
বাংলাদেশ একটা দরিদ্র দেশ।
এই দেশের বেশির ভাগ মানুষ গরীব। দরিদ্র দেশের মানুষদের মনমানসিকতা কেমন হতে পারে এটা বুঝতেই পারছেন। বাঙ্গালীরা মূলত দুঃখী একটা জাতি। এরা ভাতে, কাপড়ে, প্রেম ভালোবাসায়- সব কিছুতেই দুঃখী। দেশের নেতারা দূর্নীতিবাজ। বিধায় এই দেশের মানুষদের দুঃখ দুর্দশা কমে না। বরং দিন দিন বাড়ে। দুই বছর আগেও ঢাকা শহরে এত ভিক্ষুক ছিলো না। এখন বাসা থেকে মালিক মোড় পর্যন্ত যেতে পনের জন ভিক্ষুক এসে হাত পাতে। প্রতিটা এলাকার রাস্তার মোড়ে মোড়ে এখন ভ্যানগাড়িতে করে সবজি, মাছ আর ফলমুল বিক্রি করে। এদের কাছ থেকে পুলিশ ও স্থানীয় নেতারা নিয়মিত চাঁদা নিচ্ছে। আগে এত ভ্যানগাড়ি দেখা যেতো না। একজন বিদেশী লোক ঢাকা শহরে এলে অবাক হয়ে যাবে। এত এত শপিংমল! এত এত রেস্টুরেন্ট! শপিংমলে ভিড়, রেস্টুরেন্টে ভিড়। রাস্তায় হাজার হাজার গাড়ি। নামী দামী স্কুল কলেজ! বাহ কি রমরমা অবস্থা!!
কয়েক বছর আগে রাপা প্লাজা নামে একটা বিল্ডিং ভেঙ্গে পড়েছিলো।
অনেক মানুষ মারা গিয়েছিলো নির্মম ভাবে। তখন দেশের মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো। প্রবাসীরাও এগিয়ে এসেছিলেন। প্রতি বছর আমাদের দেশে নিয়ম করে বন্যা হয়। বন্যা নিয়ন্ত্রনের জন্য স্থায়ী কোনো ব্যবসস্থা নেওয়া হয় না। বহু মানুষ খোলা আকাশের নীচে দিনযাপন করে। তখন দেশের মানুষ তাদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। প্রবাসীরাও এগিয়ে আসেন। এই যে টানা দুই বছর করোনা গেলো- বহু মানুষ দরিদ্রদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। এসব বিষয় বিবেচনা করে বলা যায়- বাংলাদেশের মানুষের মনমানসিকতা ভালো। আমার নিজের চোখে দেখা একটা ঘটনা বলি- একদিন দেখি কাকরাইল মসজিদের সামনে এক রিকশাওলা যাত্রীর সাথে চিৎকার চেচামেচি করছে। রিকশাওলা বলছে, আমাকে এক ঘন্টা এদিক ওদিক নিয়েছে। আমার ভাড়া হয়েছে একশ' টাকা। কিন্তু আমাকে দিচ্ছে বিশ টাকা। চিৎকার চেচামেচি চলছেই। প্রচুর মানুষের ভিড় জমে গেছে। তখন এক ভদ্রলোক এলেন, রিকশাচালক কে দুই শ' টাকা দিয়ে বললেন। যাও চলে যাও। মুহুর্তের মধ্যে ঝামেলা মিটমাট।
আরেকটা ঘটনা বলি-
এটা কয়েকদিন আগের কথা। সকাল আট টা। আমাদের বাসার গলিতে এক বৃদ্ধা মহিলা খুব কাঁদছেন। কারন তার নাতীর চিকিৎসার জন্য তার কাছে পাচ হাজার সাত শ' টাকা ছিলো। সেই টাকা টা সে হারিয়ে ফেলেছে। বৃদ্ধা কান্না খবই করুণ। আমাদের পাশের বাসা থেকে একলোক বলল, এই সকাল বেলা হাউকাউ করো না। ঘুমাতে দাও। তখন আমার বড় ভাই, বৃদ্ধাকে পাঁচ হাজার সাত শস' টাকা দিয়ে দেয়। এরকম কিছু ছোট ছোট ঘটনা গুলো দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মানসিকতা টের পাওয়া যায়। তবে আমি বিনা দ্বিধায় বলতে পারি বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ খারাপ। একদম ইতর শ্রেনির। মন মানসিকতায় অতি নিম্ম মানের। গত পনের বিশ বছরে দেশের মানুষ খুব বেশি খারাপ হয়ে গেছে। একদম অমানবিক হয়ে গেছে। কারো মধ্যে কোনো মায়া দয়া নেই। ভদ্রতা নেই। শালীনতা নেই।
হ্যাঁ বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে।
মেট্রোরেল হচ্ছে, পদ্মাসেতু হচ্ছে। বেসরকারী বিল্ডিং গুলোর মতো সরকারি বিল্ডিং গুলো আধুনিক করা হয়েছে। বিদ্যুতের বেশ উন্নতি হয়েছে। ঢাকার মসজিদ গুলো মার্বেল টাইলস, মোজাইক আর এসি। তারপরও শুক্রবার ছাড়া মসজিদে মানুষ হয় না। বিদ্যুতের মিটার গুলো কার্ড সিস্টেম করা হয়েছে। এখন লম্বা লাইন ধরে বিদ্যুৎ বিল দিতে হয় না। তবে গত ৫০ বছরেও অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়নি। এখনও মানুষ রাস্তায় ঘুমায়। এখন কোটির উপরে বেকার। এখনও দূর্নীতি হয়। সরকারী হাসপাতাল থেকে দালাল দূর হয়নি। রাস্তায় কিশোর কিশোরীরা জুতোর আঠা দিয়ে নেশা করে। নেতারা দূর্নীতি করছে। তাঁরা গ্রামের বাড়ি যায় হেলিকাপ্টারে করে। অথচ গাড়িতে গেলে তিন ঘন্টা সময় লাগে। এমন কি দুর্নীতি বাজদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকজনও সীমহীন টাকারর মালিক হতে পেরেছে। তাঁরা দৈনিক পত্রিকা বের করেছে। টিভি চ্যানেল করেছে। প্রধানমন্ত্রী দূর্নীতিবাজদের ব্যাপারে কচ্ছপের মতো এগুচ্ছেন। গ্রামের পাতি নেরাও এখন দামী বাইক চালায়। ক্ষমতাবানরা অন্যায় অবিচার করেই চলেছে। চাটুকারেরা মুজিব কোট গায়ে দিয়ে তেল দিয়ে যাচ্ছে সমানে।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশটা খারাপ না।
বাংলাদেশের মানুষ গুলো খারাপ না। হ্যাঁ অল্প কিছু লোক খারাপ। এই অল্প কিছু লোকের জন্য সারা বাংলাদেশের মানুষদের খারাপ বলা ঠিক হবে না। বাংলাদেশী প্রতিটা মানুষের জন্য আমার মায়া হয়। ভীষন মায়া হয়। বাঙ্গালিরা জন্মগত ভাবে খুব দুঃখী। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও দুঃখী। তার বাপ, ভাই, মা সবাইকে মেরে ফেলা হয়েছে। খালেদা জিয়াও দুঃখী। সুখ দুঃখ, ভালো মন্দ মিলিয়ে বাঙ্গালীরা এখনও টিকে আছে। বেঁচে আছে। এভাবেই হয়তো কেটে যাবে হাজার হাজার বছর।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৩:০৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




