
ছবিঃ আমার তোলা।
পুরুষ মানুষ ভেউ ভেউ করে কান্না কেন করবে?
পুরুষদের কাঁদতে নেই। বরং নারীরা পুরুষের কাঁধে মাথা রেখে কাঁদবে। পুরুষ তাকে শ্বান্তনা দেবে। কান্না না পাওয়াটা কোনো অসুখ নয়। আপনার কোনো ভয় নেই। টেনশন করার মতো না। আমার নিজের কথাই বলি- আমি কাঁদি না। দুনিয়ার কোনো কিছুতেই আমি কাঁদি না। অনেক দুঃখ, কষ্ট আর অপমানেও আমি কাঁদি না। আমার চোখে পানি আসে না। আমার শুধু প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হয়। অনেকে সামান্য মুভি দেখেও কাঁদে।
আমার চাচার অফিসে এক লোককে দেখেছি, গান শুনে কাঁদছে।
গানটা মাকে নিয়ে ছিলো। সেই গান শুনে লোকটা খুব কান্না করলো। আসলে কারো কারো মধ্যে আবেগ খুব বেশি। আমার মনে হয় না, ছোটবেলার পর আমি কেদেছি। তবে পুরুষ মানুষ সাধারণত খুব কম কাঁদে। আমার দাদা যখন মারা যায়, তখন আমার চাচাকে দেখেছি, খুব কান্না করতে। চাচী চাচার কান্না দেখে অবাক। একজন পিতাকে আমি কাঁদতে দেখেছি। তাঁরা সন্তান জন্মের সাত দিন পর মারা যায়। পিতা খুব কান্না করলো। দেখে আমার ভীষন কষ্ট লেগেছে।
আমি কখনও কাঁদি না।
আমার চোখে পানি আসেই না। এই তো করোনায় আমার আব্বা মারা গেলো। অথচ আব্বা মারা যাওয়ার কথা ছিলো না। সকালে আব্বার হাসপাতাল থেকে বাসায় আসার কথা ছিলো। ডাক্তাররা এমনটাই বলেছিলেন। অথচ সকালবেলা খবর এলো- আব্বা মারা গেছেন। বাসার সবাই খুব কাদলো। কিন্তু আমার কান্না আসে না। যদিও ভিতরে ভিতরে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছিলো আমার। যাই হোক, আব্বার জানাযা হলো। লাশ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হলো। লাশ যখন কবরে নামানো হচ্ছিলো- তখন খেয়াল করে দেখলাম আমার চোখ ভেজা।
আগামীকাল বাংলা নববর্ষ।
ছোটবেলা থেকেই দেখেছি এই দিনে আব্বা নানান রকম মিষ্টি আনতো। ফল আনতো। আগের দিন নিজে বাজার করতো। আব্বার বাজার মানেই বিশাল বাজার। সেই বাজার পনের দিনে শেষ হতো না। আব্বা নেই, তাই আজ আমি বাজার করলাম। আব্বার মতোন পারি না। আগামীকাল ফল কিনবো, মিষ্টি কিনব। বড় ভাই সবার জন্য নতুন জামা কিনেছে। তবে তরমুজ অবশ্যই কিনতে হবে। ছোট কন্যা তরমুজ খুব পছন্দ করে। ইফতারের সময় ফারাজা শুধু তরমুজ খায়। আমি ঠিক করেছি, আপেল, নাসপাতি, মালটা এবং আনারের পাশাপাশি এখন থেকে সব সময় ফ্রিজে তরমুজ রাখবো।
আগে বিশেষ বিশেষ দিনে মা রান্না করতো।
ইদানিং মা একেবারেই রান্না করে না। আসলে মা গত ১৮ বছর ধরে রান্না করে না। তবু বিশেষ বিশেষ দিনে রান্না করতো। এখন সেটাও বন্ধ। মা বলে, আমি রান্না করতে ভুলে গেছি। আসলেই ভুলে গেছে। রান্না করলে দেখা যায়, লবন দিতে ভুলে গেছে। অথবা হলুদ বা মরচি বেশী দিয়ে দিয়েছে। মার হাতের কিছু রান্না ছিলো, খুব ভালো হতো। সেই খাবার গুলো আমি খুব মস করি। মা বাঁধা কপি দিয়ে গরুর মাংস দারুন রান্না করতো। ইলিশ মাছ রান্না করতো পেঁয়াজ আর কাঁচা মরিচ দিয়ে- দারুন স্বাদ হতো। আরেকটা খাবার আছে, শীতকালে করতো। ফুলকপি, আলু, শিম দিয়ে শিং মাছ। আহ!
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১:৫৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




