somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

সূরা মায়েদা

৩০ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সূরা আল মায়েদা।
পবিত্র কুরআনের ৫ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ১২০টি এবং এর রূকুর সংখ্যা ১৬টি। সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে। মায়িদাহ শব্দের অর্থ 'খাবার টেবিল' বা 'এমন একটি টেবিল যাতে খাবার পরিবেশিত আছে'। হুদাইবিয়ার সন্ধির পর ৬ হিজরীর শেষের দিকে এ সূরাটি নাযিল হয়। আল ইমরান ও আন নিসা সূরা দুটি যে যুগে নাযিল হয়, সে যুগ থেকে এ সূরাটির নাযিলের যুগে পৌঁছতে বিরাজমান পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে অনেক বড় রকমের পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল। উহুদের যুদ্ধের বিপর্যয় যেখানে মদীনার নিকটতম পরিবেশও মুসলমানদের জন্য বিপদসংকুল করে তুলেছিল। সূরা- মায়েদা পড়তে চাইলেঃ
সূরা মায়েদা

কুরআনের তাফসির ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে শানে নুযুলের অনেক গুরুত্ব ও প্রয়োজন রয়েছে। এজন্য ইমাম মাহদি (রহ.) বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো আয়াতের শানে নুযুল অথবা সংশ্লিষ্ট ঘটনা জানা না থাকে, ততক্ষণ সে আয়াতের অর্থ ও মর্ম বর্ণনা করা সম্ভব নয়।

মদ হারাম হওয়ার পূর্বে একদিন হযরত আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রা.) কিছু সাহাবিকে নিজ বাসায় খাওয়ার দাওয়াত দিলেন। সেখানে খাবারের পর মদ পরিবেশন করা হয়। মদ খাওয়ার পর নামাযের সময় হওয়ায় সাহাবারা টলতে টলতে নামাযে দাঁড়ালেন। এক সাহাবি নামাযের ইমামতি করছিলেন, তিনি নেশার কারণে সূরা ভুল পড়লেন। সে প্রেক্ষিতে এ আয়াত নাযিল হয়। সূরা মায়েদার ৯০ ও ৯১নং আয়াত যখন মদ ও জুয়া হারাম হওয়া সম্পর্কিত হুকুম নাযিল হল। যেসব সাহাবি মদ ও জুয়া হারাম হওয়ার পূর্বে ইন্তেকাল করেছেন তারা তো জীবদ্দশায় মদ ও জুয়াতে লিপ্ত ছিলেন, এখন তাদের পরিণাম কী হবে? তারা কি ক্ষমা পাবে? এর প্রতি উত্তরে সূরা মায়েদার উপর্যুক্ত আয়াত নাযিল হয় যে, যারা মদ ও জুয়া হারাম হওয়ার পূর্বে এগুলোতে লিপ্ত ছিল সে কারণে তাদের ওপর কোনো আজাব হবে না। (সুবাহানাল্লাহ)

ষষ্ঠ হিজরীর যিলকদ মাসের ঘটনা।
চৌদ্দশ মুসলমানকে সাথে নিয়ে নবীজি (স.) উমরাহ সম্পন্ন করার জন্য মক্কায় উপস্থিত হয়েছেন। কিন্তু কুরাইশ কাফেররা শক্রতার বশবর্তী হয়ে আরবের প্রাচীনতম ধর্মীঁয় ঐতিহ্যের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধাচরণ করে তাঁদের উমরাহ করতে দিল না। অনেক তর্ক বিতর্ক ও বাদানুবাদের পর তারা এতটুকু মেনে নিল যে, আগামী বছর আপনারা আল্লাহর ঘর যিয়ারত করার জন্য আসতে পারেন। ইসলামের শক্তিকে দমন করার জন্য কুরাইশরা সর্বশেষ প্রচেষ্টা চালিয়েছিল খন্দকের যুদ্ধে। এতেও তারা শোচনীয় ভাবে ব্যর্থ হয়। এরপর আরব বাসীদের মনে এ ব্যাপারে আর কোন সন্দেহই রইলো না যে, ইসলামের ও আন্দোলনকে খতম করার সাধ্য দুনিয়ার আর কোন শক্তির নেই।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)'র জীবনের শেষের দিকে সূরা মায়েদা নাজিল হয়। এ সূরার ১১৪ ও ১১৫ নম্বর আয়াত থেকে সূরাটির নামকরণ ‘মায়েদা' করা হয়েছে। এ দুই আয়াতে বলা হয়েছে, হযরত ঈসা (আ.)'র দোয়ার বরকতে আকাশ থেকে খাদ্যভর্তি খাঞ্চা বা মায়েদা নাজেল হয়েছিল।

রাসুল (সা.) বিদায়-হজ্জ শেষে-
মদিনায় প্রত্যাবর্তনের পথে গাদীরে-খোম নামক স্থানে পৌছালেন। ১০ম হিজরীর জিলহাজ্জ্ব মাসের আঠারো তারিখে এই আয়াত-শরিফ নাযিল হয়। তখন হযরত জিবরাঈল (আ.) এসে বলেন- হে মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহতাআলা আপনার প্রতি যে ভাবে দুরুদ পাঠিয়ে থাকেন, সেভাবেই দুরুদ পাঠিয়েছেন। অতপর বলেন, `হে আল্লাহর রাসুল! প্রচার করুন যা কিছু আপনার প্রতিপালকের নিকট থেকে, আলী (আ.) এর সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। যদি আপনি এই নির্দেশ পালন না করেন তবে যেন আপনি রেসালাতের কোন দায়িত্বই পালন করলেন না!’

মারিয়াম-পুত্র ঈসা বলল,
'হে আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, আমাদের প্রতি আকাশ থেকে খাদ্যভর্তি খাঞ্চা অবতীর্ণ করুন। তা আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সবার জন্য আনন্দোৎসব স্বরূপ হবে এবং আপনার পক্ষ থেকে একটি নিদর্শন হবে। আর আমাদের জীবিকা দান করুন; আপনিই তো শ্রেষ্ঠ জীবিকাদাতা।' আল্লাহ বললেন, 'অবশ্যই আমি তোমাদের কাছে সে খাঞ্চা প্রেরণ করব; কিন্তু এরপর তোমাদের মধ্যে কেউ কুফরি করলে তাকে এমন শাস্তি দেব, যে শাস্তি বিশ্বজগতের অন্য কাউকে দেব না।' (সুরা আল মায়েদা : ১১১-১১৫)

আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বিশ্বনবী (সা.)-কে বলছেন,
আহলে কিতাব বা ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মগুলোর মত ধর্মের বহু অনুসারী পবিত্র কোরআনকে মেনে নিতে প্রস্তুত নয়। এ ধরনের চিন্তা ও ধর্ম বিরোধিতা তাদেরকে কাফের বা অবিশ্বাসীতে পরিণত করছে। কারণ, তারা জেনে-শুনেই এ ধরনের পথ বেছে নিয়েছে। তাই হে নবী (সা.) আপনি তাদের কুফরির ব্যাপারে দুঃখিত হবেন না। আল্লাহই তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন।


আগের পোষ্ট গুলোঃ
১। সূরা আল ফাতিহা
২। সূরা বাকারা
৩। সূরা আল ইমরান
৪। সূরা আন নিসা
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:১৬
১০টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×