
আজকের দিনটি আমার সকাল থেকেই খারাপ গিয়েছে।
ঘুম থেকে উঠতে হয়েছে সকাল আট টায়। অথচ ভেবে রেখেছিলাম ১২ টায় পর্যন্ত ঘুমাবো। পাশের বাসায় বিল্ডিং এঁর কাজ চলছে। তাঁরা বিকট শব্দ করেই যাচ্ছে। দরজা জানালা সব লাগিয়ে রেখেছি, তবু শব্দ আসছে। মনে হচ্ছে কানের সামনে কেউ হাতুরি পিটাচ্ছে। অগত্যা বিছানা থেকে নামলাম। এক গ্লাস পানি খেতে ইচ্ছা করছে। অথচ নিয়ে খেতে ইচ্ছা করছে না।
দার ব্রাশ করতে গিয়ে দেখি ব্রাশ নাই।
আরেহ ভাই প্রতিদিন তো একই জাগাতে ব্রাশ রাখি। আজ ব্রাশ কই গেলো! আশে পাশে কোথাও খুঁজে ব্রাশ পেলাম না। সুরভিকে জিজ্ঞেস করলাম, ব্রাশ করি। সে বলল জানি না। দেখি নাই। ব্রাশ কোথায় যাবে? ব্রাশের তো আর হাত পা নেই। শেষে আঙ্গুলে পেস্ট নিয়ে দাঁত মাজলাম। মনে মনে বললাম, আমার ভাগ্যটাই খারাপ। আমার সাথে যা হচ্ছে সব কি আল্লাহর ইশারাতেই হচ্ছে?
গত এক সপ্তাহ সেভ করিনি।
ভাবলাম আলসেমি না করে সেভ করেই ফেলি। মুখে ফোম মাখলাম। কিন্তু ভাগ্য খারাপ রেজারের ব্লেড শেষ। অথচ আমার মন বলছে আমি বাজার থেকে ব্লেড এনেছি। মুখে ক্রীম মেখে বসে আছি। কি করবো বুঝতে পারছি না। কোনো উপায় না দেখে মুখ ধুয়ে ফেললাম। খুব রাগ লাগছে। নিজের উপরেই নিজের রাগ লাগছে। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম শালার আগামী একমাস সেভ করবো না। নো নেভার।
শুক্রবার আমরা সবাই হোটেলের নাস্তা খাই।
খেতে গিয়ে দেখি আমার নাস্তা নেই। আমার নাস্তা নাকি বুয়া খেয়ে ফেলেছে। ভাবী বলল, তুমি হোটেল থেকে নাস্তা খেয়ে আসো। চা বাসায় এসে খেও। গেলাম হোটেলে নাস্তা খেতে, গিয়ে দেখি হোটেলে নাস্তা নেই। সব শেষ। বাসায় ফিরলাম। ভাবী বললেন, ম্যাগি নুডুলস বানিয়ে দেই। খাও। আমি বললাম, নাস্তা খাবো না। আপনি আমাকে এক কাপ চা দেন। ভাবী চা দিলো। চায়ে চুমুক দিয়ে দেখি চা ঠান্ডা। ভাবীর দিকে তাকালাম। ভাবী বলল, বোকা। ওভেনে গরম করে নাও।
আজ শুক্রবার। বাসায় চারজন গেস্ট এসেছেন।
গরুর মাংস কিনতে গিয়ে দেখি বিরাট লাইন। ৭ শ'' টাকা কেজি মাংস। তাও আবার লাইন ধরে কিনতে হবে! শশা কিনতে গিয়ে দেখি এক'শ' টাকা কেজি বলছে। লেবু বলছে চল্লিশ টাকা হালি। যাই হোক, পাকা পেঁপে কিনলাম। ৮০ টাকা কেজি। দুটা দেশী মোরগ কিনলাম এক হাজার টাকা দিয়ে। একটা এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ এক হাজার টাকা বললাম, দিলো না। মাছ বিক্রেতা বলল, একদাম পনের শ' টাকা শুধু আপনার জন্য।
আজ খুব গরম পড়েছে।
গোছল করতে গিয়ে দেখি কলে পানি নেই। জানলাম, পানির পাম্পে সমস্যা হয়েছে। মিস্ত্রিকে ফোন দিলাম। সে বলল, বিকেলের আগে আসতে পারবে না। ভীষন ব্যস্ত। ঘামে ভেজা শরীর ফ্যানের বাতাসে শুকালাম। বিকেলে ছোট কন্যাকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে হবে টিকা দিতে। আজ সারাদিন খারাপ যাচ্ছে। বিকেলে হাসপাতালে গিয়ে দেখব- ডাক্তার বলবেন আজ তো শুক্রবার। শুক্রবার আমরা টিকা দেই না। যেদিন সকালটা খারাপ ভাবে শুরু হয়, সেদিন সারাটা দিনই খারাপ যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




