somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আজকের ডায়েরী- ৯৭

২৮ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ আমার তোলা।

ভিড় আমার পছন্দ না।
এজন্য বিশেষ বিশেষ দিন গুলোতে আমি ঘর থেকে বের হই না। বিশেষ দিন মানেই ঢাকায় গজব অবস্থা। আর কয়েকদিন পর রমজান মাস। বেশ কয়েকবার বাজারে গিয়েছি। কিন্তু বাজার না করেই ফিরে এসেছি। প্রচণ্ড ভিড়। আরেহ ভাই এটা কি! সকালে যাই, ভিড়। দুপুরে যাই ভিড়। রাতে যাই ভিড়। ঈদের সময় মার্কেটে গেলে যেরকম ভিড় থাকে তারচেয়ে বেশি ভিড়। যেহেতু বাজারে খুব ভিড় তাহলে দেশের মানুষের কাছে ভালোই টাকা পয়সা আছে। এখন সবাই রমজানের কেনাকাটা নিয়ে ভীষন ব্যস্ত। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে তাতে কি, লোকজন বেশি দাম দিয়েই কিনছে। না খেয়ে তো আর থাকা যায় না। অনেকে হাহুতাশ করেন গরুর মাংস ৬৫০ টাকা কেজি বলে। আমাদের এখানে একটা গরুর মাংসের দোকান আছে। প্রতিদিন পনের টা গরু জবাই করে। এত মাংস কারা কিনছে?

ছাদে আমার তিনটা গাছ আছে।
আম, লেবু আর পেয়ারা। গত বছর প্রায় ৭/৮ কেজি আম পেয়েছিলাম। আম গুলো খেতে দারুন ছিলো। এবার কপাল খারাপ। আম, লেবু আর পেয়ারা তিনটা গাছ'ই মরে গেছে। গাছের সব পাতা ঝরে গেছে। তিনটা গাছের মৃত্যু আমাকে ভীষন ব্যথিত করেছে। আসলে দোষ আমারই। গত ছয় মাস আমি গাছের কোনো যত্ন নিই নি। গাছের মৃত্যুর জন্য আমিই দায়ী। অপরাধ বোধ হচ্ছে। একদিন স্বপ্নে দেখলাম- গাছ গুলো আমাকে অভিশাপ দিচ্ছে। তুমিই আমাদের মেরেছো। খুব বেশি অবহেলা করেছো আমাদের। এমন না যে তুমি ঢাকার বাইরে ছিলে। ছাদে আসতে পারো নাই। তুমি তো রোজ ছাদে উঠেছে সিগারেট খাওয়ার জন্য। আমাদের দিকে একবারও ফিরেও তাকাও নি! কী অন্যায় করেছি আমরা! আমাদের কথা কি করে ভুলে গেলে! তোমাকে শাস্তি পেতে হবে রাজীব নূর। অবশ্যই তোমাকে শাস্তি পেতে হবে। কি শাস্তি চাও বলো? তাড়াতাড়ি বলো, সময় কম।

স্বপ্নটা ভয়ের না। কিন্তু আমার ভয় লাগলো।
পরের দিন সকালে সিদ্ধান্ত নিলাম যে করেই হোক। তিনটা গাছ কে বাঁচাতে হবে। অন্ততপক্ষে গাছ গুলোকে বাচানোর চেষ্টা করতে হবে। গাছে পানি দেওয়ার জন্য ভোরে ঘুম থেকে উঠি। বিকেলেও পানি দেই। আগাছা পরিস্কার করি। গাছ মরে গেছে। এখন পানি দিলেই কি আর না দিলেই কি। কিন্তু টানা তিন মাস গাছের যত্ন নিলাম। নিতে থাকলাম। একদিন দেখি গাছ গুলোকে কেমন যেন মনে হচ্ছে। আগের সেই করুণ রুগ্ন অবস্থা নেই। যত্নের পরিমান আরো বাড়িয়ে দিলাম। মাশাল্লাহ, আল্লাহর রহমতে গাছ প্রান ফিরে পেয়েছে। নতুন পাতা দিয়ে গাছ ভরে গেছে। লেবু গাছে লেবু পর্যন্ত ধরেছে। পেয়ারা গাছে ফুল এসেছে। আম গাছে নতুন পাতা গজিয়েছে। তবে এবছর আম পাবো না। ফল না পাই। গাছ প্রান ফিরে পেয়েছে তাতেই আমি খুশি।

গাছ পালার যত্ন নিতে হয়।
যত্ন নিলে ফল পাওয়া যায়। পেয়ারা গাছে একটা মিষ্টি কুমড়া বা চালি কুমড়া গাছ একাএকা হয়েছে। কয়েকদিন পরপর সাদা সাদা ফুল দিয়ে পেয়ারা গাছ ঢেকে যায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ফুল থেকে ফল হয়নি। হবে নিশ্চয়ই। দেরী হোক যায়নি সময়। ঠিক তেমনি আম গাছে তুলসী গাছ হয়েছে একাএকা। তুলশী গাছ বেশ বড় হয়ে গেছে। যখন গাছে পানি দেই। পাইপ দিয়ে গাছে পানি দেই। ছোট কন্যা ফারাজাকে সাথে করে নিয়ে যাই। বাবাকে গাছে পানি দিতে দেখে সে ভীষন মজা পায়। খিলখিল করে হাসে। কন্যার গায়ে পানির ছিটা পড়লে সে খুশিতে লাফায়। মাঝে মাঝে গাছের পাতার ফাঁকে লুকাতে চেষ্টা করে। যেন এখন তাকে আর দেখা যাবে না। যাই হোক, দীর্ঘদিন ধরে একটা পেঁপে গাছ লাগানোর ইচ্ছা হয়েছে। দুই বস্তা মাটি এনে রেখেছি। কিন্তু ভালো উন্নত মানের পেঁপে গাছের চারা পাচ্ছি না। পেয়ে যাবো। লোক লাগিয়ে রেখেছি।

বাজারে প্রচুর তরমুজ উঠেছে।
দাম খুব বেশি। একটা বড় সাইজের তরমুজ পাঁচ শ' টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। বাসায় ১৩ তেরো জন সদস্য একটা তরমুজে হবে? দুইটা আনলেও কম পড়ে যাবে। আর কয়েকদিন পর আমাদের বাসায় সদস্য সংখ্যা আরো একজন বাড়বে। ছোট ভাইয়ের ছেলে হবে। আব্বা হঠাত করে না মারা গেলে আজ আমাদের সদস্য সংখ্যা হতো পনের জন। আব্বা বেঁচে থাকতে আমার কোনো টেনশন হতো না। আব্বাকে যদি ফোন করে বলতাম, তরমুজ পাঠাও কাউকে দিয়ে। এক ঘন্টার মধ্যে বাসায় তরমুজ চলে আসতো। যদি ফোন দিয়ে বলতাম- আজ তো হাজী বিরানী খেতে ইচ্ছা করছে- আব্বা লোক দিয়ে বাসায় হাজী বিরানী পাঠিয়ে দিত। যদি বলতাম, ইলিশের মাছের ডিম খেতে ইচ্ছা করছে- ডিমওয়ালা ইলিশ মাছ নিয়ে আসতো। কোনো দিন আব্বা বিরক্ত হতো না। বরং খুশি হতো। আমাদের বংশে সবার লম্বা হায়াত। আমার দাদা দাদী দীর্ঘিদিন বেঁচে ছিলেন। কিন্তু আব্বা করোনাতে চলে গেলো।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:৩১
১১টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাদ্রাসা শিক্ষা, বৈশ্বিক রাজনীতি, সহিংসতা ও জঙ্গিবাদ

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৫


লেখাটির শুরুতে একটি ভূমিকা দেওয়া যাক। সর্বশেষ দেশে গিয়ে কয়েকদিন গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। উত্তরবঙ্গে, নিতান্ত অনুন্নত আমাদের সেই গ্রামে এতগুলো কওমি মাদ্রাসা হয়েছে দেখে অবাক হয়েছিলাম। আগে গ্রামে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চোখের জল

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪৬


সুদীর্ঘ ১৭ বছরের জমে থাকা
বিনম্র চোখের এক কোণে জল!
প্রকাশে এলো এই জনসমুদ্রে-
জনসমুদ্র তুলছে আনন্দাশ্রুর
ঢেউ- দেখছে নতুন ফুলের গন্ধ;
এ নৈঃশব্দের আর্তনাদ বুঝতে
হবে শুধু তোমাকে- আমাকে
গড়ে তুলতে হবে মনুষ্যের প্রণয়ে
সূর্য ভোর- যেখানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকার মানুষের জীবন

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪


ঢাকাতে মানুষ বড় বিচিত্র ভাবে বেঁচে থাকে। নিয়মিত ঢাকার রাস্তার ঘুরে বেড়ানোর কারণে এই রকম অনেক কিছু আমার চোখে পড়ে। সেগুলো দেখে মনে হয় মানুষ কত ভাবেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে প্রায় সারা বছর বৃষ্টিপাতের কারণ কী?

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯

পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে প্রায় সারা বছর বৃষ্টিপাতের কারণ কী?



পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে প্রায় সারা বছরই বৃষ্টিপাত হয়। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আফ্রিকার কিছু দেশ এবং দক্ষিন আমেরিকার কিছু দেশ ও অঞ্চলে বছরের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ কখনো এমন করে বলতে পেরেছে কি?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


ভারতে গরু ও গোমাংস নিয়ে হত্যা বা সহিংসতার নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা কঠিন কারণ এটি রাজ্য, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং 'গরু রক্ষা' বাহিনী ইত্যাদীর কারণে একেক যায়গাতে একেক রকম। ভারত গোমাংস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×