা ঘরের দিকে যায়। তাই সে চিন্তা করলো যেহেতু মক্কাবাসী কাবা ঘরের কারণে উন্নত হয়ে যাচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, সম্মান, প্রভাব-প্রতিপত্তির দিক দিয়ে। তাই আবরাহা নিজে যদি আরেকটি কাবা তৈরী করে তবে লোকেরা তার ঘরকেও পরিদর্শন করতে আসবে, সেও সম্মানিত হবে। এবং তার ভালো ব্যবসা হবে।
যেই ভাবা সেই কাজ।
সে অনেক টাকা খরচ করে ঘর তৈরী করল, চারিদিকে প্রচার করলো সবাই যেনো তার কাবায় হজ্ব করতে আসে, কিন্তু কেউ তার ডাকে সাড়া দিল না। এত টাকা খরচ করে সম্মানিত হবার যে আশা আবরাহা করেছিল সেই আশা ভঙ্গ হয়ে সে বরং অপমানিত বোধ করল। ফলে সে প্রতিশোধ নেয়ার কথা ভাবল এবং বিরাট সৈন্যবাহিনী গঠন করল।
মক্কায় কাবা ঘরের দেখাশুনা করেন তখন কুরাইশ বংশ।
যাদের নেতা ছিলেন মহানবী (সা.) এর দাদা আব্দুল মুত্তালিব। আবরাহা সৈন্যবাহিনী নিয়ে গিয়ে আব্দুল মুত্তালিব-এর উট ধরে এনে আটকে রাখলো। যাতে কুরাইশরা আগে হামলা করে। কিন্তু, আব্দুল মুত্তালিব তার সঙ্গে দেখা করতে যান একা। গিয়ে তার উট ফিরিয়ে দিতে বলেন। একথা শুনে আবরাহা হাসিতে ফেটে পড়েন। আবরাহা বলেন, তুমি নিজের উট ফিরিয়ে নিতে এসেছো? অথচ আমি তো তোমাদের কাবা ধ্বংস করে ফেলবো। জবাবে মুত্তালিব বলেন, আমি উটের মালিক তাই উট নিতে এসেছি, যিনি কাবার মালিক তিনি তার কাবা নিজেই রক্ষা করবেন। তিনি তার উট নিয়ে চলে গেলেন।
কোন বাধা ছাড়াই কাবা ঘর ধ্বংস করা যাবে ভেবে আবরাহা নিশ্চিন্তে বিশাল বাহিনী নিয়ে গমণ করেন। এমতাবস্থায় লাখ লাখ আবাবিল পাখি যা খুবই ক্ষুদ্রাকার। আবাবিল পাখি দুই পায়ে দুইটি ও মুখে একটি করে মোট তিনটি পাথর নিয়ে আবরাহার বাহিনীকে হামলা করে এবং আজব এই পরিস্থিতিতে আবরাহার বাহিনী ধ্বংস হয়ে যায়।
(এ ঘটনা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করে মহান আল্লাহ তায়ালা সুরা ফিল (ফিল-হাতি) নাযিল করেছেন। আবরাহার বাহিনীতে অনেক হাতি ছিল বলে তাদেরকে হস্তী বাহিনী এবং ওই সালকে হস্তীবর্ষ বলা হয়। ইসলামের ইতিহাসে হস্তী বর্ষ (হাতী সাল) বলা হয় ৫৭০ খিস্ট্রাব্দের সময়কে।)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৩:২৯