somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আমাদের শাহেদ জামাল- (একত্রিশ)

২৪ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবিঃ দ্য ডেইলি স্টার।

জলে কার ছায়া পড়ে কার ছায়া জলে?
সেই ছায়া ঘুরে ফিরে কার কথা বলে?
তোমার আসার খবর শুনেই অপেক্ষাকে ডাকি;
অপেক্ষা যে আসর জমায়, আমিই কোথায় থাকি?


লকডাউন এক অভিশাপের নাম।
সরকারের উচিত সবার জন্য দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করা। লকডাউন দিয়ে করোনা অফ করা যাবে না। শাহেদ জামাল চায় এই লকডাউনের সময়টা কাজে লাগাতে। শাহেদ জানে সময় খুব মূল্যবান। তাই সে সময় অপরচয় করতে চায় না। সে এই লকডাউনে শুয়ে বসে না থেকে একটা উপন্যাস লিখবে। তথাকথিত লেখকদের মতো সস্তা উপন্যাস সে লিখবে না। ছেলে মেয়ের দেখা হলো। প্রেম হলো। তারপর ছেলে মেয়ের বাবা মা তাদের প্রেমে বাঁধা দিবে। তখন ছেলে মেয়ে ঠিক করবে তাঁরা পালিয়ে যাবে। এবং বিয়ে করবে। মেয়ে প্রেগন্যান্ট হবে। কিন্তু মিসক্যারেজ হয়ে যাবে। তারপর তাদের সংসারে শুরু হবে অশান্তি। একসময় মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে তার বাবার কাছে চলে যাবে। ছেলেটা তখন অন্য একটা মেয়ের প্রেমে পড়বে। এরকম সস্তা লেখা শাহেদ জামাল লিখবে না।

গতকাল সারারাত শাহেদ জামাল ঘুমায় নি।
সে তার উপন্যাস নিয়ে ভেবেছে। সে তার উপন্যাসে কোনো ভনিতা করবে না। বেশির ভাগ লেখকরা ভনিতা করতে গিয়ে উপন্যাসের বারোটা বাজিয়ে দেয়। শাহেদ তার উপন্যাসে মানুষের সহজ সরল 'জীবনের গল্প' গুলো তুলে ধরবে। সে কোনো ভান ভনিতার মধ্য দিয়ে যাবে না। জীবনের গল্প গুলোই আসল গল্প। মহৎ গল্প। এক জীবনের গল্প অন্যের জীবনে সে ছড়িয়ে দিতে চায়। আজকাল মানুষ অবাস্তব, কাল্পনিক, বানোয়াট কাহিনী বিশ্বাস করে না। তাতে আনন্দ পায় না। সবচেয়ে বড় কথা বানোয়াট কাহিনী মানুষের হৃদয় স্পর্শ করে না। শাহেদ চায় তার লেখা মানুষের হৃদয় স্পর্শ করুক। জীবনের সহজ সরল আর কুটিল জটিল দিক গুলো সুন্দর করে তুলে ধরতে পারলেই সুন্দর একখানা উপন্যাস হয়ে যাবে।

শাহেদ জামালের উপন্যাসের নায়ক একজন কৃষক।
এই কৃষক সারা বাংলাদেশ ঘুরে ঘুরে মানুষকে বুঝাবে- সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য গাছ লাগানো ছাড়া আর অন্য কোনো উপায় নেই। তাই গ্রামের প্রতিটা রাস্তায় গাছের পর গাছ লাগাতে হবে। সবুজে সবুজ করে দিতে হবে চারধার। শুধু গাছের কথা বললে হবে না। যেহেতু আজকাল সবকিছুতে রাজনীতি ঢুকে গেছে। উপন্যাসে কিছুটা রাজনীতি নিয়েও কিছু বলতে হবে। শাহেদ জামালের ইচ্ছা তার উপন্যাসে কোনো এক জায়গায় ঢুকিয়ে দিবে বঙ্গবন্ধুর চেয়ে তাজউদ্দিন এবং মাওলানা ভাসানীর অবদান কোনো অংশে কম নয়। যদিও বর্তমানে তাদের কথা কেউ স্মরণ করে না। দেশের জন্য সব যেন একা বঙ্গবন্ধুই করেছেন। বাকি সবাই দুধ ভাত। উপন্যাসে দূর্নীতিবাজদের নিয়েও কিছু বলা হবে। এবং শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান যে শুধু মুখের কথা ছিলো সেটাও বলা হবে।

শাহেদ জামাল তার উপন্যাস শুরু করতে পারছে না।
কারন স্বপ্ন। ইদানিং সে অদ্ভুত এবং ফালতু সব স্বপ্ন দেখছে। গতকাল সে স্বপ্নে দেখেছে নূরুল হুদা মারা গেছেন। কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা কয়েকদিন আগে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব গ্রহন করেছেন। অথচ শাহেদ জামাল স্বপ্নে দেখেছে কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা করোনায় মারা গেছেন। স্বপ্ন দেখে শাহেদ জামালের মন খুব খারাপ হয়েছে। এটা কি রকমের স্বপ্ন? এরকম স্বপ্ন দেখার কারন কি? অথচ এই কবি বহু আগেই বাংলা একাডেমী পুরস্কার এবং একুশে পদক পেয়েছেন। এরকম গুনী মানুষকে স্বপ্নে মরতে দেখার কারন কি? কবির বয়স সম্ভবত ৭২ বছর হবে। শাহেদ জামাল চায় তিনি দীর্ঘদিন বেচে থাকুক। এর আগে সে স্বপ্ন দেখলো- সিএনজি চালাচ্ছে ঢাকার রাস্তায়। রাস্তায় কোনো জ্যাম নেই। প্রচুর খেপ পাওয়া যাচ্ছে।

রাত দুইটা। শহরের সব মানুষ ঘুমে।
শাহেদ জামাল সিগারেট নিয়ে বেলকনিতে বসে। আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবে- একটির পর একটি রাত পার করে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছি। ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে শাহেদ জামালের মরে যেতে ইচ্ছে করে। হঠাত নীলার কথা মনে পড়ে গেলো। নীলা যে অফিসে কাজ করে- সেই অফিসের কাছে একটা রেস্টুরেন্ট আছে। নাম 'নীলা ক্যাফে'। রাস্তার পাশের চায়ের দোকানের মতোন কোনো চিৎকার চেচামেচি নেই। সবাই খুব আস্তে আস্তে কথা বলে। ইদানিং নীলা এই ক্যাফেতে শাহেদ জামালকে নিয়ে বসে। ক্যাফেটা সুন্দর। টিপটপ। দুই মগ কফি নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকা যায়। নীলা বলে, মানুষ কতটা লম্বা হয়? সব মানুষই সাড়ে তিন হাত লম্বা। যদিও কেউ বেঁটে, কেউ লম্বা। তবে নিজের হাতে মাপলে সবাই সাড়ে তিন হাত।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:২৬
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×