somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

অরুনা আত্মহত্যা করেছিলো!

১০ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ আমার তোলা।

লোডশেডিং চলছে। অন্ধকার রাস্তায় সে হাটছে।
রাস্তার বাতি গুলোও আজ জ্বলছে না। আকাশে মেঘ জমতে শুরু করেছে। কিন্তু মাত্রই আকাশে বিশাল এক চাঁদ উঠেছে। চারিদিক মোটামুটি আবছায়া আলো। লোকজনও আছে বেশ। রাতের ঢাকা অতি মনোরম। তার মনে পড়লো অরুনা নামের একটা মেয়ে বাড়ির ছাদে নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলো। অরুনা মরে যায়। অরুনার খবর কোনো পত্রিকাতে আসেনি। পুলিশ কোনো একশনে যায়নি। কারন মৃত্যুর আগে অরুনা নিজের হাতে লিখে গিয়েছিলো, 'আমার মৃত্যুর জন্য আমিই দায়ী'। অথচ সুধীজনেরা জানে প্রতিটা আত্মহত্যাই আসলে হত্যা।

সে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে চা খেলো।
তারপর একটা খিলি পান। যদিও সে পান খায় না। কিন্তু একআধদিন মিষ্টি জর্দা দিয়ে পান খেতে ইচ্ছে হয়। এক ভিক্ষুক গান গেয়ে ভিক্ষা করছে। তাকে ঘিরে মানুষের জটলা। ভিক্ষুক গান থামিয়ে বলল, সে স্বপ্নে দেখেছে একদল ফেরেশতা তার সাথে দেখা করতে এসেছিলো। ফেরেশতাদের মুখ ভরতি দাড়ি ছিলো, পোশাক ছিলো সবুজ। তাদের শরীর থেকে স্বচ্ছ আলো বের হচ্ছিলো। লোকজন ভিক্ষুককে বাবা বাবা বলে ডাকছে। ভিক্ষুকের আজ ভালো ইনকাম হবে। তার ইচ্ছা করলো ভিক্ষুকের কোমরে একটা লাথথি দিতে। ভন্ডদের সে পছন্দ করে না।

পান খেয়ে তার বেশ চাংগা লাগছে।
অরুনার কথা মনে পড়ছে! অরুনা দেখতে দেবী প্রতিমার মতো ছিলো। একদম যেন দেবী স্বরস্বতী! অরুনাকে নিয়ে অনেক কবি কবিতা লিখেছেন। অথচ অরুনা কবিতা পড়ে না। এমনকি কবিদের সে দুচক্ষে দেখতে পারে না। আজও বহু কবি অরুনাকে দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে! অরুনার সহচার্য পাওয়ার জন্য বহু ক্ষমতাবান ব্যাক্তিরা নানান ফন্দি ফিকির করতো। কবি সাহিত্যিকেরা জিব বের করে বসে থাকতো।

একবার কয়েকজন কবি সাহিত্যিক আড্ডায় বসে গাজা খাচ্ছিলো।
তখন অরুনা এসে বলল, আমাকে দাও, আমি খাবো। কবিরা অরুনার গাজায় টান দেওয়া দেখে মুগ্ধ! অরুনা বলল, স্কচ আছে? গাজা আমায় নেশা হয় না। আড্ডায় আড্ডায় সময় গড়িয়ে গেল। নেশা দ্রব্য ফুরোলো। রাত এগারোটা। আড্ডা শেষে কবিরা চায় অরুনাকে বাসা পর্যন্ত দিয়ে আসবে। বাধা দিলো সাহিত্যিকেরা। কে অরুনাকে বাসায় দিয়ে আসবে এই নিয়ে কবি সাহিত্যিকের মধ্যে তুমুল মারামারি, গালাগালি।

কাছের মানুষের মৃত্যু আর বয়স অনেক কিছু বদলে দেয়।
অরুনার সাথে একবার সে নিউমার্কেট গিয়েছিল। সেদিন অরুনা নীল সাদা একটা শাড়ি পরেছিলো। চোখে কাজল, কপালে টিপ। এই ছিলো অরুনার সাজ। তাতেই অপূর্ব লাগতো। অরুনা অদ্ভুত সব কথা বলতো! সেদিন বলেছিলো, ডাক্তার হতে হলে ডাক্তারি বইয়ের পাশাপাশি ধর্মীয় বই গুলো পড়তে হয়। আরেকবার অরুনা বলেছিলো, পুরুষদের ভাগ্য মন্দ হয়। যেসব পুরুষের পকেট ভারী, তাদের কোমরের জোর কম থাকে। বন্ধুদের মধ্যে তার ভাগ্যই ভালো। কারন, অরুনা তাকেই খুব পাত্তা দিত। এমনকি মাঝে মাঝে রান্না করে অরুনা তাকে খেতে ডাকতো!

অর্জুনের সাথে আমি একবার গিয়েছিলাম অরুনার বাসায়।
তখনও সন্ধ্যা হয়নি। অরুনা মাত্র ঘুম থেকে উঠেছে। আমার সামনে দাঁড়িয়ে শাড়ির আচল ঠিক করলো, চুল বাধলো। কোনো জড়তা নেই! সারা ঘরময় ছড়ানো বইপত্র আর নানান রকম ম্যাগাজিনে। আমি ফ্লোর থেকে একটা বই হাতে তুলে নিলাম। বইয়ের নাম- 'হাত বাড়িয়ে দাও'। অরুনা রান্নাঘর থেকে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি ক'চামচ চিনি খাও? আমি অরুনার কথা বুঝতে পারনি বলে হা করে তাকিয়েছিলাম। অরুনা হেসে বলল, চায়ে ক' চামচ চিনি খাও? আমি বললাম, তোমার যতটুকু ইচ্ছা দিয়ে দাও। অরুনা হেসে ফেলল। কি মিষ্টি হাসি!
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:২২
১০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×