
মনে করুন, একটা মেয়ে পার্কে বসে কাঁদছে।
একাএকা। তার পাশে কেউ নেই। মেয়েটা হাউমাউ বা চিৎকার করে কাঁদছে না। কাঁদছে নীরবে। চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছে। দৃশ্য টা খুবই করুণ। আমি মেয়েটার কাছে যাবো। তাকে রুমাল বা টিস্যু দিবো। বলব, আপনি কাঁদছেন কেন? আপনার কি হয়েছে? প্লীজ আপনি কান্না করবেন না। আপনার কান্না দেখে আমার ভীষন খারাপ লাগছে। সমস্যা না থাকলে আমাকে বলুন আপনি কেন কাঁদছেন? আমার সামনে বসে একটি মেয়ে কাঁদবে তা আমি হতে দিতে পারি না। নো নেভার।
মেয়েটা তখন নিশ্চয়ই কিছু বলবে।
হয়তো বলবে আপনি আপনার কাজে যান। বিরক্ত করবেন না। অথবা বলবে, আমার খুশি আমি কাদছি, আপনার কি? তখন বলব, প্লীজ কান্না থামান। আমাকে বলুন কি হয়েছে? ক্ষুধা পেয়েছে? বার্গার আর কোক খাবেন? অথবা বিরানী? মেয়েটা তখন হেসে ফেলবে। তখন আমি বলব, কান্না করলে কিন্তু আপনাকে সুন্দর দেখায়। আপনার হাসি যেমন সুন্দর, আপনার কান্নাও তেমন সুন্দর। দুনিয়াতে কেউ সখ করে কান্না করে না। নিশ্চয়ই সে কোনো কারণে দুঃখী হয়েছে। একজন মানুষ হিসেবে আরেকজন দুঃখী মানুষের কষ্ট লাঘগবের চেষ্টা করা উচিৎ। আমার সামনে রাস্তার একটা ভিক্ষুকও কান্না করলে আমি তার কাছে যাই। তার কান্না থামানোর ব্যবস্থা করি। প্রতিটা মানবিক মানুষ তাই করবে।
আবার অনেক সময় একটা মেয়ে কান্না করলেই সামনে যেতে হয় না।
কারন, সেটা কান্না নয় একটা ফাঁদ। ফাঁদে পা দিয়েছেন তো আপনার মোবাইল, মানিব্যাগ সব যাবে। এজন্য আগে বুঝতে হবে কোনটা আসল কান্না, কোনটা নকল কান্না। একটা ঘটনা বলি- একবার ঈদের দিন সন্ধ্যায়। বেলী রোডে। আমি দাঁড়িয়ে আছি। একটা অপূর্ব সুন্দরী মেয়েকে দেখলাম। রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদছে। রাস্তার ল্যাম্প পোষ্টের আলোয় মেয়েটার চোখের পানি চকমক করছিলো। কিছু মানুষের কান্নাও অনেক সুন্দর হয়। সেই কান্না একদম হৃদয় স্পর্শ করে। হৃদয় তলপার করে দেয়।
আমার এখনও মনে আছে-
মেয়েটা সেদিন অফ হোয়াইট শাড়ি পড়েছিলো। শাড়িটা খুব যত্ন নিয়ে পড়েছিলো। শাড়ির কুচি গুলো দেখলেই সেটা বুঝতে পেরেছিলাম। দুই হাত ভরতি কাঁচের চুড়ি পরা ছিলো। কপালে টিপ ছিলো। মুখখানা ভারী মিষ্টি। আমার খুব খারাপ লাগলো- ঈদের দিন একটা মেয়ে কাঁদছে। আমি মেয়েটার কাছে গেলাম। কথা বললাম। তারপর মেয়েটার সাথে আমার খুব ভাব হয়ে গেলো। বললে হয়তো বিশ্বাস করবেন না- মেয়েটার সাথে আমার এখনও যোগাযোগ আছে। বছরে আমরা একবার দেখা করি, ঈদের দিন। সেই বেলী রোডে। দুজন দুজকে কথা দিয়েছি- আমৃত্যু আমরা দেখা করে যাবো। বছরে মাত্র একটা দিন।
মানুষের কান্না আমি সহ্য করতে পারি না।
হোক সে কোনো মেয়ে বা ছেলে। পুরুষ মানুষ সাধারণত কম কান্না করে। মেয়েরাই বেশি কান্না করে। এক জীবনে মেয়েদের কারনে অকারনে অসংখ্য বার কাঁদতে হয়। তবে যেসব পুরুষ মেয়েদের কাঁদায়, তাঁরা পাষান। তাঁরা মন্দ লোক। মেয়েদের খুব যত্নে রাখতে হয়। ভালোবাসতে হয়। হোক সে আপনার স্ত্রী, হোক সে আপনার বোন, হোক সে আপনার কন্যা। হোক সে আপনার মা। কথায় আছে- পুরুষ যেন মেয়েদের না কাদায়, স্বয়ং ইশ্বর রাখেন তাদের চোখের জলের হিসাব।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:৩৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




