
মূলত জ্বীন বলতে দুনিয়াতে কিছু নেই।
জ্বীন ফিন এগুলো কুসংস্কার। কুসংস্কার থেকে দূরে থাকুন। উন্নত ও আধুনিক জীবনযাপন করুণ। যাদের জ্ঞান কম, লেখাপড়া কম- তাঁরা নানান রকম কুসংস্কার বিশ্বাস করে। কেন বিশ্বাস করে? কারন তারা দেখেছে, শুনেছে- তাদের বাবা মা জ্বীন টিন বিশ্বাস করে, এজন্য ছেলেমেয়েও বিশ্বাস করে। এভাবেই এরকম ভুল বিশ্বাস গুলো যুগ যুগ করে চলে আসছে। ধর্মীয় সকল কর্মকান্ড মানেই কি ভুলভালে ভরা? তাবিজ কবচ, ঝাড়ফুঁক, যাদুটোনা! সারাদিনে অনেকবার উঠবস করা? বছরে একবার এক মাস সারাদিন না খেয়ে থাকা? আমি উঠবস করলে, না খেয়ে থাকলে প্রভু খুশি হবেন!
আমার এক বন্ধু আছে- অতি ধার্মিক।
বন্ধুর ভাগ্নে জানালা বেয়ে উপরে উঠে। এটাই তার প্রিয় খেলা। কারো বাসায় বেড়াতে গেলেও জানালা বেয়ে উপরে উঠে। কিছুতেই তাকে আটকানো যায় না। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ভাগ্নে জানালা বেয়ে উপরে উঠেছে। হঠাত সে পড়ে যায়। পড়ে গিয়ে বেশ ব্যথা পায়। আমার বন্ধু আমাকে বলল- এটা শয়তানের কাজ। শয়তান ভাগ্নেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। বন্ধু দোয়া পড়তে শুরু করলো। ঘর থেকে শয়তান তাড়ানোর দোয়া। একটা বাচ্চা খেলা করতে গিয়ে জানালা থেকে পড়ে গেছে। এখানে কাল্পনিক শয়তান টেনে আনার দরকার কি? তাকে দোষ দেওয়া হচ্ছে কেন?
বলা হয়ে থাকে- 'আমল' করো।
তাহলে অনেক কিছু থেকে মুক্তি মিলবে। দরিদ্র ও অসহায়া মানুষ দিনরাত আমল করতে থাকে। অথচ তাদের ভাগ্য বদলায় না। 'আমল' একটা ফালতু শব্দ। অসহায় ও দরিদ্র মানুষজন 'আমল' শব্দটা পছন্দ করে। মূলত 'আমল' আপনার কোনো উপকারে আসবে না। এজন্য মানুষের উচিৎ আমল থেকে দূরে থাকা। ধর্মীয় কুসংস্কার গুলো থেকে দূরে থাকা। তাহলেই মানুষের মুক্তি ঘটবে। মানুষের আসল মুক্তি ঘটবে জ্ঞান অর্জনে। যত জ্ঞান অর্জন করবে তত কুসংস্কার থেকে দূরে থাকবে। আরেহ ভাই পরিশ্রম করো ভাগ্য বদলাবে। একটানা দশ বছর 'আমল' করলেও তোমার ভাগ্য বদলাবে না।
এই আধুনিক যুগে এসেও কিছু মানুষের মধ্যে কুসংস্কার দিয়ে ভরা।
প্রচুর লেখাপড়া করুণ- তাহলে মনে ঘাপটি মেরে বসে থাকা কুসংস্কার দূর হয়ে যাবে। আমার নিজের চোখে দেখা একটা ঘটনা বলি- রেললাইন দিয়ে হেটে যাচ্ছিলাম। দেখি। বস্তিতে থাকা এক অল্প বয়সী মহিলাকে হাত পা বেঁধে রাখা হয়েছে। কারন মহিলাটাকে নাকি জ্বীনে ধরেছে। খারাপ জ্বীন। এক হুজুর নানান রকম দোয়া পড়ে ফু দিচ্ছে। শুকনা মরিচ পুড়ে নাকে দিচ্ছে। আঙ্গুল বাঁকা করে চাপ দিচ্ছে। মহিলা ব্যথায় কাঁদছে, চিৎকার দিচ্ছে। আশে পাশে লোকজন চোখ বড় বড় করে দেখছে। কেউ কেউ হাসছে! দোয়া বা ফু'তে কোনো কাজ হয় না। কোনোদিন হয়নি। হবেও না।
এখন কথা হলো- মহিলাটিকে জ্বীনে ধরেনি।
জ্বীন বলতে তো কিছু নেই। মহিলার যে সমস্যা হয়েছে সেটাকে বলে হিস্টেরিয়া। হিস্টেরিয়া একটা রোগ। সেই রোগের ভালো চিকিৎসা আছে। অথচ জ্ঞানের অভাবে একদল মূর্খ মানুষ। মহিলাটিকে সীমাহীন কষ্ট দিচ্ছে। নারী-পুরুষ উভয়েরই হিস্টিরিয়া হতে পারে। তবে ১৪ থেকে ২৫ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে হরমোনাল ইমব্যালেন্স ও পিরিয়ডিক্যাল কারণে এর আধিক্য দেখা যায়। হিস্টেরিয়া রোগকে জ্বীন ধরেছে বলে অত্যাচার করা আর কত কাল চলবে? সরকারের উচিৎ একটা একটা মন্ত্রনালয় খোলা। সেই মন্ত্রনালয়ের কাজ হবে কুসংস্কার দূর করা। মানুষকে সচেতন করে গড়ে তোলা।
আমার এক বন্ধু বলেন, বিজ্ঞান না মানলে ধনেপাতা দিয়ে করোনা সারাবেন, গোমূত্র আর গোবর দিয়ে করোনা সারানোর চেষ্টা করবেন। এসব "কোভ্যাক্স, সিনোভ্যাক, ফাইজার, কোভিশিল্ড" এসব ভ্যাক্সিন কে পাত্তাই দিবেন না। ফলাফল হলো লাশের সারি আরো দীর্ঘ হবে। সবচেয়ে বড় দুঃখের বিষয় হলো আপনার মাথায় যে নিউরন আছে আর এটার যে এক অলৌকিক শক্তি আছে সেটা কোন দিন বুঝতেই পারবেন না। কেবল অমুক হুজুরের পানি পড়া, তেল পড়া, মোদাচ্ছের পীরের মাজারের খাদেম মজিদের প্রেস্ক্রিপশনেই জীবন কাটিয়ে দিবেন। নিজের বুদ্ধি বিবেচনা কে চিরতরে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:৩০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




