
আপনি যদি প্রতিদিন কোরআন পড়েন।
বছরে ১২ বার কোরআন খতম দেন। ইহকালে কিছুই পাবেন না। চাকরী পাবেন না। আপনার একাউন্টে টাকা চলে আসবে না। আপনার কাঁচা ঘর পাকা হয়ে যাবে না। আপনার অসুস্থ শরীর ভালো হয়ে যাবে না। কোরআন পড়ে ইহ জগতে আপনি দেশ, সমাজ বা আপনার কোনো উপকার হবে না। সংসারের সমস্যা দূর হয়ে যাবে না। যা করার আপনাকেই করতে হবে। মেধা দিয়ে, পরিশ্রম করে। বলা হয়ে থাকে- পরকালে অনেক কিছু পাবেন। হুর, আনার, আঙ্গুর ইত্যাদি। আজকাল বেহেশতের নানান রকম লোভ ধার্মিকদের মন্দ কাজ থেকে দূরে রাখতে পারছে না। কাজেই আপাতত কোরআন পড়ে পরকালে সুযোগ সুবিধা পেতে পারেন। যদি আসলেই পরকাল বলে কিছু থাকে।
কোরআন পড়ে আপনি যা শিখবেন-
তা দিয়ে একটা মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানীতে চাকরী পাবেন না। তবে মাদ্রাসার হুজুর হতে পারবেন। দরিদ্র এতিম বাচ্চাদের কোরআন শিক্ষা দিবেন। সারা জীবন অভাবে অভাবে জীবন পার করবেন। দরিদ্র হয়ে জন্ম নেওয়াটা অন্যায় না, দরিদ্র হয়ে মরে যাওয়াটা অন্যায়। ধার্মিকরা অন্ধ বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করে। আসলে এদের জ্ঞানের ভান্ডার শূন্য। এরা আধুনিক বিশ্ব সম্পর্কে কোনো ধারনা রাখেন না। এরা বিশ্বাস রাখেন নানানা রকম কুসংস্কারে। এরা পেট ব্যথা হলে পানিপড়া খাবে। রাতে ঘুম না এলে ফকিরের কাছে যাবে। ফকির ঝাড়ফুঁক দিয়ে দিবে। এদের প্রিয় বই মুকছেদুল মোমেনিন। কোন আমল করলে রাতে শয়তান আপনার কাছে আসবে না। কোন দোয়া পড়লে দূর্ঘটনা ঘটবে না। কোন সূরা পাঠ করলে বাচ্চা হবে। কোন দোয়া পড়ে সহবাস করতে হবে। আরো জানতে পারবেন, কোন দোয়া পড়লে বিপদআপদ আসবে না।
আমাদের দেশের ধার্মিকদের সমস্যা হলো-
তাঁরা আগে মুসলিম, পড়ে মানুষ। আর উন্নত বিশ্বের লোকজন মনে করে, তাঁরা আগে মানুষ। পড়ে তার ধর্ম। আমাদের দেশের মুসলমানরা সেই আদি কালের সংস্কৃতি অনুসরণ করে, অথচ এখন আরবেরাও তা অনুসরণ করে না। উন্নত দেশ গুলোতে কেউ কারো ধর্মীয় পরিচয় জানতে চায় না। আমি মানুষ এই আমার পরিচয়। অথচ ধার্মিকেরা শুধু মুসলমান হয়েই থাকতে চায়। ধার্মিক হওয়ার আগে তোমাকে মানুষ হতে হবে। বিশ্বে ৩/৪ হাজার ধর্ম আছে। আমি নিজেই একটা ধর্ম বানাবো। সেই ধর্মের নিয়ম কানুন আমিই লিখব। মানুষ যুগে যুগে এমন ইচ্ছা মতন বহু ধর্ম বানিয়েছে। বাইবেল, কোরআন ও বেদ, পড়ুন। কোন বইটি সত্য সৃষ্টিকর্তার নির্দেশনা, সেটা আপনি নিজেই বুঝবেন। অন্যের শেখানো কথা মুখস্ত না করে, নিজে পড়ুন। নিজেই সত্য ধর্ম চিনুন। কোরআন পড়লে জানতে পারবেন, কোন নবী মাছের পেটে আটকে গিয়েছিলো। ফেরাউন এঁর কাহিনী জানতে পারবেন। অনেক সভ্যতার কথা জানতে পারবেন, যেসব সভ্যতা আল্লাহ ধ্বংস করে দিয়েছেন। আল্লাহর নেয়ামতের কথা জানতে পারবেন। মৌ মাছি সম্পর্কে জানতে পারবেন। কালিজিরা সম্পর্কে জানতে পারবেন। তবে বির্বতনবাদ সম্পর্কে কিছু জানতে পারবেন না। ভিজ্যুয়াল বেসিক সম্পর্কে জানতে পারবেন না। এনিমেশন সম্পর্কে কিছু পাবেন না। বীজগনিত পাবেন না। বিজ্ঞান পাবেন না। আধুনিক বিশ্ব সম্পর্কে কিছু জানতে পারবেন না।
ধর্ম চলে বিশ্বাসের উপর।
তাই এখানে ভুল-সঠিক, বিজ্ঞান এসব চলে না। ইসলাম ধর্মের কোরআন তেলওয়াতের সুর আমার ভাল লাগে। আজানের সুর ভালো লাগে যদি মুয়াজ্জ্বিন এর কন্ঠ সুন্দর থাকে। অনেক মসজিদের হুজুর বিশ্রী ভাবে আযান দেয়। বিরক্ত লাগে। যাই হোক, চিন্তাশীল মানুষদের কোনো জাত বা ধর্ম হয় না। তাঁরা তাই নিজের সত্যকে প্রশ্ন করেন, অন্যের সত্যের সাথে তুলনা করেন। ধর্ম কোন জ্ঞানের ব্যাপার নয়ঃ ধর্মগ্রন্থ পড়ে বিজ্ঞান শিখার কোন সম্ভাবনা নাই। ডাইনোসরদের ব্যাপারে কোরআন কিছুই বলে নাই। প্রতিটি ধর্মের জন্ম হয়েছে ভয় এর মাধ্যমে। আপনার আমার ভিতরের ভয় জন্ম দিয়েছে দেবতার। আপনার আমার ভিতরের আত্মবিশ্বাসহীনতা থেকে সৃষ্টি হয়েছে ধর্মীয় রীতিনীতি রেওয়াজ ইত্যাদি। ধর্ম সৃষ্টি হওয়ার পর আস্তে আস্তে প্রচুর মহামানবের আবির্ভাব ঘটেছে যুগে যুগে। তারা তাদের পাণ্ডিত্যের মাধ্যমে তৈরি করেছেন ধর্মীয় দর্শন। সেই ধর্মীয় দর্শন নিয়ে ধার্মিকেরা পড়ে আছে। মেতে আছে। আর চালাকেরা ব্যবসা ফেঁদেছে।
বিশ্বের প্রতিটি ধর্ম দু'ভাগে বিভক্ত।
যার একটি জ্ঞানীদর জন্য লেখা এবং অপরটি মূর্খের জন্য লেখা। আমি খুব ছোট বেলা থেকেই বৌদ্ধ ধর্মীয় কিছু বই পড়েছি, কিন্তু কোনদিনও ভিক্ষু হইনি, স্থবির হইনি, মহামতির কোন কথাই বলতে গেলে মানি নি। এই ধর্মীয় জ্ঞান দিয়ে কি হবে? আপনাদের কাছে অনুরোধ- ধর্ম পালন করুন, কিন্তু প্রচার করবেন না। অন্যের ধর্ম নিয়ে কথা বলার কোন অধিকার আপনার নাই, সুতরাং চুপ থাকুন। এবং মেনে নিন- মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা আছেন, এটা প্রমাণ করা সম্ভব নয়। মহাবিশ্বের কোন সৃষ্টিকর্তা নেই, এটাও প্রমাণ করা সম্ভব নয়। বিবর্তন একটি প্রমাণিত সত্য। এটি থিওরি এবং ফ্যাক্ট দুটোই। কোন ধর্ম গ্রন্থেই বৈজ্ঞানিক নির্দশন নেই। আপনার সামনে যেই নিদর্শন গুলো উপস্থাপন করা হচ্ছে সেগুলোকে বলে Creative interpretation. কোন বিজ্ঞানী কোরআন হাদিস অথবা অন্য কোন ধর্মগ্রন্থ পড়ে গবেষণা করেন না।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৪:২৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




