বাংলাদেশের সূচনালগ্নে যে বা যারা কাঠালকে জাতীয় ফল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তাদের মেরুদন্ড অনেক শক্ত ছিল। দেশের খাল বিল থেকে তুলে এনে শাপলাকে জাতীয় ফুল, দেশের বনে বাদাড়ে লাফিয়ে বেড়ানো দোয়েলকে জাতীয় পাখি এবং কাঠাল ইত্যাদি প্রতীক নির্ধারন করেছে। বিচিত্র বিদেশি কোন সাংস্কৃতিক উপাদান ধার করে দেশের প্রতীক বানানোর মত মূর্খতা করেনি। কোন কিছুকে যখন জাতীয় ঘোষণা করা হয় তখন ইতিহাস, ঐতিহ্যের সাথে এর সম্পর্ককে বিবেচনায় নেওয়া হয়। কাঁঠালের ইতিহাস একান্ত আমাদের। যেহেতু কাঠাল কাচা থেকে পাকা প্রায় পুরো সবটুকুই মানুষ আর পশুরা ভাগাভাগি করে খেতে পারে এবং তেমন কোনো কিছুই ফেলে দিতে হয় না তাই হয়তো জাতীয় ফল হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিলো। একটি জাতির হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে একটি ফলের যোগসূত্র থাকলে সেই ফল ওই অঞ্চলের মানুষের জাতীয় ফল হয়ে ওঠে।
১। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে, আমকে জাতীয় ফল করার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু ভারত আগে থেকেই সেটি দখল করে রাখায় কাঁঠালকে বেছে নেয়া হয়।
২। কাঁঠাল এবং শাপলা প্রতীক হিসেবে মন্দ না। বাংলাদেশের প্রকৃতি এবং সংস্কৃতির সাথে মানানসই। উভয়ই আমাদের দেশে স্মরনাতীত কাল ধরে আছে।
৩। কাঁঠালের যখন সিজন হয় তখন মানুষ শুধু কাঁঠাল খেয়ে লম্বা সময় বেঁচে থাকতে পারে , কাজ করতে পারে কাঁঠালের ফুড ভ্যালু অত্যন্ত উচ্চ, যার জন্য একটি কাঠালের এর কিছু অংশ খেলে মানুষ হয়তো এক দিনের জন্য কর্মক্ষম থাকে।
৪। কাঁঠাল এর উৎপত্তি বাংলাদেশে, অত্যন্ত পুষ্টি কর এবং বাংলাদেশে এর ভালো জন্মে বা চাষ করা হয়।
৫। কাঁঠাল গাছের প্রতিটি অংশই ব্যবহারযোগ্য। যেমন কাঁঠাল গাছের পাতা দেশি কালো ছাগলকে খাওয়ানো যায়; ক্রমহ্রাসমান হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার ছাড়া আম পাতার তেমন কোনো ব্যবহার নেই।
৬। আকারের দিক থেকে ফলের মধ্যে সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ফল।
আমার খুব ইচ্ছে আছে, একদিন আপনাদের দাওয়াত দিয়ে কাঁঠাল খাওয়াবো। তবে কাঁঠাল আমি খাই না। অবশ্য বাসায় জন্য আমি কাঠাল কিনি। এবং আমি নিজেই কাঁঠাল ভাঙ্গি। কাঁঠাল ভাঙতে আমার খুব ভালো লাগে। তবে কাঠালের আঠা আমার খুব অপছন্দ। বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঠাল না হয়ে তরমুজ হলে ভালো হতো। কারণ তরমুজের কালারের সাথে বাংলাদেশের পতকার একটা মিল আছে।
ছবিঃ সংগ্রহ
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৩৮